অনলাইন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে আজ মালালা।খুবই স্বাভাবিক।নোবেল প্রাইজ পৃথিবীর দামী ব্রান্ড গুলোর মধ্যে একটি।এফবিআই,ফিফা,পেন্টাগন,নাসা,মাইক্রোসফটের চেয়ে নোবেল কমিটির ব্রান্ড-ভ্যালু কম নয়।বুদ্ধিমানদের আইডল অনুষ্ঠান আর কী!বুদ্ধিমানরা আসলেই বুদ্ধিমান।উনারা জানতেন ফিজিক্স,কেমিস্ট্রি,চিকিৎসা,রসায়ন,সাহিত্যে নোবেল পুরুষ্কার দিলে পৃথিবীর আর সব মানুষের চিত্তে কোন ঢেউ খেলবে না,জিভে জল আসবে না,খবরের কাগজে এ খবরের কোন বিক্রি-ভ্যালু তৈরী হবে না।
কী করা যায়?
বাঘা বাঘা ইন-টেলেক-চোয়ালদের সাথে যদি আরও একজনকে নোবেল দেয়া যায় যাতে পৃথিবীতে এই নোবেল পুরুষ্কার নিয়া আলোচনা কিংবা সমালোচনার ঝড় বইয়ে যাবে।যেটা সাথে সাথে এড ছাড়াই সারা পৃথিবীতে নোবেল পুরুষ্কারের পাবলিসিটি করবে।আলফ্রেড নোবেল ভালো করেই জানতেন কেমিস্ট্রিতে আর ফিজিক্সে কে কত তালেবর হয়ে গেছে এ নিয়ে পাব্লিকের মধ্যে কোন আগ্রহ তৈরী হবে না।এর জন্য চাই একটা ধরি মাছ নাই ছুঁই পানি টাইপের একটা পুরুষ্কার।যেটা অসী্ম ঘনত্বের গসিপ,হিউমার,রিউমার নিয়ে বাজারে আসবে আর সারা বছর জুড়ে জয় নোবেল জয় নোবেল বলে পৃথিবীর এয়ারপোর্টে এয়ারপোর্টে হাত নাড়াবে আর মুচকি হাসবে।
সেই এপল অফ ডিসকর্ডের নাম হচ্ছে-শান্তিতে নোবেল
এমন কী আলফ্রেড নোবেল তার উইলের মধ্যেও ক্লিয়ার করে যাননি কাকে দেয়া হবে শান্তির নোবেল।ছয়টি বিষয়ের এটিই একমাত্র ‘এম্বি-গিউয়াস’ সাব্জেক্ট।কারন শান্তির নোবেলের পেছনের লম্বা লিস্ট দেখলেই বোঝা যায় নোবেল পুরুষ্কারের মার্কেটিং এ ‘শান্তির ললিতবানী’ কী অপরিসী্ম ভূমিকা রেখেছে।
যাকগে সে বিষয়ে আর এগোবো না।কংগ্রেচুলেশন মালালা।তুমি পশ্চিমা বিশ্বের মিডিয়ার সৃস্টিই হও আর স্ফিংসের ছাই থেকে জেগে উঠা সোয়াত ভ্যালির মালালাই হও।
৩
নোবেল পিস প্রাইজের যখন ঘোষনা হচ্ছিল তার কিছুক্ষন আগে আরেকটি নিউজ প্রচার করা হচ্ছিল।ইবোলা ভাইরাসে নিহতদের আপডেট।একটা ব্যাপার শুনে অবাক হলাম।প্রায় চার হাজার নিহতদের মধ্যে দু’শ জন হেলথ পারসোনেলও আছেন।চিকিৎসক,নার্স,প্যারামেডিকস।
চট করে কেন জানি মনে হলো ইশ যদি এই দুশো জনকে দেয়া হতো এবারের শান্তির নোবেল।প্রফেশনাল সার্ভিসের সর্বোচ্চ আত্নত্যাগকারী এই সকল চিকিৎসক,নার্স,প্যারামেডিক্স এই শান্তির নোবেল ঝুলবে।
৪
মেডিসিন কিংবা ফিজিওলোজিতে নোবেল পুরষ্কার দেয়ার রেওয়াজ আছে।তবে সেটা অসামান্য আবিস্কারের জন্য।কিন্তু মাঠে কাজ করা ফ্রন্টিয়ারদের জন্য নয়।অথচ মহাদেশের বাউন্ডারী ছাড়িয়ে ইবোলা ছড়িয়ে পড়ছে এক মহাদেশ থেকে অন্য মহাদেশে।আর এ জন্য ফ্রন্টিয়ার ডাক্তার,নার্স,আর প্যারামেডিকসরাই নিচ্ছেন সর্বোচ্চ ঝুঁকি।পৃথিবীর শান্তির জন্য।
শান্তির নোবেল কী আমেরিকান লবিইস্টদের কাছেই জিম্মি থাকবে,নাকি মানবতায় উৎসর্গকারী এই সকল ফ্রন্টিয়ারদের গলায়ও ঝুলবে মরোনোত্তর নোবেল?
ডাঃ সেলিম শাহেদ