নতুন গভর্নিং বডি গঠনের দাবিতে নর্দান মেডিকেলের শিক্ষার্থীদের সংবাদ সম্মেলন

বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারি, ২০২৫

বেসরকারি নর্দান ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের (এনআইএমসি) গভর্নিং বডি পরিবর্তনের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। একইসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) বডির পাঁচ সদস্যকে পুনর্বিবেচনার দাবিও জানিয়েছেন তারা।

বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানান তারা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থী আনিকা আফরিন মুন। তিনি বলেন, ঢাবির ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (আইবিএ) প্রাক্তন পরিচালক অধ্যাপক ড. আবু ইউসুফ আব্দুল্লাহ প্রতিষ্ঠানটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান। বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) অনুমোদন না থাকা সত্ত্বেও প্রতারণার মাধ্যমে তিনি আমাদের ভর্তি নিয়েছিলেন। ২০১৯ সালে বিএমডিসির ভুয়া প্রসপেক্টাস এবং পত্রিকার বিজ্ঞাপন দেখিয়ে আমাদের ভর্তি নেওয়া হয়। করোনার পর আমরা জানতে পারি, আমাদের অনুমোদন নেই। তা সত্ত্বেও অবৈধভাবে করোনার পর একটি ব্যাচে ২০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি নেওয়া হয়। আমরা যখনই মেডিকেলের রেজিস্ট্রেশনের জন্য তার কাছে গিয়েছি, তিনি আমাদের আশ্বাস দিয়ে গেছেন। আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্টতা দেখিয়ে তিনি বারবার রেজিস্ট্রেশন আদায় করার প্রতিশ্রুতি দিতেন। কিন্তু তা করতে পারেননি।

আনিকা আফরিন মুন বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর আমরা তার কাছে গেলে তিনি সরাসরি বলে দেন, রেজিস্ট্রেশন নিয়ে আসতে পারবেন না। কারণ, তার দল এখন সরকারে নেই। তিনি আমাদের জানিয়ে দেন যে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কাজ করতে চান না। এমনকি গত ২৭ আগস্ট আমরা তার সঙ্গে দেখা করতে গেলে কথিত গানম্যান দিয়ে তিনি আমাদের ওপর হামলা করেন। এ সময় নারী শিক্ষার্থীদের শারীরিকভাবে হেনস্তা করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। এরপর থেকে তিনি বিভিন্নভাবে আমাদের প্রাণনাশ এবং অ্যাকাডেমিক ক্যারিয়ার ধ্বংসের হুমকি দেন।

এই শিক্ষার্থী বলেন, এর পরিপ্রেক্ষিতে ঢাবির কাছে নতুন গভর্নিং বডি চাই আমরা। ১৩ সদস্যের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের মধ্যে ঢাবি কর্তৃপক্ষ পাঁচজনকে মনোনীত করতে পারে। কিন্তু বুধবার (২৯ জানুয়ারি) তারা পাঁচজনের একটি দলকে মনোনীত করে, যাদেরকে আমরা চিনি না। তবে তাদের চারজনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। আমরা বিভিন্নভাবে জেনেছি, তাদের সঙ্গে আবু ইউসুফ আব্দুল্লাহর ভালো সম্পর্ক। আমরা মনে করি, এভাবে তারা ফ্যাসিবাদীদের পুনর্বাসিত করতে চাচ্ছে।

আনিকা আফরিন মুন বলেন, আমরা জানতে পেরেছি, অধ্যাপক আবু ইউসুফ আব্দুল্লাহ ২০১১ সাল থেকে মেডিকেলটি দখল করে রেখেছেন। অথচ তিনি মালিকই নন। প্রকৃত মালিকদের বিভিন্ন ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে দখল করে ফেলেন। এরপর থেকে মেডিকেলটির পতন শুরু হয়। শিক্ষকদেরও ঠিকঠাক বেতন দেওয়া হয় না। ওনার নামে ৬৫টি মামলার রয়েছে যার মধ্যে ১৭টিই হত্যা মামলা।

এ অবস্থায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিকট সুষ্ঠু সমাধান চান আনিকা আফরিন মুন। অন্যথায় কঠিন পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবেন বলেও হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, নতুন করে মনোনীত পাঁচজনকে পরিবর্তন করা হোক। আমাদের প্রস্তাবনা অনুযায়ী গভর্নিং বডি নিয়োগ দেওয়া হোক। যদি গভর্নিং বডি না থাকে, তাহলে আমরা বিএমডিসির অনুমোদন পাব না।

এর আগে, বিভিন্ন অভিযোগে গত বছরের ৭ সেপ্টেম্বর অধ্যাপক আবু ইউসুফ আব্দুল্লাহকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবি হেফাজতে নেওয়া হয়। কিন্তু মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয় তাকে। এরপর থেকে তিনি পলাতক। পরে ঢাবির আইবিএর পরিচালক পদ থেকে তাকে অব্যাহতি দিয়ে অধ্যাপক শাকিলা হুদাকে ভারপ্রাপ্ত পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হয়।

প্ল্যাটফর্ম/

প্ল্যাটফর্ম কনট্রিবিউটর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit is exhausted. Please reload the CAPTCHA.

Next Post

মুক্তিযোদ্ধা কোটায় মেডিকেলে চান্সপ্রাপ্তদের মধ্যে বাদ পড়েছে ১১৯ জন!

Thu Jan 30 , 2025
বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারি, ২০২৫ এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চান্সপ্রাপ্তদের ১৯৩ জনের মধ্যে ৭৪ জনের দরকারি সনদ পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) এ তথ্য জানিয়েছে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতর। এছাড়া তালিকার ৪৪ জন যোগাযোগই করেনি। বাকি ৭৫ জন মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-নাতনি হিসেবে আবেদন করেছিলেন। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, চলতি বছর নাতি-নাতনিরা মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ভর্তি […]

Platform of Medical & Dental Society

Platform is a non-profit voluntary group of Bangladeshi doctors, medical and dental students, working to preserve doctors right and help them about career and other sectors by bringing out the positives, prospects & opportunities regarding health sector. It is a voluntary effort to build a positive Bangladesh by improving our health sector and motivating the doctors through positive thinking and doing. Platform started its journey on September 26, 2013.

Organization portfolio:
Click here for details
Platform Logo