১
প্রকৃচি-বিসিএস সমন্বয় কমিটির সদস্য সচিব, বিসিএস সমন্বয় কমিটির মহাসচিব জনাব ফিরোজ খান তাঁর স্বাগত বক্তব্যে বলেনঃ
কৃত্য প্রশাসন ভিত্তিক প্রশাসন স্লোগানকে সামনে রেখে “প্রকৃচি-বিসিএস সমন্বয় কমিটি” গত তিন দশক ধরে ধারাবাহিকভাবে দাবি জানিয়ে আসছে। প্রকৃচি-বিসিএস সমন্বয় কমিটি গত ১৮/৭/১২তারিখে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করে ৯টি বিষয় উপস্থাপন করে। এসব দাবির প্রেক্ষিতে প্রশাসনিক সংস্কার এবং বিভিন্ন পেশাজীবীর বৈষম্য দূরীকরণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে গত ৩১/৭/১২ তারিখে একটি প্রশাসনিক সংস্কার কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটিতে সরকারের মুখ্য সচিব, সিনিয়র সচিব, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সচিব, অর্থ সচিব, প্রকৃচির তিনজন নেতৃবৃন্দ এবং বিসিএস সমন্বয় কমিটির ছয়জন নেতৃবৃন্দ থাকেন। এ কমিটিকে তিনটি দায়িত্ব বা গাইডলাইন দেয়া হয়,
১ সমসাময়িক একটি সমস্যা, ২০০৯ সালে চতুর্থ গ্রেড কেবলমাত্র প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা পেয়েছেন, অন্যান্য ক্যাডার পায়নি।
২ বিভিন্ন অধিদপ্তরে গ্রেড ওয়ান পদ সৃজন করা এবং যে সব ক্যাডারে কর্মকর্তার সংখ্যা অনেক বেশি সেখানে দুই বা ততোধিক আনুপাতিক হারে গ্রেড ওয়ান পদ সৃজন তৈরি করা।
৩ সুপারনিউমারি পদ সৃজন করে পদোন্নতির যে জট সৃষ্টি হয়েছে তা সমাধান করা ।
এরই ধারাবাহিকতায় ১৮ অক্টোবর ২০১২ এ কমিটির প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয় এবং ফলাফলস্বরূপ ১৭/২/২০১৪ ৩০টি পদ গ্রেড ওয়ান এবং ২০টি পদ গ্রেড টুতে উন্নীত হয় এবং সকল ক্যাডারের জন্য চতুর্থ গ্রেড সিলেকশন গ্রেড ও টাইম স্কেলসহ বাস্তবায়ন হয়। তখন সুপারনিউমারি পদ সৃষ্টির কথা তোলা হলে বলা হয় প্রাথমিকভাবে এ দুটি বিষয় বাস্তবায়ন হোক। কিন্তু ২০১৪’র পর আর কোন মিটিং হয়নি। সচিবালয়ে পদ না থাকার পরেও তড়িঘড়ি করে প্রশাসন ক্যাডার ২বার পদোন্নতি নিয়ে নিজেদের পদোন্নতির সমস্যা সমাধান করে অথচ প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা সত্বেও অন্যান্য ক্যাডারের পদোন্নতি সমস্যা সমাধানে কোন সভা অনুষ্ঠিত হয়নি। আমাদের দীর্ঘ দিনের দাবি নতুন পে কমিশন গঠন যেখানে সকল ক্যাডার ও ফাংশনাল সার্ভিসের জন্য একটা স্থায়ী যৌক্তিক বেতন কাঠামো হবে-এ সিদ্ধান্ত “প্রকৃচি-বিসিএস সমন্বয় কমিটি”র সর্বশেষ সভায় নেয়া হয়। কিন্তু নতুন পে স্কেলে হঠাৎ করেই পে স্কেলে সিলেকশন গ্রেড এবং টাইম স্কেল বাতিল করা হয়েছে। এর ফলে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি, আমাদের একেকটি পদে বিভিন্ন ক্যাডার এবং ফাংশনাল সার্ভিসের কর্মকর্তারা ৫ম এবং ৬ষ্ঠ গ্রেডে ১০ বছর ১৫ বছর বসে থাকছেন, তাঁদের পদোন্নতির কোন কাঠামো তৈরি হয়নি, তাঁরা ৫ম এবং ৬ষ্ঠ গ্রেড থেকে অবসরে গিয়েছেন।
