প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ১৫ মে ২০২০, শুক্রবার
আগামী ১৬ই মে, ২০২০ থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগের পক্ষ থেকে শুরু হতে যাচ্ছে কনভালেসেন্ট প্লাজমা থেরাপি (Convalescent Plasma Therapy)।
গত ১৮ই এপ্রিল, ২০২০ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে মারাত্মক করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার প্রটোকল প্রস্তুতির জন্য একটি টেকনিক্যাল কমিটি গঠন করা হয়, যার সদস্য সচিব করা হয়েছিলো ঢাকা মেডিকেল কলেজের ট্র্যান্সফিউশন মেডিসিন ডিপার্টমেন্ট এর প্রধান, প্রফেসর ডা. মাজহারুল হক তপন কে।
কমিটির অন্যান্য সন্মানিত সদস্যদের সাথে বিস্তারিত আলোচনা করে “Convalescent Plasma Therapy in severely & critically ill COVID-19 patients : a randomized clinical trial to observe the efficacy and safety” এর প্রটোকল তৈরী করা হয়। পরবর্তীতে ঢাকা মেডিকেল কলেজের ইথিকাল রিভিউ বোর্ড, উক্ত কমিটির সদস্যদের সাথে নিয়ে কনভালেসেন্ট প্লাজমা থেরাপি শুরু করার অনুমতি প্রদান করেন।
এসময়ে গুরুত্বপূর্ণ মতামত দিয়ে পাশে ছিলেন প্রফেসর ডা. এম. এ. খান, প্রফেসর ডা. আহমেদুল কবির, প্রফেসর ডা. সাইফুল্লাহ মুনশি এবং প্রফেসর ডা. মোজাফফর হোসাইন। সাথে আরো সহযোগিতা করেছেন, কিউর স্মাইল বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন এর স্বত্তাধিকারী ডা. ফাতেমা-তুজ-জোহরা ক্যামেলিয়া। ডোনার পুল গঠনের জন্য সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছেন দি ফাউন্ডেশন ফর ডক্টরস সেফটি, রাইট এন্ড রেসপন্সিবিলিটিস (FDSR)।
জানা গেছে যে, কনভালেসেন্ট প্লাজমা টাইট্রেশন (Convalescent Plasma Titration) বাংলাদেশে এর আগে কখনো হয় নি। তবে কনভালেসেন্ট প্লাজমা (Convalescent Plasma) বিভিন্ন সময়ে ব্যবহৃত হয়ে আসছে চিকিৎসার ক্ষেত্রে।
একজন কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগী সুস্থ হবার পর তাঁর রক্তে এন্টিবডি তৈরী হয়। সেই এন্টিবডির মাত্রা টাইট্রেশন করে পরিমাপ করে চিকিৎসার জন্য ব্যবহার করা যায়।
যারা আক্রান্ত হয়ে ভেন্টিলেটর বা আইসিইউতে আছেন, তাদের যদি এই সংগৃহীত প্লাজমা পরিসঞ্চালন করা হয়, তবে সুস্থ ব্যক্তির এন্টিবডি ভাইরাসের সাথে যুদ্ধ করে উপসর্গ কমিয়ে আনতে পারে এবং আক্রান্ত ব্যক্তির তখন আইসিইউ বা ভেন্টিলেটর এর উপর নির্ভরশীলতা কমে আসবে।
এই চিকিৎসার জন্য অনেক কনভালেসেন্ট প্লাজমা ডোনার প্রয়োজন হচ্ছে। সুস্থ হয়ে ওঠা ব্যক্তিরা স্বেচ্ছায় এগিয়ে আসলে হয়তো অনেক জীবন বাচানো সম্ভব হবে।
একজন ৬০ কেজি ওজনের সুস্থ ডোনার ৪০০ মিলি প্লাজমা দান করতে পারবেন। এ্যাফেরেসিস মেশিনের মাধ্যমে এই প্লাজমা সংগ্রহ করা হবে।
করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিদের জীবন বাচাতেই এই পদক্ষেপ নেয়া। বিশ্বের অন্যান্য দেশেও এই চিকিৎসা পদ্ধতি বেশ সুফল বয়ে এনেছে। আশা করা যাচ্ছে আমাদের দেশেও এই সফলতা অব্যাহত থাকবে।
ডা. মাজহারুক হক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যে, যারা কোভিড-১৯ থেকে সুস্থ হয়েছেন, তারা যদি স্বেচ্ছায় প্লাজমা দান করেন, অনেক মানুষ এ থেকে উপকৃত হতে পারবেন, প্রয়োজন শুধু কিছুটা সদিচ্ছা ও আন্তরিকতার।
মানুষ মানুষের জন্য। তাই আসুন, যারা ইতিমধ্যে করোনার সংক্রমণ থেকে সুস্থ্যতা লাভ করেছেন , তারা অন্যদের ও জীবন বাচাতে এগিয়ে আসি।
নিজস্ব প্রতিবেদক/লাইবা ইসাবেলা