বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ, ২০২৫
যশোরে একটি খামারে বার্ড ফ্লু শনাক্ত হয়েছে। এরপর থেকে দেশের পোলট্রিশিল্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। ওই খামারে ৩ হাজার ৯৭৮টি মুরগির মধ্যে ১ হাজার ৯০০টি মারা গেছে এবং বাকি মুরগি মেরে ফেলা হয়েছে, যাতে ভাইরাস আরও ছড়িয়ে না পড়ে। বিগত সময়ে বার্ড ফ্লু প্রাদুর্ভাবের কারণে বহু খামার বন্ধ হয়ে গেছে, লাখ লাখ মুরগি নিধন করতে হয়েছে এবং হাজার হাজার খামারি তাঁদের জীবিকা হারিয়েছেন।
বার্ড ফ্লু শনাক্ত করার তথ্য নিশ্চিত করে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবু সুফিয়ান জানিয়েছেন, ‘১৩ মার্চ আমরা বার্ড ফ্লু শনাক্ত করেছি। এটা মৃদু প্রকৃতির বার্ড ফ্লু। আমরা খামারিদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা পাঠিয়েছি। ভ্যাকসিন কার্যক্রম জোরদার করতে বলেছি। ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব যাতে ছড়িয়ে না পড়ে, সেই পদক্ষেপ নিয়েছি।’
এদিকে বার্ড ফ্লু নিয়ন্ত্রণে সরকারের কাছে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ)। গতকাল বুধবার রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটি এই আহ্বান জানায়। বিপিএর তথ্য অনুসারে, দেশে প্রথমবার ২০০৭ সালের মার্চে বার্ড ফ্লু দেখা দেয় এবং সে বছর ১০ লাখের বেশি মুরগি মেরে ফেলা হয়। ওই সময় বাংলাদেশে প্রায় ৩ হাজার ৩৭০টি খামার বন্ধ হয়ে যায়। সে সময় খামারিরা আর্থিকভাবে চরম বিপর্যস্ত হন। ২০০৮ সালের মে মাসে বাংলাদেশে মানুষের শরীরে বার্ড ফ্লু সংক্রমণ ধরা পড়ে, যা আরও উদ্বেগ সৃষ্টি করে। ২০০৭ ও ২০০৮ সালে পোলট্রিশিল্পের জন্য ব্যাপক ক্ষতির পর খামারিরা দীর্ঘ সময় ধরে পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করেন।
পরে ২০১৩ সালে বাংলাদেশে আবারও বার্ড ফ্লুর প্রাদুর্ভাব ঘটে, তখন তেমন বড় আকারে ক্ষতির মুখে পড়েনি পোলট্রিশিল্প। তবে ২০১৭ সালের শেষের দিকে আবার বেশ কিছু এলাকায় বার্ড ফ্লু দেখা দেয়, যার ফলে বেশ কিছু খামার ক্ষতির সম্মুখীন হয়। এসব প্রাদুর্ভাবে প্রায় ৫০ লাখ মুরগি নিধন করা হয় এবং আরও কিছু খামার বন্ধ হয়ে যায়। বারবার বার্ড ফ্লুর সংক্রমণে ১৫ থেকে ১৬ হাজার প্রান্তিক খামার বন্ধ হয়ে যায়।
প্ল্যাটফর্ম/এমইউএএস