১৯৮২ সালে যে সাংগঠনিক কাঠামো তৈরি হয়েছিল তা প্রতি পাঁচ বছর পর পর জনগণ এবং কর্ম পরিধির উপর ভিত্তি করে পুনর্গঠন করার কথা। কিন্তু অত্যন্ত দুর্ভাগ্য বিচ্ছিন্নভাবে দু একটি ছাড়া এসকল সাংগঠনিক কাঠামো পুনর্গঠন হয়নি। এর মাঝেই কেবিনেটের সিদ্ধান্তে “উপজেলা পরিষদ আইন ১৯৯৮” এর ৩৩ তম ধারা পরিবর্তন করা হয়। উপজেলার মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে ইউএনও উপজেলায় ন্যাস্ত সকল কর্মকর্তার বেতন বিল এবং সকল উন্নয়ন প্রকল্পের আর্থিক কার্যক্রমে স্বাক্ষর করবেন।
অত্যন্ত দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে মুহূর্তে রাষ্ট্রের সকল উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড গতিশীল, সকল অর্থনৈতিক উন্নয়নের সূচকগুলো উর্ধমূখী, যখন বাংলাদেশ মধ্য আয়ের দেশ হওয়ার অপেক্ষায়, যে মুহূর্তে দেশে কোন সমস্যা নেই-হঠাৎ করে কৃত্রিম সমস্যা তৈরি হয়ে গেল উপজেলা পরিষদ আইনের সংশোধনী বিষয়ে সিদ্ধান্তের মাধ্যমে।
মাননীয় অর্থমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করে তাঁকে আমরা এসকল বিষয় অবহিত করেছি। তিনি সাথে সাথেই বলেছেন প্রস্তাবিত বেতন স্কেলে সচিব এবং গ্রেড ওয়ান এর বেতন পার্থক্য থাকবে না, কিন্তু সিলেকশন গ্রেড এবং টাইম স্কেল বাতিল করলে অন্যান্য ক্যাডার এবং ফাংশনাল সার্ভিসের কর্মকর্তাদের মর্যাদাহানী হবে উনি তা জানতেন না এবং পরবর্তীতে বিষয়টি বিবেচনা করবেন।
কেবিনেট থেকে জারিকৃত উপজেলা পরিষদ আইন সম্পর্কিত নির্দেশনায় আরো আছে সরকার যে সকল দপ্তরের কাজ উপজেলা পরিষদে হস্তান্তর করবে সে সকল দপ্তরের কর্মকর্তারা উপজেলা পরিষদের নিয়ন্ত্রণে ন্যাস্ত হয়েছেন বলে ধরা হবে। তাঁদের বেতন ভাতা উপজেলা পরিষদের তহবিল থেকে ইউএনও’র রক্ষণাবেক্ষণ এবং তিনি এবং উপজেলা চেয়ারম্যানের যৌথ স্বাক্ষরে বেতন ভাতা পাশ হবে।
উদ্ভুত পরিস্থিতিতে গত ১৬ সেপ্টম্বর ২০১৫, আমরা সংবাদ সম্মেলন করেছি। ১৭ সেপ্টম্বরে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে স্মারকলিপি প্রদান করি। পুনরায়, ২১ অক্টোবর প্রেস কনফারেন্স করি এবং পূর্বের ন্যায় প্রকৃচি-বিসিএস সমন্বয় কমিটি নতুন করে করা হয়েছে।
