রবিবার, ২৮ মার্চ, ২০২১
নাক দিয়ে “শ্রাবণের ধারা” ঝড়ার মতো বিব্রতকর এবং অস্বস্তিকর সমস্যা আর কিই বা আছে! যাদের এলার্জিক রাইনাইটিস আছে, এই প্যান্ডেমিকে তারা মাস্ক পরে এলার্জেন থেকে নিজেদের কিছুটা সুরক্ষিত করলেও, মাস্ক এর পিছনে টলমল নাক নিয়ে মাস্ক খুলতে না পারার যাতনা তাদের প্রায়শ!
শরীরে “অটোইমিউন” অসুখ গুলো যেমন একে অপরের হাত ধরাধরি করে আসে- ঠিক তেমনি “এলার্জিক” কন্ডিশন গুলোও অনেকটা একই সূত্র মেনে চলে! ত্বক, চোখ, নাক এর যেকোনো এলার্জি কিন্তু তাই কখনো কখনো ব্রঙ্কিয়াল অ্যাজমার আগাম বার্তাবাহক হয়ে আসে! এলার্জিক রাইনাইটিস এ ভোগা কেউ যদি কখনো বুকে চাপ, দমবন্ধ ভাব, লাগাতার শুকনো কাশি তে ভুগেন তাহলে তার অবশ্যই অন্তত একবার পালমোনোলজি বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হওয়া উচিত!
ইনহেলার যেমন সঠিক ব্যবহারের কোনো বিকল্প নেই, ঠিক তেমনি নাকের স্প্রে ব্যবহারেও যথেষ্ট যত্নশীল হওয়া খুব দরকার! রোগীদের তাই কয়েকটি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলার পরামর্শ দিলে ঔষধের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত হয়!
১. নাকে ব্যবহারের আগে বাতাসে একবার স্প্রে করে নেওয়া, একে বলা হয় “প্রাইমিং”! একদম ব্যবহারের শুরুতে অথবা একনাগাড়ে ৭ দিন স্প্রে ব্যবহৃত না হলে প্রাইমিং করে নিতে হবে!
২. স্প্রের বোতল টি ঝাঁকিয়ে নেওয়া; নাকে শ্লেষ্মা জমে থাকলে ঝেরে নেওয়া, নাক বন্ধ থাকলে স্যালাইন ড্রপ বা স্প্রে ব্যবহার করে অন্তত ১০ মিনিট অপেক্ষা করা!
৩. মাথা সামনের দিকে হালকা ঝুঁকবে! বাম হাত দিয়ে ডান নাকে এবং ডান হাত দিয়ে বাম নাকে স্প্রে ব্যবহার করতে হবে! স্প্রের ডিরেকশন থাকবে নাকের বাইরের দেয়ালের দিকে, মাঝখানের সেপ্টামের দিকে নয়! এতে অনেকগুলো সুবিধা আছে- অতিরিক্ত বিস্তৃতি, অধিক প্রদাহের জায়গাগুলোতে ছড়িয়ে পরার সুযোগ এবং সেপ্টামে আঘাতজনিত রক্তপাতের ভয় না থাকা!
৪. ভিতরে হালকা করে শ্বাস টেনে নিতে হবে। একই সাথে স্প্রে তে চাপ দিতে হবে! খুব জোরে শ্বাস নিলে তা গলার পিছনের দিকে বেশি চলে যাবে- ফলে নাক, যেখানে ঔষধ বেশি কাজ করা জরুরি, তা ঔষধ এর সংস্পর্শ এবং পরিমাণ কম পাবে!
৫. স্প্রে ব্যবহারের পর টিশ্যু অথবা শুকনো কাপড় দিয়ে অগ্রভাগ মুছে নিয়ে ক্যাপ লাগিয়ে দিতে হবে!
একাধিক স্প্রে ব্যবহার করলে অন্তত ১০ মিনিট বিরতি দিয়ে ব্যবহার করতে হবে!
ডা. মুশফিক নেওয়াজ আহমেদ
এমডি রেসিডেন্ট (পালমোনোলজি)
জাতীয় বক্ষব্যাধি ইন্সটিটিউট ও হাসপাতাল, মহাখালী, ঢাকা