প্ল্যাটফর্ম নিউজ,
রবিবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২০
দিনদিন দেশের বিভিন্ন জেলায় করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। নতুন নতুন জেলায় মিলছে করোনা রোগীর সন্ধান।
এবার বরগুনায় করোনা ভাইরাস থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে চিকিৎসকদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন ৬২ বছর বয়সী এক বৃদ্ধ। বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়েছেন তিনি। ৩৫ বছর বয়সী এক যুবকও একইসাথে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। উভয়ের বাড়ি বরগুনা সদর উপজেলায়।
করোনা থেকে সুস্থ হওয়ায় ওই ২ জন ব্যক্তিকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক-নার্সসহ সকল স্বাস্থ্যকর্মীরা। গত শুক্রবার (২৪ এপ্রিল) দুপুর ২টার দিকে হাসপাতালের নিজস্ব গাড়িতে করে ঐ দুই ব্যক্তিকে বাড়িতে পৌঁছে দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতাল সূত্র জানায়,
“৬২ বছরের ওই বৃদ্ধ তাবলিগ জামাতে ঢাকায় অবস্থানকালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বরগুনায় আসেন। ৩৫ বছরের ওই যুবক নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুরে কর্মরত থাকা অবস্থায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন। এরপর তিনি বরগুনায় আসেন।”
গত ১১ এপ্রিল সন্ধ্যায় তাঁদের দেহে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়। পরে তাঁদের বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে রেখে চিকিৎসা দেয়া হয়।
বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডের প্রধান জুনিয়র কনসালট্যান্ট চিকিৎসক কামরুল আজাদ বলেন,
“যথাসময়ে চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা পাওয়ায় তারা দুজন দ্রুত সুস্থ হয়েছেন। তারা আরও আগেই সুস্থ হয়েছেন। তাদের সবশেষ রিপোর্ট আসতে দেরি হওয়ায় দেরিতে হাসপাতাল থেকে বাড়ি পাঠানো হয়। রিপোর্ট এলে আরও কয়েকদিন আগে তাদের বাড়িতে পাঠাতে পারতাম।”
ডা. কামরুল আজাদ আরো বলেন,
“উপসর্গ অনুযায়ী আমরা তাদের চিকিৎসা দিয়েছি। আমাদের সাধ্য অনুযায়ী তাদের সংস্পর্শে থেকে চিকিৎসা দিয়েছি। তবে আমরা সব থেকে বেশি যা করেছি, তা হলো তাদের মানসিকভাবে সাহস জুগিয়েছি। তাদের ভেঙে পড়তে দেইনি। সবসময় উৎসাহ দিয়েছি।”
করোনা থেকে সুস্থ হয়ে ফিরে আসা ৬২ বছর বয়সী বৃদ্ধ ব্যক্তিটি বলেন,
“আক্রান্ত হওয়ার খবর পেয়ে আমি খুব ভয় পেয়েছিলাম। ভেবেছিলাম আর বাঁচব না। কিন্তু চিকিৎসকদের সেবায় বেঁচে গেছি।”
ঐ বৃদ্ধ আরো বলেন,
“আমি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর স্বজনেরা দূরে সরে যায়। যেসব স্বাস্থ্যকর্মী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আমার সংস্পর্শে এসেছেন, আমাকে চিকিৎসা দেয়ার পাশাপাশি সাহস জুগিয়েছেন, তাদের আমি ধন্যবাদ জানাই। নতুন জীবন পাওয়ায় আমি চিকিৎসকদের কাছে ঋণী।”
বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মো. সোহরাব উদ্দিন বলেন,
“আমরা চেষ্টা করেছি রোগীদের সাধ্যমতো সেবা দেয়ার। করোনাভাইরাসের নির্দিষ্ট চিকিৎসা না থাকলেও লক্ষণ দেখে আমরা চিকিৎসা দিয়েছি। সার্বক্ষণিক তাদের নজরদারিতে রেখেছি। এসব কারণে আমরা দুজনকে সুস্থ করে তুলতে সক্ষম হয়েছি। এই কৃতিত্ব বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের সব চিকিৎসক, টেকনোলজিস্ট, ওয়ার্ড ইনচার্জ এবং নার্সসহ সব স্বাস্থ্যকর্মীর।”
প্রসঙ্গত, বরগুনা জেলায় এখন পর্যন্ত ২৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে ২ জন মারা গেছেন।
করোনা প্রতিরোধে আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন হয়ে, নিজগৃহে অবস্থান করেই সুস্থ ও নিরাপদ থাকা সম্ভব।
নিজস্ব প্রতিবেদক/ অংকন বনিক জয়