আমরা দাবি করছি প্রতিটি ক্যাডারে একজন কর্মকর্তা নবম গ্রেডে যোগদান করে সেখান থেকে যেন সে শীর্ষ পদে যাবার সুযোগ পায়, ক্যাডার মানে ল্যাডার আক্ষরিক অর্থেই যেন একজন নবীন কর্মকর্তা তাঁর নিজস্ব ক্যাডারের শীর্ষ পদে যেতে পারে।
২
“ হে মোর দুর্ভাগা দেশ, যাদের করেছ অপমান,
অপমানে হতে হবে তাহাদের সবার সমান।
মানুষের অধিকারে
বঞ্চিত করেছ যারে,
সম্মুখে দাঁড়ায়ে রেখে তবু কোলে দাও নাই স্থান
অপমানে হতে হবে তাহাদের সবার সমান।
প্রকৌশলী জনাব তাজুল ইসলাম তুহিন, সদস্য, প্রকৃচি তাঁর বক্তব্য শুরু করেন রবি ঠাকুরের “দুর্ভাগা দেশ” কবিতার প্রথম চরণগুলো দিয়ে। তাঁর বক্তব্যের মূলঃ আমরা সবাই মনের মধ্যে একটি আশা ধারণ করি চাকরি জীবনের শুরু থেকে যে যার যার ক্যাডার বা ফাংশনাল সার্ভিস, লাইন ডিপার্টমেন্টের কর্মকর্তাগণ যার মন্ত্রণালয়ের সচিব কিংবা সিনিয়র সচিব হিসেবে পদায়ন পেতে চাই। কিন্তু এক্ষেত্রে সচিবালয়ের ডিএসপি বা সুপিরিয়র সার্ভিস পুল ২৬ ক্যাডারের কর্মকর্তাদেরকে দেয় ৩০%, প্রশাসন ক্যাডার বা একটি মাত্র ক্যাডারকে দেয় ৭০%-এটা আমরা মানি না। আমরা জানি প্রশাসন ক্যাডারে যারা আছেন তাঁরা কখনো কখনো আমাদের সহপাঠী ছিলেন, আপনাদের কোয়ালিটি সম্পর্কে আমরা অবগত। আমি আজকের সমাবেশে তাঁদের সামনে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে চাই, যদি সুপিরিয়র সিলেকশন সার্ভিস করতে চান তবে উন্মুক্ত পরীক্ষা দিন, আমরা উন্মুক্ত পরীক্ষা দিব, তাহলে দেখতে পাবো সেই পরীক্ষার ফলাফলে সেই প্রশাসন ক্যাডার ৩০% পায় কিনা আমার যথেষ্ট সন্দেহ আছে। একজন ইঞ্জিনিয়ার সহকারী প্রকৌশলী থেকে প্রকৌশলী বাংলাদেশের আনাচে কানাচে অবকাঠামো তৈরী করতে পারে, এত বড় দায়িত্ব নিতে পারে তাহলে কেন তিনি তাঁর নিজের মন্ত্রণালয়ের সচিব কিংবা সহকারী সচিব হতে পারবে না? একজন পুলিশের আইজি তিনি যদি পুলিশ বাহিনীর মত এত বড় বাহিনী পরিচালনা করতে পারেন তবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিবের কি দায়িত্ব আমরা জানতে চাই।
আষ্টম বেতন স্কেলে সিলেকশন গ্রেড এবং টাইম স্কেল পুনর্বহাল করতে হবে। প্রশাসন ক্যাডারের উদ্দেশ্যে স্পষ্টভাবে বলতে চাই, আপনাদের উদ্দেশ্য আমরা বুঝি। আমাদের প্রমোশন হয় না আপনারা জানেন, টাইম স্কেল সিলেকশন গ্রেড না দিয়ে আমাদের অবনয়ন মানে পদ মর্যাদায় নিচে নামাবে, তারপর আমাদের উপরের যে পদগুলো আছে সেগুলো শূন্য পদ দেখিয়ে তাঁরা সেই পদে পদায়ন নিবে। এটা আমরা কখনোই হতে দিব না।
এসবের কারণ তাঁদের মাঝে ব্রিটিশ ঔপনিবেশকদের জিন তাঁদের রক্তে রয়ে গেছে। ডাক্তার সাহেবরা ভালো বুঝবেন। এই জিনের যে রোগ তাঁর চিকিৎসা আমাদের সামনের ডাক্তার সাহেবরা অনতিবিলম্বে শুরু করুন। এই রোগের যদি চিকিৎসা না হয় বাংলাদেশের সর্বনাশ হয়ে যাবে।
