গতকাল ৭ই আগস্ট, বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ সংখ্যক ডাক্তার (৬১৯১ জন) একসাথে স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ে যোগদান করেন। ৩৩তম বিসিএস এ নিয়োগ প্রাপ্ত এই সকল ডাক্তারকে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে দেশের ৬৪ জেলার প্রতিটি উপজেলায় শূন্যপদে পদায়ন করার ঘোষনা দেয়া হয়। এত বিপুল সংখ্যক মেধাবী ডাক্তার উপজেলা পর্যায়ে নিয়োগ প্রাপ্তি ও কমপক্ষে দুই বছর বাধ্যতামূলক পদায়নের মাধ্যমে দেশের গ্রামাঞ্চলের চিকিৎসাসেবায় অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জিত হবে আশা করা যায়। উন্নত চিকিৎসাসেবা, উন্নত রেফারেল সিস্টেম ও আধুনিক চিকিৎসাব্যবস্থা প্রদানের মাধ্যমে দেশের প্রতিটি মানুষের স্বাস্থ্য চাহিদা পূরন হবে এই নিয়োগের মাধ্যমে।
মাননীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রী এই আয়োজনে বক্তব্য প্রদান করে চিকিৎসকদের অনুপ্রাণিত করেন। তার বক্তব্যের উল্লেখযোগ্য অংশগুলো ছিলঃ
** আমি মেডিকেল বিষয়ে খুব
একটা জানিনা। কখনো পড়িওনি। তবে আমার ছোট ভাই ডাক্তার ছিলেন দূর্ভাগ্য
ক্রমে আমরা তাকে হারিয়ে ফেলেছি।
তবে এই ৮/৯ মাস ডাক্তারদের
সাথে থাকতে থাকতে আমিও ডাক্তার
হয়ে গেছি। মুন্না ভাই এম বি বি এস এর মত।
** আমি বিশ্বাস করিনা কোন ডাক্তার
ইচ্ছাকৃত ভুল করে। প্রত্যেক ডাক্তার চায় তার রোগী ভালো হোক। ভুল তো সবার
হতে পারে, আমিও ভুল করি। ফেরেশতারা ভুল করেনা। মানুষতো ফেরেশতা না।
** জনগনের কথায় কথায় ডাক্তারের
গায়ে হাত তোলার সংস্কৃতি পরিহার
করতে হবে। এ কেমন সমাজ? আপনার অভিযোগ থাকলে মামলা করুন, বি এম ডিসি আছে, দরকার হলে ভুল থাকলে ঐ ডাক্তারের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা হবে। কিন্তু গায়ে হাত দেয়ার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।।
** কোন তদবীরের প্রয়োজন নেই, আপনাদের পছন্দ মত পোষ্টিং দেয়ার চেষ্টা করবো। এখনকার গ্রাম আর আগের মত নেই, প্রত্যেক থানায় ভালো যোগাযোগ ব্যবস্থা, ফ্রেশ বাতাস আর ফরমালিন মুক্ত খাবার পাবেন।
জীবনের শুরুর দুইটা বছর অন্তত গ্রামে থাকুন। আপনাকে পড়িয়েছেন যারা বা আপনার আত্মীয় স্বজনের মধ্যেই
অনেকে আছে যারা গ্রামে থাকে, তাদের
ঋন শোধ করতে হলেও দুই টা বছর
গ্রামে থাকেন।
** তোমরা স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নে দুটো বছর গ্রামে থাকো আমি নাসিম বলছি,
আমি তোমাদের জন্য আছি। আমি তোমাদের আড়াল করবো। ডাক্তারদের সুরক্ষায় আইন তৈরীর প্রক্রিয়া চলছে।
……………………. ………..
অন্যন্য যেকোন বিসিএস এর চেয়ে এবারের বিসিএস এ ফর্ম তোলা, জমাদান থেকে শুরু করে নিয়োগ প্রাপ্তি পর্যন্ত প্রতিটি পর্যায়ে কোনরূপ হয়রানি ছাড়াই প্রযুক্তির ছোয়ায় খুব সূচারু এবং সহজভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
৬১৯১ জন চিকিৎসকের এই ঐতিহাসিক যোগদান বাংলাদেশের স্বাস্থ্য সেবায়
আনতে পারে আমূল পরিবর্তন। পল্লী চিকিৎসক, ফকিরদের দৌরাত্ম রুখতে পারে। পুর্বসূরী ডাক্তারদের নানান অনিয়ম, খারাপ ব্যাবহারের ফলেই বাংলাদেশের একসময়ের সবচেয়ে সন্মানজনক পেশা আজ হতাশার অবস্থানে চলে এসেছে তার পরিবর্থন হবে এই তরুনদের হাত ধরেই। দেশের চিকিৎসাসেবার এই বিপ্লব সৃষ্টি করার জন্য বর্তমান সরকার, প্রধানমন্ত্রী, বর্তমান ও প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং সংশ্লিস্ট সবাইকে ডাক্তার সমাজের পক্ষ থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ।
অনুষ্ঠান শেষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক প্রাণ গোপাল দত্ত স্যারের উপদেশটুকুই
হতে পারে নতুন ডাক্তারদের
অনুপ্রেরনা,
”Be the rainbow in the cloudy sky”
ডাঃ শুভ প্রসাদ এর মূল থেকে থেকে সংশোধিত ও বর্ধিত।