প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ২১ মে, ২০২০, বৃহস্পতিবার
কোভিড-১৯ মহামারীর প্রাদুর্ভাবের পর থেকে এন-৯৫ ফেস মাস্কগুলির সরবরাহ অনেক কম। সংক্রমিত রোগীদের শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে আগত জীবাণু থেকে নিজেকে বাঁচানোর জন্য এই মাস্ক বা মুখোশের প্রয়োজনীয়তা অনেক। কিন্তু মাস্ক সল্পতার কারণে অনেককেই একই মাস্ক বারবার পরতে হয়।
এন-৯৫ মাস্কগুলিকে জীবাণুমুক্ত করার পরে পুনরায় ব্যবহার করা যাবে কি? আর করা গেলেও সর্বোচ্চ কতবার একই মাস্ক ব্যবহার করা যায়?
এটি নিয়ে চলতি বছরের ৫ই মে আমেরিকান কেমিক্যাল সোসাইটির একদল গবেষক গবেষণা করেন। তারা এন-৯৫ মাস্ক এর পুনঃব্যবহারের জন্য উপাদানগুলিকে জীবাণুমুক্ত করার লক্ষ্যে কয়েকটি পরীক্ষা করেন। পরীক্ষার মাধ্যমে দেখা যায় তাপ দিয়ে প্রায় ৫০ ভাগ
জীবাণুমুক্ত করা সম্ভব হয়। এন-৯৫ মাস্ক গুলোতে “মল্টব্লাউন” নামক পলিপ্রোপিলিন ফাইবার এর স্তর থাকে যা ছিদ্রযুক্ত এবং এ ছিদ্র গুলোর মাধ্যমেই শ্বাস প্রশ্বাসের কার্যক্রম চলে। অতিক্ষুদ্র যে জীবাণুগুলি এই ছিদ্রগুলির মধ্যে দিয়ে পিছলে যেতে পারে পলিপ্রোপিলিন ফাইবার সেই সকল জীবাণু প্রবেশ রোধ করে।
মার্কিন রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র থেকে এন-৯৫ মাস্ক জীবাণুমুক্ত করার অনেক ধরনের পদ্ধতি উল্লেখ করা হয়। এর মধ্যে অন্যতম তাপীয় পদ্ধতি, অতিবেগুনী রশ্মি (আল্ট্রাভায়োলেট রে) বিকিরণ এবং ব্লিচ দিয়ে জীবাণুমুক্তকরণ। তবে এ পর্যন্ত এটি নিয়ে বড় আকারে কোনো পরীক্ষা করা হয়নি, বিশেষত বার বার জীবাণুমুক্তকরণের ব্যাপারে।
আমেরিকান কেমিক্যাল সোসাইটির গবেষক ইয়ে কুঁই এবং তাঁর সহকর্মীরা গবেষণায় বলেন, পাঁচটি পদ্ধতিতে হাসপাতালের মাস্ক জীবাণুমুক্ত করে পুনরায় ব্যবহার করা যাবে। তাদের গবেষণায় মূলত এন-৯৫ মাস্ক গুলি তৈরিতে ব্যবহৃত মল্টব্লাউন ফ্যাব্রিকের টুকরোগুলিতে একটি নির্দিষ্ট জীবাণুনাশক দিয়ে পরীক্ষা করা হয়। পরে এরোসোল কণা (যা কিনা শ্বাসরোধকারী ড্রপসগুলির সাথে সাদৃশ্যযুক্ত, তবে করোনাভাইরাস অনুপস্থিত) ফিল্টার করতে পারে কিনা তা দেখা হয়। এতে দেখা যায়, ইথানল বা ক্লোরিন ব্লিচ দ্রবণ দিয়ে ফ্যাব্রিক স্প্রে করলে এর পরিস্রাবণ দক্ষতা ৯৬ শতাংশ থেকে হ্রাস পেয়ে ইথানলের ক্ষেত্রে প্রায় ৫৬ শতাংশ এবং ক্লোরিন ব্লিচের ক্ষেত্রে ৭৩ শতাংশ হয়ে যায়। এই গবেষণা অনুযায়ী একাধিকবার চিকিৎসাকার্যে ব্যবহারে এর কার্যকারিতা কমতে থাকে।
অন্যদিকে অতিবেগুনী রশ্মি বিকিরণ পদ্ধতিতে জীবাণুমুক্ত করা হলে মাস্কটি সর্বোচ্চ ২০ বার ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে মাস্ক উপকরণগুলি ক্ষতিগ্রস্থ না করে ভাইরাসটিকে মেরে ফেলতে এমন অতিবেগুনী রশ্মির সঠিক ডোজ ব্যবহার করা সমস্যাযুক্ত হতে পারে বলেও গবেষকরা মনে করেন। তারা বলেন, “সবচেয়ে কার্যকর জীবাণুমুক্তকরণ পদ্ধতি তাপীয় পদ্ধতি বা হিটিং। উদাহরণস্বরূপ, ২০ মিনিটের জন্য ১৮৫ ডিগ্রী ফারেনহাইট তাপমাত্রায় গরম করার ফলে কোনো ক্ষতি ছাড়াই ফ্যাব্রিকটির মাস্ক সর্বোচ্চ ৫০ বার চিকিৎসা কাজে ব্যবহার করা যাবে বলা হয়েছে।
নিজস্ব প্রতিবেদক
সিলভিয়া মীম