প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ২৯ জুন ২০২০, সোমবার
দেশে রাজধানীর বাইরে একদিনে সর্বাধিক সংখ্যক ১ হাজার ২২২টি করোনা ভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা করে রেকর্ড সৃষ্টি করেছে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের আরটি পিসিআর ল্যাব। করোনা ভাইরাসের আতঙ্কে যখন সারাদেশ দুঃসময় পার করছে, তখন এই রেকর্ড যেন দেশবাসীকে আশার আলো দেখিয়েছে।
মমেক অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. চিত্তরঞ্জন দেবনাথ জানান, ২৭ জুন পর্যন্ত মমেক-এ দুটি ল্যাবের ৩টি আরটি পিসিআর মেশিনে ২৭ জুন পর্যন্ত মোট ৩১ হাজার ৫৪৭টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়, এতে ৩ হাজার ১৩৫ জন করোনা রোগী সনাক্ত হয়েছেন। অর্থাৎ মোট নমুনার ৯.৯৩ শতাংশ করোনা পজিটিভ হয়েছে।
তিনি আরো জানান, মাইক্রোবাইলজি বিভাগ অক্লান্ত ও দক্ষতার মাধ্যমে ২৭ জুন দেশে রেকর্ড পরিমাণ নমুনার পরীক্ষা করতে সক্ষম হয়েছে। মমেক-এ দুটি ল্যাবে স্থাপিত ৩টি আরটি পিসিআর মেশিনে ২৭ জুন ১২ টি স্লটে সর্বোচ্চ ১,২২২ টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। সকাল ৯টা থেকে শুরু করে রাত ১২টা পর্যন্ত পরীক্ষার কাজ চলে সেদিন।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ডাঃ চিত্তরঞ্জন আরো দেবনাথ জানান, মমেক মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ডা. সালমা আহমেদ এর নেতৃত্বে উক্ত মেডিকেলের মাইক্রোবায়োলজিস্ট বৃন্দ দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে নমুনার পরীক্ষা কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) এর কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির মহাসচিব অধ্যক্ষ ডা. এম. এ আজিজ জানিয়েছেন যে, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের আরটি পিসিআর ল্যাব আন্তরিকভাবে সেবাদানের দ্বারা দেশসেরা করোনা পরীক্ষা কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে এবং এখন সারাদেশে নেতৃত্বও দিচ্ছে। স্বাচিপ কেন্দ্রীয় পরিষদের ময়মনসিংহ বিভাগীয় করোনা মনিটরিং সেলের সমন্বয়ক ও বি.এম.এ ময়মনসিংহ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ডা. এইচ. এ. গোলন্দাজ তারা জানান, মাত্র ৩টি মেশিন দিয়ে এত অধিক সংখ্যক করোনার নমুনা পরীক্ষা বাংলাদেশের আর কোথাও হয় নি। ময়মনসিংহ জেলা বি.এম.এ সভাপতি, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ও মমেক প্যাথলজি বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ডা. মতিউর রহমান ভূঁইয়া জানান, মাইক্রোবাইলজি বিভাগের এই করোনাযোদ্ধারা দেশ ও জাতির কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকেন। তিনি এটাও বলেছেন যে, দেশসেরা এই কর্মদক্ষতার জন্য তাদের জাতীয়ভাবে মূল্যায়ন করা উচিত।
মমেক অধ্যক্ষ আরো সুদূরপ্রসারী চিন্তার পরিচয় দিয়েছেন, নমুনা পরীক্ষার জন্য ৫ জন সিনিয়র চৌকস অধ্যাপককে পিসিআর ল্যাবের সার্বক্ষণিক তদারকির দায়িত্ব দিয়ে। তারা হলেন- নেত্রকোণা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. শ্যামল কুমার পাল, মমেক কার্ডিওলজি বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. মোঃ আব্দুল বারী, ফার্মাকোলজি বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. শ্যামল কুমার সাহা, মমেক মাইক্রোবায়োলজি বিভাগীয় প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ডা. সালমা আহমাদ ও সার্জারী বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মোঃ আবুল কালাম আজাদ।
এদিকে একটি নতুন পিসিআর মেশিন বরাদ্দের ব্যবস্থা করে এবং ময়মনসিংহে দেশের সর্বাধিক সংখ্যক করোনার পরীক্ষার উপযোগী করে তোলার জন্য তিনি ময়মনসিংহবাসীর পক্ষ থেকে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির মহাসচিব ডা. এম এ আজিজের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।
ক্যাম্পাস প্রতিনিধি/রাইসা আনজুম