পশুপতি বসু ছিলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের প্রথম এনাটমির বিভাগীয় প্রধান এবং অধ্যাপক। আগামীকাল ৭১ তম ডিএমসি ডে উপলক্ষে তাঁর সম্পর্কে লিখছি।
এনাটমির এই কিংবদন্তীতুল্য অধ্যাপক ১৯০৭ সালের ১ নভেম্বর পশ্চিম বাংলার বহরমপুরে জন্মগ্রহণ করেন।
পশুপতি বসু ১৯২৩ সালে মুর্শিদাবাদ জিলা স্কুল থেকে মেট্রিকুলেশন পরীক্ষা পাশ করেন। সেখানে তিনি প্রথম স্থান অধিকার করেন। পশুপতি বসু জীবনেও কোন পরীক্ষায় দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন নাই। তিনি কলকাতা মেডিকেল কলেজ থেকে ১৯৩২ সালে এমবিবিএস ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি শুধু প্রথম হন নাই, ফাইনাল পেশাগত পরীক্ষায় তিনি ১০০০ এ ৯৬৮ পেয়েছিলেন। এটি সম্ভবত এখন পর্যন্ত একটি রেকর্ড। তিনি তাঁর শিক্ষাজীবনে বেশ কয়েকটি গোল্ড মেডেল পান।
তিনি কলকাতা মেডিকেল কলেজে এনাটমির শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন এবং ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। তার এক ছাত্র বলেছেন স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে ক্লাসে মানুষ আর অন্য প্রাইমেটদের পার্থক্য পড়াতে গিয়ে তিনি বলতেন, “মানুষ মেরুদণ্ড সোজা করে হাঁটতে পারে, বুড়ো আঙ্গুলের এপোজিসন করতে পারে, এবং তার লেজ নাই” এরপর ছাত্রদের দিকে ঘুরে বলতেন, “তোমাদের কয়েকজনের এখনও কিন্তু লেজ আছে।”
১৯৪৬ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর শুরুতে এনাটমি ও ফিজিওলজি ডিপার্টমেন্ট না থাকায় শিক্ষার্থীদের মিটফোর্ড মেডিকেল স্কুলে ক্লাস করতে হত। একমাস পর এনাটমি বিভাগের অধ্যাপক পশুপতি বসু এবং ফিজিওলজি বিভাগে অধ্যাপক হীরালাল সাহা শিক্ষক হিসেবে যোগদানের পর হাসপাতালে ২২ নং ওয়ার্ডে ক্লাস শুরু হয়। তখন ছিল না কোন লেকচার গ্যালারি বা ডিসেকশান হল। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর পশুপতি বোস আবার কলকাতায় চলে আসেন।
১৯৫২ সালে তিনি রকাফেলার ফাউন্ডেসনের আমন্ত্রণে আমেরিকায় যান। সেখানে এক বছর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি লেকচার দেন। তিনি ব্রিটেনের রয়্যাল সোসাইটির ফেলোশিপ অর্জন করেন।
কলকাতায় ফিরে আসার পর কলকাতা মেডিকেল কলেজের ভাইস প্রিন্সিপ্যাল পদে তিনি নিযুক্ত হন। তাঁকে এই নিয়োগ দেন পশ্চিম বাংলার মুখ্যমন্ত্রী এবং আরেকজন কিংবদন্তী ডা বিধান চন্দ্র রায়।
১৯৭৯ সালে ৭২ বছর বয়সে তিনি পরলোকগমন করেন। তাঁর নামে কলকাতায় পশুপতি বসু লেন নামে একটি সড়ক রয়েছে।
লেখকঃ রজত দাশগুপ্ত
Dedicated teacher & we remember many of our dedicated teacher……thanks Platform & Shofiq Tutul