বঙ্গবন্ধুর স্বাধীন করা এই দেশের নাম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। জনগণের তন্ত্র আমলাতান্ত্রিক দেশ নয় সেকারণে মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীরা প্রধান নির্বাহী হিসেবে কাজ করেন, কোন সচিব কিন্তু প্রধান নির্বাহী নয়। তাহলে সিটি কর্পোরেশনে, পৌরসভায়, জেলা পরিষদে, উপজেলায় প্রধান নির্বাহী পদ থাকতে পারে না। এবং কোনভাবেই উপজেলা পরিষদে মূখ্য নির্বাহী পদ থাকতে পারে না। মাননীয় সংসদ সদস্যদের পক্ষ থেকে আমার একটি দাবি আছে (এখানে একজন মাননীয় সংসদ সদস্য উপস্থিত আছেন), ওয়ারেন্ট অফ প্রিসিডেন্স অনুযায়ী মাননীয় সংসদ সদস্যদের স্থান সচিব এবং মূখ্য সচিবের নিচে। এটা খুবই লজ্জাকর। আমাদের এই সমাবেশ থেকে আমরা দাবি করছি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংসদ সদস্য বা আইনপ্রণেতাদের স্থান কখনোই বাংলাদেশ সরকারের কোন কর্মচারীর নিচে থাকতে পারে না।
উপজেলা পরিষদ একটি উন্নয়নভিত্তিক স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা। এখানে নির্বাচিত পরিষদ ব্যতীত প্রজাতন্ত্রের অন্য কোন কর্মকর্তা বা মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা দ্বারা পরিচালিত হতে পারে না। আমরা মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তার কাছ থেকে বেতন নিতে পারবো না। পরিষদের একটি হস্তান্তরিত ক্যাডারের কাছ থেকে অন্য হস্তান্তরিত ক্যাডারের কর্মকর্তারা বেতন নিবে না। এ কথা জানিয়ে প্রকৃচি-বিসিএস সমন্বয় কমিটির নেতৃবৃন্দকে বলছি-ইতিহাস সৃষ্টির সুযোগ বার বার আসে না, আপনারা কঠোর কর্মসুচি দিন, আমরা আপনাদের সাথে আছি, আমাদের সমস্ত দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত মাঠ ছাড়বো না।
৩
কৃষিবিদ রিয়াজুল ইসলাম জসিম, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা, চন্দনাইশ, চট্টগ্রাম এর মূল বক্তব্যঃ বক্তব্যের পূর্বে আমাকে আমার বিসিএসের ব্যাচটা বলতে বলা হলো, আমি লজ্জায় বলতে চাইনি। ২৪ বছর চাকরি করছি। আমি আমার প্রজন্মের মেধাবী প্রজন্ম। আমি এখনো উপজেলা পর্যায়ের অফিসার। আমি যার নেতৃত্বে কাজ করি তিনি আমার সন্তানের সমতুল্য, কিন্তু কোমর বাঁকা করে মনের শক্তি দিয়ে আজো কাজ করে যাচ্ছি। যাচ্ছি বলেই তো দেশটা এগুচ্ছে গত সাত বছরে যে উন্নয়নটা হয়েছে যেটা সরকার স্বীকার করে, দেশের ১৬ কোটি মানুষ স্বীকার করে যেটা গত ৩০ বছরেও হয় নি। উন্নয়ন কোথায় হয়েছে? কৃষিতে হয়েছে, ইনফ্রাস্ট্রাকচারে হয়েছে, স্বাস্থ্যে হয়েছে। কারা করেছে এগুলা? আমাদের আর কত ছোট করবেন? এত হেনস্থা করার পর ও কাজ করে যাচ্ছি। কিন্তু কত আর? কাঁহাতক? মুক্তি চাই? এদেশকে আমরা অনেক কিছু দিতে চাই। সাত বছরে আমরা যে উন্নয়ন দিয়েছি আরো দিতে পারতাম, যদি না মধ্যস্বত্বভোগীরা একটা জনগোষ্ঠী যদি না থাকতো আমরা আরো ভালো কাজ করতে পারতাম।
