বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর, ২০২৪
কাগজে কলমে নাম – নওগাঁ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এখানে ১০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের লোকবলও নাই। চিকিৎসক সংকটের পাশাপাশি অবকাঠামো সংকটের কারনে প্রতিনিয়ত চিকিৎসা সেবা পূর্ণাঙ্গভাবে প্রদান করা সম্ভব হচ্ছে না এ হাসপাতালে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, এ হাসপাতালে ২০ জন সিনিয়র কনসালটেন্ট থাকার কথা থাকলেও পদায়িত আছে মাত্র ১৫ জন। অপরদিকে মেডিকেল অফিসার ১৮ জন থাকার কথা থাকলেও সেখানে রয়েছে মাত্র ৯জন, অর্ধেক পদই খালি। একইসাথে হাসপাতালে ১০০ জন সিনিয়র স্টাফ নার্স এবং মিডওয়াইফ নার্স ৩০ জন থাকার কথা। সেখানে সব মিলিয়ে রয়েছে মাত্র ৮১ জন নার্স।
প্রাতিষ্ঠানিক নথি বলছে, নওগাঁ জেলার হাসপাতালটি গত ২০২২ সালে ১০০ থেকে ২৫০ শয্যা হাসপাতাল হিসেবে দাপ্তরিক অনুমোদন লাভ করে। কাগজে-কলমে ২৫০ শয্যা হাসপাতাল হলেও এ হাসপাতালে বাস্তবে ১০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের সুযোগ সুবিধাও নেই। ১০০ জন রোগীর জন্য খাবার বরাদ্দ, ধোপা বরাদ্দ,লজিস্টিক সাপোর্ট রয়েছে। কিন্তু ১০০ শয্যা জনবলের মধ্যে আবার ৩০ ভাগ জনবলের সংকট রয়েছে।
এ হাসপাতালের বহির্বিভাগে প্রতিদিন গড়ে ৮০০ থেকে ১৬০০ রোগীর চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এতে সরকারের রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২১- ২০২২ আর্থিক বছরে রাজস্ব আয় হয়েছিল মাত্র ৪৫ লক্ষ টাকা। সেখানে ২০২৩-২০২৪ আর্থিক বছরে রাজস্ব আয় হয়েছে ১ কোটি ৩৩ লক্ষ টাকা। চিকিৎসক, নার্স সংকট দূর করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের প্রয়োজনীয় অবকাঠামগত উন্নয়ন ঘটলে একদিকে যেমন চিকিৎসা সেবা আরো সম্প্রসারিত হবে এবং অপরদিকে রাজস্ব আয় আরো অনেকগুণ বাড়বে। কিন্তু নেয়া হচ্ছে না কোন উদ্যোগ!
নওগাঁ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের পুরাতন ভবনের পাশাপাশি আধুনিক মানের ৮ তলা বিশিষ্ট নতুন ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। ২৫০ শয্যার মধ্যে নতুন ভবনে ১৫০ জন এবং পুরনো ভবনে ১০০ জন রোগীর চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা কথা। কিন্তু ইতিমধ্যে নওগাঁ মেডিকেল কলেজ স্থাপিত হয়েছে। মেডিকেল কলেজের স্থান নির্ধারণ বা ভবন নির্মাণ না হওয়ায় এ প্রতিষ্ঠানের দাপ্তরিক কার্যক্রম এবং একাডেমিক কার্যক্রম পুরোটাই হাসপাতালের পুরনো ভবনে চলমান। যার ফলে পুরনো ভবনে কোন রোগীর আসন ব্যবস্থা নেই। কেবলমাত্র হাসপাতালের প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। আর নতুন ভবনে সব রোগীর আসন ব্যবস্থা করা হয়েছে। ফলে নতুন ভবনের ১৫০ আসন থাকলেও প্রতিদিন গড়ে ৩০০ থেকে ৩৫০জন রোগীর ভর্তি ব্যবস্থা করতে হয়। এতে হাসপাতালের মেঝে করিডোর সবখানে রোগীদের বিছানা পেতে শুয়ে রেখে চিকিৎসা প্রদান করতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে, হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. জাহিদ নজরুল চৌধুরী বলেন, “এ হাসপাতালে আরও কমপক্ষে ৫ জন কনসালটেন্ট এবং ৯ জন মেডিকেল অফিসার পদায়ন করলে রোগীদের কোন রকমে চিকিৎসা ব্যবস্থা করা সম্ভব হবে। বর্তমানে চিকিৎসা প্রদানে বেশ হিমসিম খেতে হচ্ছে।”
প্ল্যাটফর্ম প্রতিবেদকঃ মঈন উদ্দীন আহমদ শিবলী