দ্রুতই পাল্টে যাচ্ছে মাগুরা সদর হাসপাতালের চেহারা

2

সারাদেশে সরকারি হাসপাতালগুলোর অব্যবস্থাপনা অনিয়ম দুর্নীতি ও চিকিৎসা সেবার মান নিয়ে মানুষের অভিযোগের শেষ নেই। মাগুরা সদর হাসপাতালও এর ব্যতিক্রম ছিল না। কিন্তু দ্রুত পাল্টে যাচ্ছে মাগুরা সদর হাসপাতালের সেই চিত্র।
এক সময়ের ময়লা আবর্জনা ও দুর্গন্ধে ভরা যে হাসপাতালে ঢোকা ছিল দায়। এখন সেই হাসপাতাল ঝকঝকে তকতকে দুর্গন্ধ মুক্ত। আগে যেখানে চিকিৎসকরা অফিসে আসতেন ইচ্ছা মত। দেদারছে করতেন ক্লিনিক বানিজ্য ও প্রাইভেট প্রাকটিস। এখন সকাল ৮টা বাজলেই তাদের ঢুকতে হচ্ছে হাসপাতাল ক্যাম্পাসে। কেউ যাচ্ছেন রাউন্ডে, কেউবা রোগী দেখছেন আউটডোরে বা সরকারি চেম্বারে। এক নাগাড়ে থাকতে হচ্ছে দুপুর দুইটা পর্যন্ত।
আগে যেখানে অফিস টাইমে অপারেশন ছিল অনিয়মিত। এখন অফিস টাইমতো বটেই গভীর রাত এমনকি শেষ রাত পর্যন্ত চলছে অপারেশন। ক’দিন আগেও ক্লিনিক, প্যাথলজি ওষুধের দোকানের দালালদের গায়ে ধাক্কা না খেয়ে ঢোকা যেত না সরকারি এ হাসপাতালে । এখন প্রায় দালাল মুক্ত মাগুরার এ হাসপাতালটি।

কিন্তু রাতারাতি সব অনিয়ম অব্যাস্থাপনা দূর করে দৃশ্যপট পাল্টে যাওয়ার কারণ কি ? সকলের প্রশ্ন কোন যাদুতে এমনটি হলো?
তথ্যনুসন্ধানে জানাগেছে সম্প্রতি মাগুরা একশ’ শয্যার এ হাসপাতালটি ২৫০ শয্যায় উন্নীত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ২১ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেছেন হাসপাতালটি। কিছু কাজ বাকি থাকায় এখনো আড়াইশ’ বেডের কার্যক্রম শুরু হয়নি। তবে বর্তমানে একশ’ শয্যার এ হাসপাতালে গড়ে প্রতিদিন তিনশ’ রোগী ভর্তি থাকছে। জরুরী বিভাগ ও আউটডোরে চিকিৎসা নিচ্ছে দুই থেকে আড়াই হাজার রোগী।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি সিনিয়র কনসালটেন্ট ডাক্তার সুশান্ত কুমার বিশ্বাসকে নিয়োগ করা হয়েছে ২৫০ শয্যার এ হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক  হিসেবে। আর এ নিয়োগের পর-পরই পাল্টে গেছে গোটা হাসপাতালের চিত্র। তিনি হাসপাতালের চিকিৎসকসহ সকল বিভাগের কর্মকর্তা কর্মচারীদের নিজ-নিজ দায়িত্ববোধ সম্পর্কে সচেতন করেছেন। স্বাস্থ্য বিভাগের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও জেলার শীর্ষ নেতৃবৃন্ধ জনপ্রতিনিধিদের নির্দেশনা ও অকুন্ঠ সহযোগিতায় তিনি সরকারি এ হাসপাতালে শতভাগ স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার জন্য জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করেছেন। সে মোতাবেক দায়িত্ব অবহেলাকারীর বিরুদের কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। যে কারণে হাসপাতালের পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত হয়েছে। চিকিৎসক, কর্মকর্তা কর্মচারীরা সময় মত হাসপাতালে উপস্থিত থেকে দায়িত্ব পালন করছেন। পুলিশ দিয়ে হাসপাতাল থেকে দালাল মুক্ত করার কার্যক্রম চলছে।  গোটা হাসপাতালের চিত্রই এখন পাল্টে গেছে।

ডা. সুশান্ত বিশ্বাস বলেন, ভাল কাজ করতে গেলে বাধা আসবেই। তিনি দায়িত্ব নেওয়ার আগে সেই বাধা অতিক্রম করার ক্ষমতা অর্জন করেছেন। তাছাড়া নিজের চাওয়া-পাওয়া ত্যাগ করলে সব সময় ভাল কাজে সমর্থন পাওয়া যায়। তিনি সর্বস্তরের মাগুরাবাসীর সহযোগিতায় মাগুরার এ হাসপাতালটিকে সুন্দরভাবে গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়ে প্রাথমিক সফলতা অর্জন করেছেন। সেই সাথে মাগুরা বিএমএ-র সাধারণ সম্পাদক ও আবাসিক মেডিকল অফিসার, স্থাস্থ্য বিভাগ ও সর্বস্তরের মাগুরাবাসী অকুণ্ঠ সহযোগিতা করছেন।

ডা: সুশান্ত জানান, অল্প সময়ের মধ্যে মাগুরা ২৫০ শয্যার কার্যক্রম চালু হবে। অত্যাধুনিক এ হাসপাতালে থাকবে ৫টি ওটি একটি করোনারী কেয়ার ইউনিট, সেন্ট্রাল অক্সিজেন ও ওয়াটার সাপ্লাই, একাধিক লিফটসহ নানা সুযোগ সুবিধা।

প্রতিবেদনঃ মাগুরা বার্তার সৌজন্যে

drferdous

2 thoughts on “দ্রুতই পাল্টে যাচ্ছে মাগুরা সদর হাসপাতালের চেহারা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit is exhausted. Please reload the CAPTCHA.

Next Post

এমবিবিএস ২য় প্রফেশনাল পরীক্ষা প্রস্তুতি( নিউ কারিকুলাম)

Mon Apr 17 , 2017
প্রথমেই বলে নিচ্ছি এইটা সবার ই দুই নাম্বার প্রফ। ফার্স্ট এর টা আল্লাহর রহমতে যারা ইজিলি পার হয়ে আসছি কনফিডেন্ট লেভেল ও মাশাল্লাহ সবার ভাল।দুই টা সাবজেক্ট ই তো। আবার একটা করে পেপার।কোন প্র‍্যাক্টিকাল এর ঝামেলা নাই। হয়ে যাবে।তাদের জন্য ” পচা শামুকেই পা কাটে বেশি”।নতুন এই অভিজ্ঞতা যেন না […]

Platform of Medical & Dental Society

Platform is a non-profit voluntary group of Bangladeshi doctors, medical and dental students, working to preserve doctors right and help them about career and other sectors by bringing out the positives, prospects & opportunities regarding health sector. It is a voluntary effort to build a positive Bangladesh by improving our health sector and motivating the doctors through positive thinking and doing. Platform started its journey on September 26, 2013.

Organization portfolio:
Click here for details
Platform Logo