সাংবাদিক ভাইরা বোধহয় বিভ্রান্তিতে থাকতে পারেন, যে বিসিএসে মেধাবীরা বোধহয় একটা ক্যাডারে যায়, মেধার বড়াই করবেন না, আমার সময়ে আমি সেরা প্রজন্ম, বাহাউদ্দিন স্যারের সময় উনি সেরা প্রজন্ম, ফিরোজ খান তাঁর সময়ে তিনি সেরা প্রজন্ম, আমি আমার সময়ে সবার আগে চাকরি পেয়েছি, অথচ আমার সাথে যারা পারে নাই পরবর্তী সময়ে মুখস্ত করে তাঁরা প্রশাসন ক্যাডারে সুযোগ পেয়েছে। সাংবাদিক ভাইয়েরা আপনি যে কাজটি করেন তার জন্য একটা বিশেষজ্ঞ জ্ঞান (এক্সপার্টি) আছে, আমি প্রাণীসম্পদ বিশেষজ্ঞ হতে পারি, অনেক পন্ডিত হতে পারি কিন্তু আপনি যে সাংবাদিকতা করেন সেখানে যদি আমি নাক গলাই, আপনাকে তাচ্ছিল্য করি তবে আপনার প্রফেশনকে হেয় করা হয়না? আর তাই যদি করি তবে আপনি কিভাবে দেশ বিনির্মাণে আপনাকে সম্পৃক্ত রাখবেন?
এই উপজেলা পরিষদ আমাদের পেশাজীবীদের দাবি ছিল এটা করার জন্য, কারণ সমন্বয়কারী হিসেবে আমরা কোন আমলার নেতৃত্ব মানতে চাইনি, কারণ ডাক্তার সাহেবরা যারা কাজ করেন তাঁরা তাঁদের সময়ের সেরা প্রজন্ম, তাঁরা কাজ করে তাঁদের নাতির বয়সী কর্মকর্তার অধীনে আমার তো ছেলের বয়সী। আমরা মর্যাদার সাথে কাজ করতে চেয়েছিলাম। অথচ চেয়ারম্যান সাহেবদের সাথে আমাদের মুখোমুখি করিয়ে দেয়া হয়েছে আমরা চাইনা তাঁরা আমাদের বেতন বিলে স্বাক্ষর করুক । তাঁদের কাছে আমাদের আহবান তাঁরা আমাদের বেতন বিলে স্বাক্ষর করবেন না। আমরা আন্দোলন চাই না, আমরা কাজ করতে চাই।
৪
জনাব জিয়া আরেফিন আহমেদ, সদস্য সাধারণ শিক্ষা সমিতি, সাধারণ সম্পাদক প্রকৃচি-বিসিএস সমন্বয় কমিটি, রাজশাহী বিভাগ
মূল বক্তব্যঃ যে পদ গুলো গ্রেড ওয়ানে উন্নীত করা হয়েছিল তাঁর মাঝে আমাদের ক্যাডারের মহাপরিচালক পদটিও অন্তর্ভুক্ত। আমাদের অধ্যাপকদের পদ চতুর্থ গ্রেডে রয়েছে। এই যে এর মাঝখানে যে শূন্যস্থানটি রয়েছে সেটি পূরণ করার জন্য যে নীল নক্সা,ইতিমধ্যে যে সার্কুলারগুলো জারী করা হয়েছে মন্ত্রীপরিষদ বিভাগ থেকে যে, উপসচিব পর্যায় পর্যন্ত পদ্গুলো শিক্ষা প্রশাসনে যে কোন যায়গায় বদলীযোগ্য । এ বিষয়গুলো নিরসন করার জন্য আমরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছি। মমতাজুল ইসলাম স্যার, শিক্ষা সচিব ওয়াদা করে গিয়েছিলেন ২০০৬ সালে জুন মাসে(কয়েক মাসের মধ্যে) হয়ে যাবে। তা না করেই নতুন নতুন বৈষম্যের ক্ষেত্র তৈরি করা হচ্ছে।
