প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ৩ নভেম্বর ২০২০, মঙ্গলবার
“আমার রক্ত শত ধমনীতে আনবে নতুন প্রাণ,
অন্ধ আঁখিতে রোশনাই জ্বালাতে করব দৃষ্টি দান।”
এই স্লোগানে গতকাল ২রা নভেম্বর, সোমবার পালিত হলো “জাতীয় স্বেচ্ছায় রক্তদান ও মরণোত্তর চক্ষুদান দিবস”। ১৯৭৮ সালের ২ নভেম্বর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ব্লাড ব্যাংকে ‘সন্ধানী’ প্রথমবারের মতো “স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি”র আয়োজন করে। যেখানে কিনা ২৭ জন স্বেচ্ছাসেবী রক্তদান করেছিলেন। পরবর্তীতে ১৯৯৬ সালে এই দিনটিকে জাতীয় দিবস হিসেবে ঘোষণা দেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বর্তমানে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রনালয় এবং “সন্ধানী কেন্দ্রীয় পরিষদ” ও “সন্ধ্যানী জাতীয় চক্ষুদান সমিতি” এর সম্মিলিত উদ্যোগে দিনটিকে “জাতীয় স্বেচ্ছায় রক্তদান ও মরণোত্তর চক্ষুদান দিবস” হিসেবে প্রতি বছর পালন করা হয়।
গত ২ নভেম্বর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত “জাতীয় স্বেচ্ছায় রক্তদান ও মরণোত্তর চক্ষুদান দিবস-২০২০” অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জনাব জাহিদ মালেক এমপি। অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি, সভাপতিত্ব করেন জনাব মো. আব্দুল মান্নান, সচিব, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব মো. আলী নূর, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ। আরো ছিলেন অধ্যাপক ডা. কণক কান্তি বড়ুয়া, ভাইস চ্যান্সেলর, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মো. খুরশীদ আলম, মহাপরিচালক, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ছিলেন সন্ধানী কেন্দ্রীয় পরিষদের সভাপতি তানভীর হাসান ইকবাল, সন্ধানী কেন্দ্রীয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ডা. মির্জা মিনহাজুল ইসলাম, সন্ধানী জাতীয় চক্ষুদান সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ডা. তোসাদ্দেক হোসেন সিদ্দিকী জামাল এবং
ডা. মো. জয়নুল ইসলাম, মহাসচিব, সন্ধানী জাতীয় চক্ষুদান সমিতি।
‘রক্ত বাঁচাবে জীবন, চক্ষু দেখাবে আলো’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে পালিত হওয়া দিবসটির উদ্দেশ্য হচ্ছে মানুষের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি করা এবং মানুষকে রক্ত ও চক্ষু দানে উৎসাহিত করা। রক্ত দানের মাধ্যমে রক্তদানকারী কোনো মুমূর্ষু রোগীর জীবন বাঁচানোর পাশাপাশি নিজেও বিভিন্নভাবে উপকৃত হতে পারেন-
স্ক্রিনিংয়ের মাধ্যমে রক্তদাতা জানতে পারেন তিনি কোনো রোগে আক্রান্ত কিনা। কোনো সেন্টারে রক্তদান করলে দাতার প্রয়োজনে সেন্টার থেকেই রক্ত সরবরাহ করা হয়।
নিয়মিত রক্তদান করলে রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে, ফলে হার্ট ভালো থাকে এবং হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক, উচ্চরক্তচাপ ইত্যাদির ঝুঁকি কমে।
উল্লেখ্য, পর পর ২ বার রক্তদানের সর্বনিম্ন বিরতি ১২ সপ্তাহ (৩ মাস)।
চক্ষুদানের ক্ষেত্রে জানতে হবে যে-
প্রাপ্তবয়স্ক যে কেউই চক্ষুদান করতে পারবেন।
চোখে ছানি পড়লেও যেহেতু কর্নিয়া ভালো থাকে তাই চক্ষুদান করা যায়।
ব্রেন ডেথের রোগী এবং লাইফ সাপোর্টে যাদের বাঁচিয়ে রাখা হয় তাদের কর্নিয়াও ভালো থাকে।
মৃত্যুর ৪-৬ ঘন্টার মধ্যে চক্ষুদানের জন্য সংগ্রহ করতে হবে।
স্বেচ্ছায় রক্তদান কার্যক্রমে বর্তমানে রেড ক্রিসেন্ট, বাঁধন, কোয়ান্টাম, মেডিসিন ক্লাবের মতো অনেক সংগঠন যুক্ত হয়েছে। সংখ্যায় কম হলেও পাশাপাশি মরণোত্তর চক্ষুদানের ক্ষেত্রেও অনেকে উৎসাহী হচ্ছেন অনেকেই।
প্রতিবেদক
ওমাইমা আক্তার মারিয়া