প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ১৮ এপ্রিল ২০২০:
ডাঃ মোঃ রিজওয়ানুল করিম
যতদূর জেনেছি এখন পর্যন্ত মোট রোগী ২১৪৪ জন। তার মধ্যে ঢাকায় ৮৪৫ জন, নারায়নগঞ্জে ৩০৯ জন। ঢাকা বিভাগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেশি হবার কারণগুলো হচ্ছে:
১। মোট জনসংখ্যার প্রায় ৩০ শতাংশ (প্রায় ৫ কোটি) লোক ঢাকা বিভাগে বাস করে, আনুপাতিক হারে যা অন্যান্য বিভাগ থেকে অনেক বেশী। জনসংখ্যার অনুপাতে রোগীর সংখ্যা এমনিতে কিছু বেশী হওয়ার কথা।
২। ঢাকা এবং নারায়নগঞ্জ জেলা দুটি জনবহুল হবার অন্যতম কারণগুলো হচ্ছেঃ
– শিল্প কারখানা অনেক বেশি
– দেশের ব্যবসার প্রাণকেন্দ্র
– অধিক পোশাক শিল্প কারখানা
– অন্যান্য প্রতিষ্ঠান যেমন ব্যাংক বাজার স্বাস্থ্যকেন্দ্র ইত্যাদি
– কার্যকর লক ডাউন কষ্টসাধ্য
৩। ঢাকা নারায়নগঞ্জ হলো কমিউনিকেশন হাব,
বিদেশ থেকে আসা হোক আর দেশের ভিতরের যোগাযোগই হোক, এ পথ দিয়েই মানুষের আনাগোনা তুলনামূলক বেশি।
৪। এখানকার কিছু এলাকা অত্যধিক ঘনবসতিপূর্ণ (বিশেষ করে বস্তি) হওয়ায়, এ জেলা দুটিতে মৃদু উপসর্গ সম্পন্ন আক্রান্তদের বা উপসর্গহীনদের সামাজিক দূরত্ব বা হোম কোয়ারেন্টাইন কষ্টসাধ্য এবং সামাজিক সংক্রমণ এর ঝুকি বেশি।
৫। কোভিড-১৯ এর ১৮টি পরীক্ষাকেন্দ্রের মধ্যে ১০টি পরীক্ষাকেন্দ্রই ঢাকায় অবস্থিত। তাই ঢাকা বিভাগে মানুষ তুলনামূলক বেশী পরীক্ষা সুবিধা পান একারনে পরীক্ষার সংখ্যা বেশী, রোগী সনাক্তকরনের হার অন্যান্য বিভাগ থেকে তুলনামূলকভাবে বেশি। সিলেকশন বায়াস।
৬। ঢাকায় চিকিৎসা সেবাকেন্দ্র বেশি এবং এগুলোতে রোগীর সংখ্যা বেশি, এদের মধ্যে দেশের অন্যান্য জেলা থেকে রেফারকৃত সন্দেহজনক বা উপসর্গহীন রোগীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য। একারনে ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় ঢাকা বা নারায়নগঞ্জ এর সাধারণ সুস্থ জনগন এমনকি ঐসব স্বাস্থ্য কেন্দ্রের কর্মীদের মাঝে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। ফ্যাসিলিটি বায়াস।
৭। সেবাকর্মীরা যারা রোগীর কন্টাক্ট এ আসেন বা এসেছেন তারা নিজে বা প্রতিষ্ঠান উদ্যোগী হয়ে পরীক্ষা করাচ্ছেন। ভলান্টিয়ার বায়াস জাতীয় বিষয়।
৮। এছাড়াও অন্যান্য আর্থ-সামাজিক কারণ তো আছেই।
এসবই মূলত এই অঞ্চলে করোনা সনাক্তের হার বেশি হওয়ার প্রধান কারণ।