আন্দোলন আমাদের অন্য অনেক সময় আত্মঘাতী হয়। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের আলাদা পে স্কেলের জন্য আন্দোলন করলেন, আমরা কর্মবিরতি করলাম, কিন্তু কোন অবস্থাতেই আমরা আলাদা পে স্কেল চাই না, আমরা ক্যাডার ব্যবস্থার মধ্যেই থাকতে চাই, সেই জায়গায় ষড়যন্ত্র করে আমাদেরকে আলাদা পে স্কেলে নিয়ে যাওয়ার-এই জায়গাটাকে আমি চিহ্নিত করতে বলছি। যদি আমরা আন্দোলন অর্ধসমাপ্ত রাখি, আন্দোলনের কতগুলো অস্পষ্টতার জায়গা যদি থাকে, তবে আমরা আরো গভীর খাদে নিমজ্জিত হবো, এই জায়গা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। আমাদের বেতন কমিশনের যে সমস্যা সেটা পাঠানো হল সচিব কমিটির কাছে এখন আমাদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে যে কমিটি করা হয়েছে সেখানেও সচিবদের প্রধান্য রয়েছে সেই জায়গাগুলো আমরা নিরসন চাচ্ছি। সেখানেই কৃত্য পেশাভিত্তিক যে মন্ত্রণালয় এবং সংবিধানের যে দাবি জনপ্রতিনিধিদের যে শাসন সে জায়গাগুলোকে এই আন্দোলনের মাঝে অন্তর্ভুক্ত করতে দাবি জানাচ্ছি।
সমাবেশটি সঞ্চালনের দায়িত্বে ছিলেন প্রকৌশলী শেখর ভট্টাচার্য, কাউন্সিল মেম্বার আইইবি, এবং কৃষিবিদ আতাউর রহমান, দপ্তর সম্পাদক কৃষি ইন্সটিটিউট বাংলাদেশ।
৫
কৃষিবিদ মোঃ সাফিয়া রহমান, কৃষি অফিসার,বালিয়াকান্দা, ঠাকুরগাঁও এর মূল বক্তব্যঃ
পেশাজীবীদের স্বাধীন হতে হবে। কৃত্য পেশাভিত্তিক প্রশাসন দরকার। সম্প্রতি একটি প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছেঃ উন্নয়ন কমিটির প্রধান হবে জেলা প্রশাসক, বিভাগীয় কমিশনার বা উপজেলা নির্বাহী কমিশনার কেন হবে? যারা উন্নয়ন করে তাঁদের নেতৃত্ব কেন নয়? কেন কৃষি কর্মকর্তা, সিভিল সার্জন, কেন পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে জেলা উন্নয়ন কমিটি হতে পারে না। আমরা আওয়াজ তুলবো যদি কমিটি করতে হয় তাহলে ভোটের মাধ্যমে করতে হবে।
৬
প্রকৌশলী আব্দুল মজিদ, (বিভাগীয় সদস্য,____বিভাগ) এর মূল বক্তব্যঃ আজ আমরা বিরাট এক মানহানীকর অবস্থায় উপনীত হয়েছি। আমাদের অধিকার-মর্যাদা, বেতন ভাতা উত্তোলনের অধিকার হরণ করা হয়েছে। আমাদের জনপ্রিয় সরকার সর্বশেষ পে স্কেলে বেতন ভাতা দ্বিগুণ করেছে, অথচ সরকারের ভেতর এক কুচক্রী সরকার এক আমলাতান্ত্রিক জটিলতা এই সরকারের মান মর্যাদা নষ্ট করতে তৎপর। আমরা এই সভার মাধ্যমে সরকারকে জানাতে চাই, আমরা আন্দোলন চাই না, আমরা চাই দেশের উন্নয়ন, কত কর্মকর্তারা যে কাজ ফেলে আমরা এ জায়গায় আসছি আরো হয়ত থাকতে হবে রাস্তায় এটা সরকারের জন্য কত বড় ক্ষতি সরকার কে এ ব্যাপারে পদক্ষেপ রাখতে অনুরোধ করছি।
