দক্ষিণ এশিয়ায় তামাক ব্যবহারে শীর্ষে বাংলাদেশ

মঙ্গলবার, ০৭ জানুয়ারি, ২০২৫

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশে সর্বোচ্চ ৩৫ দশমিক ৩০ শতাংশ মানুষ তামাক ব্যবহার করে। এর ফলে দেশের মোট রাজস্ব আয়ের শতকরা ৩৪ শতাংশ তামাকজনিত রোগের চিকিৎসায় ব্যয় হয়। আর বছরে মৃত্যুবরণ করে এক লাখ ৬১ হাজার মানুষ। এ অবস্থায় জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা ও রাজস্ব বৃদ্ধির লক্ষ্যে তামাক দ্রব্য, সিগারেটের স্তর কমানো এবং নিম্নস্তরের সিগারেটের সম্পূরক শুল্ক ও কার্যকর মূল্য বৃদ্ধির দাবি জানিয়ে সচেতন নাগরিক ও সমাজের বিভিন্ন স্তরের স্টেকহোল্ডাররা।

আজ মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে, জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা ও রাজস্ব বৃদ্ধির লক্ষ্যে, তামাকপণ্যের কার্যকর করারোপের দাবিতে স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের জাতীয় পর্যায়ের আলোচনায় এসব কথা বলা হয়।

আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধে জানানো হয়, বাংলাদেশে তামাক ব্যবহারের হার দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৩৫ দশমিক ৩০ শতাংশ। প্রতি বছর তামাক ব্যবহারজনিত রোগে প্রায় এক লাখ ৬১ হাজার প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের অকাল মৃত্যু হয়। তাছাড়া, তামাক খাত থেকে সরকার যে পরিমাণ রাজস্ব আহরণ করে তার থেকে ৩৪ শতাংশের বেশি খরচ হয় তামাকের কারণে সৃষ্ট রোগের চিকিৎসা বাবদ।

এতে দেশে তামাক ব্যবহার হ্রাস ও তামাকজনিত ক্ষয়ক্ষতি নিরসনে আগামী ২০২৫-২৬ অর্থ-বছরের বাজেটে তামাক-কর ও দাম বৃদ্ধির জন্য বেশ কিছু দাবি তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে অন্যতম- সিগারেটের বর্তমান চারটি স্তরকে কমিয়ে তিনটি স্তরে নামিয়ে আনা অর্থাৎ নিম্ন ও মধ্যম স্তরকে একত্রিত করে একটি স্তর করা এবং এ স্তরের সিগারেটের ১০ শলাকার প্যাকেটের সর্বনিম্ন মূল্য ৮০ টাকা নির্ধারণ করা; এছাড়াও সকল স্তরের সিগারেটের সম্পূরক শুল্ক ৬৭ শতাংশ করার দাবি করা হয়। এছাড়া উচ্চ স্তরের সিগারেটের ১০ শলাকার প্যাকেটের সর্বনিম্ন মূল্য ১৩০ টাকা, এবং প্রিমিয়াম স্তরের সিগারেটের ১০ শলাকার প্যাকেটের সর্বনিম্ন মূল্য ১৮০ টাকা কারার প্রস্তাব দেওয়া হয়।

এছাড়া তামাক-কর ও দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব বাস্তবায়ন করা হলে প্রায় ১৬ লাখ অকালমৃত্ব্য রোধ করা যাবে। একইসঙ্গে তরুণদের ধূমপান শুরু করা থেকে বিরত রাখা যাবে, প্রায় ২৩ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক ধূমপায়ী ধূমপান ছেড়ে দিতে উৎসাহিত হবে, এবং ২০২৫-২৬ অর্থ-বছরে প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আহরিত হবে বলে জানানো হয়।

আলোচনায় অংশ নিয়ে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের যুগ্ম সচিব (জনস্বাস্থ্য অধিশাখা) ডা. মো. শিব্বির আহমেদ ওসমানী বলেন, তামাকপণ্যের সহজলভ্যতা হ্রাস করতে মূল্যস্ফীতি এবং আয় বৃদ্ধির সাথে সঙ্গতি রেখে সুনির্দিষ্ট করারোপ ও তা নিয়মিতভাবে বৃদ্ধি করতে হবে। সিগারেটের মূল্য স্তরগুলোর মধ্যে সম্পূরক শুল্ক ও মূল্য ব্যবধান কমিয়ে আনার মাধ্যমে সিগারেট ব্যবহারকারীর মূল্য স্তর পরিবর্তন করে কম মূল্য স্তরের সিগারেট ব্যবহারের সুযোগ সীমিত করতে হবে। পর্যায়ক্রমে একক মূল্যস্তর পদ্ধতির প্রচলন করতে হবে।

এসময় অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম, স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের প্রোজেক্ট কো-অরডিনেটর ডা. ইফতেখার মুহসিনসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, দেশি-বিদেশি উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধি, সমাজের সচেতন নাগরিক, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, একাডেমিক, গবেষক, সিভিল সোসাইটি এবং সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

প্ল্যাটফর্ম/

Moin Uddin Ahmad Sibli

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit is exhausted. Please reload the CAPTCHA.

Next Post

দূর্নীতির অভিযোগে রামেকে দুদকের অভিযান, মিলেছে সত্যতা!

Tue Jan 7 , 2025
মঙ্গলবার, ০৭ জানুয়ারি, ২০২৪ অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে রাজশাহী মেডিকেল কলেজে (রামেক) অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের উপপরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম আজ (৭ জানুয়ারি) গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, রাজশাহী মেডিকেল কলেজে লিফট, বৈদ্যুতিক সাব-স্টেশন ও জেনারেটর স্থাপনে অনিয়মের অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের […]

Platform of Medical & Dental Society

Platform is a non-profit voluntary group of Bangladeshi doctors, medical and dental students, working to preserve doctors right and help them about career and other sectors by bringing out the positives, prospects & opportunities regarding health sector. It is a voluntary effort to build a positive Bangladesh by improving our health sector and motivating the doctors through positive thinking and doing. Platform started its journey on September 26, 2013.

Organization portfolio:
Click here for details
Platform Logo