একটি ক্রন্দনরত মহিলা, তার দুই স্তনেই ফোলা নিয়ে এসেছে, সাথে ১৮ দিনের একটি বাচ্চা আছে। বাচ্চাটির অনেক জ্বর ছিলো, তাকে খাওয়ানো যাচ্ছিলো না। যখন তাকে পরীক্ষা করলাম, দেখলাম বাচ্চাটির দুই স্তনেই ফোঁড়া আছে। বাচ্চাটিকে অতিদ্রুত হসপিটালে ভর্তি করা উচিত!
এই বয়সের একটি বাচ্চার কেনো স্তনে ফোড়া হবে?
অনেক বাচ্চাই জন্মগতভাবে সামান্য বড় দানাদার স্তন নিয়েই জন্মায়; মায়ের শরীরে হরমোনের তারতম্যের কারনেই এটা হয়ে থাকে। এই ফোলার কোন চিকিৎসা লাগেনা, একটা সময় পরে এমনিতেই ঠিক হয়ে যায়।
গতানুগতিকভাবে, প্রতিটা পরিবার একটি ” দাঈ ” ঠিক করে বাচ্চা প্রসব করানোর জন্য। এই বৃদ্ধ অশিক্ষিত মহিলাদের
বাচ্চা প্রসব সংক্রান্ত অনেক ভুল ধারণা থাকে; দুর্ভাগ্যবশত এই মহিলাগুলোর স্বাস্থ্যবিষয়ক সিদ্ধান্তই পরিবারের প্রথম ও মুখ্য
সিদ্ধান্ত হয়ে দাঁড়ায়।
একটি ভুল ধারণা হচ্ছে, এই দানাদার স্তনে যেই দুধ থাকে তা ক্ষতিকর এবং তাই ফেলে দেওয়া উচিত। দুর্ভাগ্যবশত মায়ের
স্তনের মত বাচ্চার স্তনে কোন ছিদ্র থাকেনা, তাই দুধ বের হয়ে আসার কোন পথ নেই। দুধ বের করার জন্য, জোরপূর্বক
স্তনকে চাপা হয়। এর ফলে, বাচ্চার নরম স্তনের চামড়া ছিঁড়ে যায়।
এর মধ্যে বেশিরভাগ মহিলাই অস্বাস্থ্যকর অবস্থায় থাকে। তারা বাচ্চাকে ধরার পূর্বে সাবান অথবা জীবাণুনাশক লোশন
দিয়ে হাত না ধুয়েই স্পর্শ করে। যদি কোন বাচ্চার চর্মরোগ থাকে, সেই রোগ অন্য বাচ্চাদের মধ্যেও ছড়ায় যদি, এই দাঈ’রাই
তাদের গোসল এবং শরীর মালিশ করায়।
দুধ বের করার এমন ভুল প্রক্রিয়ার কারনেই বাচ্চাদের স্তনে ফোঁড়া হয়ে থাকে। বাচ্চাটির অপারেশনের মাধ্যমে ফোঁড়া
থেকে পুঁজ বের করা প্রয়োজন তাই, তাকে এক সপ্তাহের জন্য হাসপাতালে থাকতে হয়।
দুর্ভাগ্যবশত এই অসৎ অভ্যাস খুবই প্রচলিত এবং এর ফলাফলস্বরূপ অনেক বাচ্চাই মারাত্মকভাবে ভুগছে।
এটাই উপযুক্ত সময়, এই ভুল ধারণাগুলোকে বর্জন করার।
written by : Dr. Ashok Kapse, Consulting Pediatrician of Kapse children hospital surat GujratIndia
অনুবাদ এবং সমন্বয়ে ঃ শায়েরী রায় পূর্ণিমা, শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ, বগুড়া