৭
বরিশাল বিভাগের প্রকৌশলী রতন কুমার মণ্ডল, উপজেলা কৃষি অফিসার, বাবুগঞ্জ বরিশাল। মূল বক্তব্যঃ যে মুহূর্তে সরকার উন্নয়নের সর্বশিখরে অবস্থান করছে সে মুহূর্তে একদল কুচক্রী মহল এই সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার জন্য এই উপজেলা পরিষদকে হস্তান্তরের নামে একটি কুচক্র অবতারণা করছে। আমরা তার তীব্র প্রতিবাদ জানাই। যখন এই অর্ডিন্যান্সটা জারী হয় তখনই ভোলায় কৃষি অফিসারকে ইউএনও কৃষি অফিসারকে অপমান করেছে। কিছুদিন পূর্বে শিক্ষা ক্যাডারের এক শিক্ষককে যে ইউএনও পা ধরিয়েছিল সে এখন পানিশমেন্ট পেয়ে আমার উপজেলায় আসছে। আপনারা কিভাবে বিশ্বাস করলেন সেই বেআদবের অধীনে আমি চাকরি করবো? প্রয়োজনে আমরা চাকরি ছেড়ে দিব। যদি এরকম সিদ্ধান্ত আসে তবে আমরা মাঠ ছাড়বো না, আমরা যারা বরিশাল থেকে এসেছি আমরা ফিরে যাবো না।
৮
ডাঃ বাহারুল আলম, সহ সভাপতি, বিএমএ। মূল বক্তব্যঃ
অনেক দেরিতে হলেও আমাদের ঘুম ভেঙ্গেছে। আমরা এক দিনের জন্য সারা বাংলাদেশ থেকে এই রাজধানীতে জাতীয় নেতৃবৃন্দের মুখোমুখি হতে এখানে উপস্থিত হতে পেরেছি। সৌভাগ্য বলবো না অন্য কিছু বলবো সেটা পরে আসছি। প্রথম আমি শ্রদ্ধা জানাই মঞ্চে উপবিষ্ট জাতীয় নেতৃবৃন্দের প্রতি, সুদূর কলাপাড়া খেপুপাড়া থেকে, সুদূর সুন্দরবনের কোল থেকে কলোরোয়া থেকে, কয়রা থেকে যে পেশাজীবী আশা নিয়ে বুক বেঁধে আজকের এই সমাবেশে এসেছেন তাঁর প্রতি আমার সবচেয়ে ভালোবাসা, বিনম্র শ্রদ্ধা।
এই জনপ্রশাসনের নামক দানব তাঁদের সংখ্যা খুব কম। তারা ৪৪ বছর টিকে আছে শুধুমাত্র আমাদেরই আপোসকামীতা আমাদেরই ভীতি আমাদেরই লেজুড়বৃত্তির জন্য। তা না হলে কখনোই টিকে থাকতে পারত না। এত নিয়ম এত কিছু কেন? সারা বাংলাদেশ ৫৬ হাজার বর্গমাইল মানেই তো পেশাজীবী। পেশাজীবী মানেই তো বাংলাদেশ। কৃষিবিদ, চিকিৎসক যে যেখানেই আছেন আমাদের সাথেই তো সাধারণ মানুষের সরাসরি সম্পর্ক। বৃটিশের সেই আইসিএসের উত্তরসূরী এই বিসিএস প্রশাসন। তাদের কাজ হলো প্রতিনিয়ত সরকারকে বিভ্রান্ত করা। আজকে তারা সরকারের ঘরের মধ্যে ঘর বানিয়েছে, জনবিচ্ছিন্ন পরগাছা ওরা পেশাজীবীদের শাসন করছে। কি অধিকারে আসে? একটাই অধিকার, আমরা এদের সাথে আপোস করি, লেজুর বৃত্তি করি, ভয় পাই। আত্মোপলব্ধির সংকট বন্ধুরা আমার। আমি নিজেকে একজন পেশাজীবী হিসেবে মনে করছি না, আত্মবিশ্বাসের সংকট, যদি এক বার ভাবি, আমি যদি এই আন্দোলনকে ধারণ করি কোন নিয়মতান্ত্রিকতার প্রয়োজন নাই। আমরা এই সরকারকে বলবো, পেশাজীবে মানেই তো সরকার, আমাদের যদি প্রয়োজন না হয় একদিনে এক সময়ে ২৬ ক্যাডারের সবাই পদত্যাগ করবো। কিসের কালো ব্যাজ ধারণ, কিসের মানব বন্ধন। যারা রাজধানীতে আছেন তারা মফস্বলের প্রান্তিক লেভেলের পেশাজীবীদের অত্যাচার নির্যাতন সম্পর্কে সম্যক অবহিত নন। তাঁরা যে জ্বালা বুকে নিয়ে আসছে হয় কর্মসুচী দেন, কর্মবিরতি, কর্মবিরতি দেন।
