৩১ জানুয়ারি, ২০২০
চীন থেকে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাস আতঙ্কের পর এবার নাইজেরিয়ায় মহামারি আকার ধারণ করেছে লাসা জ্বর। চলতি মাসের শুরু থেকেই নাইজেরিয়ায় লাসা জ্বরের প্রকোপ দেখা যায়। এক সপ্তাহের মধ্যে পশ্চিম আফ্রিকার ১১ টি রাজ্যে প্রায় ২০০ এর বেশী কেস শনাক্ত করা হয়েছে এবং ইতিমধ্যে আক্রান্ত রোগে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪১জনে।
লাসা জ্বরের সংক্রমণ ক্রমবর্ধমান হওয়ায় নাইজেরিয়ান সরকার কর্তৃক জাতীয় পর্যায়ে জরুরী স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র খোলা হয়েছে।
লাসা জ্বর কি এবং কিভাবে ছড়ায়?
লাসা জ্বর ইবোলা এবং মারবার্গ ভাইরাসের একই পরিবারভুক্ত একটি ভাইরাল হেমোরেজিক জ্বর। এখন অবধি এই রোগটি কেবল পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলোতেই বিস্তার লাভ করেছে। ১৯৬৯ সালে নাইজেরিয়ার শহর লাসায় এই রোগটি প্রথম শনাক্ত করা হয়। পরবর্তীতে লাসা শহরের নাম অনুসারেই এই জ্বরের নাম করণ করা হয় লাসা জ্বর।
লাসা ভাইরাসটি মাস্তোমিস নামে এক প্রজাতির আফ্রিকান ইঁদুরের মল ও লালার মাধ্যমে ছড়ায়। তাছাড়াও আক্রান্ত ব্যক্তির শরীর নিঃসৃত যেকোনো ধরণের তরল যেমনঃ রক্ত, লালা, মল-মূত্র, বীর্য ইত্যাদির সংস্পর্শে আসলে সুস্থ ব্যক্তির শরীরে এ রোগের বিস্তার ঘটে।
লাসা জ্বরের উপসর্গ এবং প্রতিকারঃ
লাসা ভাইরাসের সুপ্তাবস্থা ৬-২১ দিন। প্রায় ৮০ ভাগ ক্ষেত্রেই লাসা জ্বরের রোগীদের কোন উপসর্গ দেখা যায় না। কিন্তু বাকি ২০ ভাগ রোগীর ক্ষেত্রে জ্বর, শারিরীক অবসাদ, বমি বমি ভাব, ডায়রিয়া, মাথা ব্যথা, পেট ব্যথা, গলা ব্যথা ইত্যাদি উপসর্গ দেখা যেতে পারে।জ্বরের প্রাথমিক অবস্থায় চিকিৎসার জন্য রিবাভিরিন কার্যকর ভূমিকা রাখে।
উল্লেখ্য, পশ্চিম আফ্রিকায় প্রতিবছর লাসা জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ১লক্ষ থেকে ৩ লক্ষ এবং মৃতের সংখ্যা প্রায় ৫০০০ জন। সিয়েরা লিওন ও লাইবেরিয়ার ১০-১৬ ভাগ রোগীই অসুস্থতার অন্তিম পর্যায়ে লাসা জ্বরে আক্রান্ত হয়। গতবছর শুধুমাত্র নাইজেরিয়াতেই লাসা জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা ছিলো ১৬০ জন। উষ্ণ আবহাওয়ার দরুণ জানুয়ারি মাসে এসব অঞ্চলে লাসা জ্বরের প্রকোপ বৃদ্ধি পায়।
নিজস্ব প্রতিবেদক/ নাজমুন নাহার মীম
Very informative….