থানচি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চলছে মাত্র ১ চিকিৎসকে!

সোমবার, ০৯ ডিসেম্বর, ২০২৪

বান্দরবান জেলার থানচি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পদায়িত আছেন মাত্র ১ জন চিকিৎসক। নিজের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় নিশ্চিত করার চেষ্টা করছেন রোগীদের চিকিৎসা সেবা।

বান্দরবান পার্বত্য জেলার দুর্গম মানুষের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে ১৯৭৭ সালে শুরু হয় থানচি উপজেলার থানচি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ১৯৯৮ সালে ৩১ শয্যা উন্নীতকরণ হয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কার্যক্রম। ২০১৯ সালে হাসপাতালটি ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হলেও মিলেনি কোন জনবল। প্রতিদিন চিকিৎসা সেবা নিতে বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে গড়ে ২৫০-৩০০ রোগী আসেন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। তাদের সবার স্বাস্থ্য সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন কর্তব্যরত একমাত্র চিকিৎসক।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নথি অনুযায়ী, ৫০ শয্যার হাসপাতাল বা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩১ জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও আছেন মাত্র একজন। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের যোগদান করার কথা থাকলেও এখনো তিনি যোগদান সম্পন্ন করেননি। মেডিকেল অফিসারের চারজনের মধ্যে দুজন বান্দরবান সদর হাসপাতালে প্রেষণে, আরেকজন ছুটিতে রয়েছেন। ফলে বর্তমানে হাসপাতালে কর্মরত আছেন মাত্র একজন চিকিৎসক।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যন্ত্রপাতিরও সংকট রয়েছে। অপারেশন থিয়েটারের বিভিন্ন যন্ত্র, প্যাথলজি পরীক্ষার যন্ত্র, এক্সরে মেশিন, বায়োকেমিস্ট্রি অ্যানালাইজার, আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিনের মতো গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রপাতি না থাকায় ব্যাহত হচ্ছে জটিল রোগের চিকিৎসা সেবা। হাসপাতালে রয়েছে শুধুমাত্র ইসিজি ও নেবুলাইজার মেশিন।

রোগীদের অভিযোগ, বর্তমানে শিশুরা শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। কিন্তু শিশু বিশেষজ্ঞ নেই। অবস্থা গুরুতর দেখলে বান্দরবান সদরে পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে। এতে ঠিক সময়ে চিকিৎসা পাচ্ছে না অনেকে। এছাড়াও এ উপজেলার বেশির ভাগ মানুষেই জুম চাষের উপর নির্ভরশীল। আর্থিক সার্মথ্য নেই বললেই চলে। তাদের কাছে বান্দরবান সদরের সরকারি বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা নেওয়া খুবই কঠিন।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত নার্স লালসাংপার বম প্ল্যাটফর্মকে বলেন, ‘হাসপাতালে রোগীর ভালোই চাপ আছে। প্রতিদিন ১০-১৫ জন রোগীকে সদরে রেফার্ড করতে হয়’।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সমাধানের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দেয়া হয়েছে অনেকবার। কিন্তু এসব বিষয়ে এখনো কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। রোগীদের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতে গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রপাতি কেনার জন্য উপজেলা পরিষদ থেকে একটি বরাদ্দ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা-ও এখনো পাশ হয়নি!

বান্দরবানের সিভিল সার্জন ডা. মাহাবুব রহমান প্ল্যাটফর্মকে বলেন, ‘জনবল সংকটের বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। থানচি থেকে দুজন চিকিৎসক জেলা সদরে ডেপুটেশনে আনা হয়েছে। আপাতত স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ঢাকা থেকে একজন চিকিৎসককে বদলি করা হয়েছে। তিনি থানচি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দ্রুত যোগদান করবেন। আশা করি রোগীদের দুর্ভোগ কিছুটা হলেও লাঘব হবে’।

প্ল্যাটফর্ম প্রতিবেদকঃ মঈন উদ্দীন আহমদ শিবলী।

Moin Uddin Ahmad Sibli

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit is exhausted. Please reload the CAPTCHA.

Next Post

আন্দোলনে আহতদের কর্মসংস্থানে এনজিওকে এগিয়ে আসার আহবান স্বাস্থ্য উপদেষ্টার।

Mon Dec 9 , 2024
সোমবার, ০৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ গতকাল (৮ ডিসেম্বর) এনজিও ব্যুরোর উদ্যোগে ‘স্বাস্থ্য সেবায় এনজিওর সম্পৃক্ততা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় অন্তর্বতীকালীন সরকারের স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম বলেছেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ৮৭৩ জন শহীদ হয়েছেন। ২১ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। এনজিওগুলোর দেশের আনাচে কানাচে কাজ করার সুযোগ রয়েছে। এনজিওগুলো যদি […]

Platform of Medical & Dental Society

Platform is a non-profit voluntary group of Bangladeshi doctors, medical and dental students, working to preserve doctors right and help them about career and other sectors by bringing out the positives, prospects & opportunities regarding health sector. It is a voluntary effort to build a positive Bangladesh by improving our health sector and motivating the doctors through positive thinking and doing. Platform started its journey on September 26, 2013.

Organization portfolio:
Click here for details
Platform Logo