২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২০
গুরুতর মানসিক অসুস্থতায় (সিজোফ্রেনিয়া) আক্রান্ত ঢাকা মেডিকেল কলেজের কে-৪০ ব্যাচের শিক্ষার্থী রাজকুমার শীল ও তার ভাই আনন্দ কুমার শীলকে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগে তাদের ভর্তি করা হয়।
ঢাকা কলেজ থেকে পাশ করে ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়া কে-৪০ ব্যাচের এই মেধাবী শিক্ষার্থী দ্বিতীয় প্রফেশনাল পরীক্ষার পর সিজোফ্রেনিয়ায় (মানসিক অসুস্থতা) আক্রান্ত হয়ে বাড়ি থেকে নিরুদ্দেশ ছিলেন ১৪/১৫ বছর। সেসময় একটি কারখানা তে কাজ করতেন তিনি। রাজকুমার শীলের এক ভাই ও এই একই রোগে আক্রান্ত।
সম্প্রতি দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রাজকুমার শীলের মা তাদের দুই ভাই কে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসলে এই বিষয় টি নিয়ে চিকিৎসক সমাজে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। তাদের চিকিৎসার জন্য এগিয়ে আসেন তার ব্যাচমেটসহ, সমসাময়িক অনেক চিকিৎসক। পুরো বিষয়টির সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের কে-৪০ ব্যাচের অধ্যাপক ডা. টাবলু আব্দুল হানিফ।
বর্তমানে তারা কে-৪৫ ব্যাচের শিক্ষার্থী মেডিসিনের সহযোগী অধ্যাপক ডা. জাকিরের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন আছেন। তাদের চিকিৎসায় কে-৫৩ ব্যাচের শিক্ষার্থী সাইকিয়াট্রি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. জলধি, কে-৪৬ ব্যাচের শিক্ষার্থী মেডিসিন বিভাগের ডা. নূর মোহাম্মদ, কে-৫১ ব্যাচের শিক্ষার্থী নেফ্রোলজি বিভাগের ডা. মেজবাহউদ্দিন নোমানসহ কয়েকজন চিকিৎসকের সমন্বয়ে বোর্ড গঠিত হয়েছে। কে-৪০ ব্যাচের শিক্ষার্থী রংপুর মেডিকেল কলেজের ডা. নাহিদ রেজাও উপস্থিত ছিলেন।
বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. মো. আলী হোসেন শাহ শুরু থেকেই তাদের চিকিৎসার জন্য সার্বক্ষণিক সহযোগিতা করছেন। তিনি জানান, বিরামপুর থেকে কয়েকটি পরীক্ষা-নীরিক্ষা করানো হয়েছে। সেখানে কোনো সমস্যা পাওয়া যায়নি।
এছাড়াও তাঁদের চিকিৎসায় বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএফপিও) ডা. মেহেদি, কে-৫৬ ব্যাচের শিক্ষার্থী দিনাজপুর মেডিকেল কলেজের ডা. সোহাগ,প্লাটফর্মের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ডা. ফয়সাল, জনাব হুমায়ুন কবির, যুগ্ম সাধারণ সচিবসহ অনেকেই তাদের চিকিৎসার ব্যাপারে সবরকম সহযোগিতা করছেন। রাজকুমার শীলের ব্যাচমেট কে-৪০ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা তার জন্য দীর্ঘমেয়াদী বাস্তবসম্মত পুনর্বাসনের ব্যাপারে কাজ করছেন।
রাজকুমার শীলের মা পার্বতী রাণী শীল জানান, রাজ কুমারের সিটিস্ক্যানসহ বিভিন্ন পরীক্ষা করা হয়েছে। রিপোর্ট দিলে বোঝা যাবে তার সমস্যা কোন পর্যায়ে আছে। চিকিৎসকদের আচরণে সন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, হাসপাতাল থেকে প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহ করা হচ্ছে। চিকিৎসকরা হাসপাতালে তাদেরকে আগামী চার-পাঁচ দিন থাকতে বলেছেন বলেও জানান তিনি।
নিজস্ব প্রতিবেদক / ফাহমিদা হক মিতি