প্ল্যাটফর্ম সাহিত্য সপ্তাহ -১৪
” পাখি.. আমার একলা পাখি ”
আজ হুট করে একটা চড়ুই ঢুকে পড়েছিলো হাসপাতালে । পাখিটা বোধহয় অসুস্থ ছিলো, ভেতরে ঢুকে এলোমেলো একটা উড়োউড়ি শেষে শূণ্য থেকে পাথরের টুকরোর মতো ঝকঝকে টাইলসের নিষ্করুণ মেঝেতে পড়ে গেলো । তারপর পড়েই রইলো । আমি হাতের সব কাজ ফেলে প্রায় দৌড়ে গিয়ে তাকে হাতের তালুতে নেই । এইটুকুন ধূসর একটা শরীর … তুলোর চেয়েও নরম ।
পাখিকে মনে মনে জিজ্ঞাস করলাম,- পাখি তুমি এখানে কেন?
পাখি দূর্বলভাবে আমার করতলে শুয়ে দূর্বলভাবে মাথা নাড়ে, একটুু ডানা ঝাপটে আবার নেতিয়ে পড়ে । নীরবতার ভাষায় সে বললো, – পথ ভুলে ।
সেটাই তো হওয়ার কথা । নয়তো এই গহ্বরে কেউ কি কেউ আর শখ ঢোকে?
পাখিটাকে সারাদিন আমার পাশে পাশে রাখলাম । দুপুরে রেস্ট রুমে বসে খাওয়ার সময় টিফিন ক্যারিয়ার খুলে আগে তাকে খাওয়ালাম একটু পোলাও আর চিকন করে কাঁটা টুকরো আলুর এক চিমটি । উচ্ছিষ্ট খেয়ে বেঁচে থাকা চড়ুইয়ের জন্যে এ তো রাজভোগই বটে! খাইয়ে তাকে একটা বাক্সের ভেতর বসিয়ে রেখে আসলাম এক কোনে । বাক্সে আরো একটু খাবারও রেখে এলাম ।
সন্ধ্যেয় বের হবার সময় দেখি পাখি নিঃসাড় হয়ে মরে পড়ে আছে । পাখিটাকে দেখে আমার বহুদিন পর আবারও বিভ্রম হলো । মনে হলো পাখি,হাসপাতাল, পথের ভুল, খাবার, মৃত্যু – সবকিছু সহ পুরো ব্যাপারটাই যেন প্রতীকী । খুব তীব্রভাবে ।
আসার পথে একটা ডাস্টবিনে তাকে ফেলে দিলাম । আলো – আঁধারির শহরে তার আর প্রয়োজনীয়তা নেই, বোধকরি কখনও ছিলও না ।
পাখি.. আমার একলা পাখি……..
লেখকঃ
ডা. আশেকুর রহমান মল্লিক
জালাবাদ রাগীব- রাবেয়া মেডিকেল কলেজ ।
Oshadharon
wonderful writing