প্ল্যাটফর্ম নিউজ,
মঙ্গলবার, ২১ এপ্রিল, ২০২০
করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ায়
মেডিসিন ও কিডনি ডায়ালাইসিস ইউনিটের পর এবার ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনি বিভাগের একটি অপারেশন থিয়েটারও বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
সন্তান জন্ম দিতে আসা একজন অন্তঃসত্ত্বা নারী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ায় গতকাল সোমবার (২০ এপ্রিল) সন্ধ্যায় মমেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এ সিদ্ধান্ত নেয়।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পূর্ব দিকের পুরাতন ভবনের নিচ তলায় গাইনি বিভাগ। মমেকহা’র গাইনি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, এই ওয়ার্ডে প্রতিদিন কমপক্ষে অর্ধশতাধিক নারী সেবা নিতে ভর্তি হন। বর্তমানে ওয়ার্ডটির চিকিৎসা কার্যক্রম সীমিত করা হয়েছে এবং এই ইউনিটের ৭ জন চিকিৎসক, ৩ জন ইন্টার্ন চিকিৎসক, ৬ জন নার্সসহ মোট ১৬ জনকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গাইনি বিভাগের একজন চিকিৎসক বলেন,
“গত বৃহস্পতিবার শেরপুর থেকে আগত এক অন্তঃসত্ত্বা নারী এখানে ভর্তি হন। পরের দিন অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তাঁর ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। কিন্তু তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে গত শনিবার ভোরে তাঁকে আইসিইউতে রাখা হয়। পরের দিন তাঁর নমুনা হাসপাতালের পিসিআর ল্যাবে পাঠানো হয়। গতকালই জানা যায়, ওই নারী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত।”
ওই নারীকে এসকে হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে স্থানান্তর করা হয়েছে বলে জানান ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক সাইফুল ইসলাম।
এই খবরে গাইনি বিভাগের চিকিৎসক ও নার্সদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ গতকাল সোমবার (২০ এপ্রিল) সন্ধ্যায় সবাইকে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার পরামর্শ দেয় এবং অপারেশন থিয়েটার বন্ধ ঘোষণা করে। তবে গাইনি বিভাগের অন্য একটি অপারেশন থিয়েটার চালু রাখা হয়েছে।
বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (BMA) ময়মনসিংহ শাখার সভাপতি মতিউর রহমান ভূঁইয়া বলেন,
“চিকিৎসক ও নার্সরা যথাসাধ্য চেষ্টা করে রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু কোনো কোনো করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী তথ্য গোপন করে চিকিৎসা নিতে গিয়ে সবাইকেই ঝুঁকির মধ্যে ফেলেন। এ বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে আরও সতর্ক হতে হবে এবং চিকিৎসা কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিদের পর্যাপ্ত সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।”
গত সপ্তাহে তথ্য গোপন করে মমেকহা’র মেডিসিন ওয়ার্ডে একজন এবং ডায়ালাইসিস ওয়ার্ডে দুজন করোনায় আক্রান্ত রোগী চিকিৎসা নেন। পরে বিষয়টি প্রকাশিত হলে ওই দুটি ওয়ার্ডে চিকিৎসা কার্যক্রম স্থগিত করা হয় এবং এর পাশাপাশি চিকিৎসকদেরও কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়।
প্রসঙ্গত, করোনা প্রতিরোধে আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন হয়ে, নিজগৃহে অবস্থান করেই সুস্থ ও নিরাপদ থাকা সম্ভব।
নিজস্ব প্রতিবেদক/ অংকন বনিক জয়