বন্ধুরা আমার, আমরা সরকার বিরোধী নই, বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। যারা জনপ্রশাসন তারা তো সরকার না, তাদের বিরুদ্ধে মুভমেন্ট করলে কেন সেটা সরকার বিরোধী হবে?
একটি দাবি, একটিই দাবি। একটি দাবি যথেষ্ট-পেশাভিত্তিক মন্ত্রণালয়। আমার মন্ত্রণালয় আমার দখলে আসবে। বাকি দাবি অটোমেটিকালিই হবে। প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ, আপনাকে যেন কেউ বিভ্রান্ত না করে, কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ আপনারা ভয় পাবেন না, আমরাতো এমনিই মরে গেছি, আবার যুদ্ধ করে মরবো। সবাইকে ধন্যবাদ। জয়বাংলা।
৯
শফিউল আজম, সভাপতি সম্মিলিত সরকারি কর্মকর্তা পরিষদ। মূল বক্তব্যঃ
আজকের এই সমাবেশে সারা বাংলাদেশের যে সকল কর্মকর্তা এখানে এসেছেন তাঁরা বেশিরভাগই নন ক্যাডার কর্মকর্তা। উপজেলাতে যে ১৬টি ডিপার্টমেন্টে ইউএনওএর নিয়ন্ত্রণে নেয়ার জন্য যে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে তাঁর মধ্যে ১২টি হলো নন ক্যাডার কর্মকর্তা বা অফিস, যেমন যুব উন্নয়ন, অডিট, পরিসংখ্যান, উপজেলা নির্বাচন, সমবায়। আমরা এটাকে মনে করিয়ে ট্রেজারি রুলের ব্যাত্যয় ঘটিয়ে উপজেলা পরিষদ যে আইন করা হয়েছে তা বাতিল চাই। আজকের এই সমাবেশে বাংলাদেশের সাড়ে তিন লক্ষ নন ক্যাডার কর্মকর্তাদের সংগঠন সম্মিলিত সরকারি কর্মকর্তা পরিষদের পক্ষ থেকে প্রকৃচি-বিসিএস সমন্বয় কমিটির নেতৃবৃন্দের কাছে একযোগে আন্দোলন চালিয়ে যাবার কথা ব্যক্ত করছি। নব ঘোষিত পে স্কেল বাংলাদেশের ১৪ লক্ষ কর্মকর্তা কর্মচারীর স্বার্থ সংশ্লিষ্ট হবে বলে আমরা আশা করেছিলাম। কিন্তু প্রশাসন ক্যাডারের চক্রান্তে আমাদেরকে বঞ্চিত করে আমাদের পে স্কেলকে কমিয়ে দিয়ে আমাদেরকে যেভাবে হয়রানি করেছে পাশাপাশি কর্মকর্তাদের পদোন্নতি বঞ্চিত করেছে, টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড থেকে বঞ্চিত করেছে-এটা কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না। টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড পুনর্বহালে যদি কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে কোন কর্মসুচি দেয় আমাদের সকল পেশাজীবী একযোগে মাঠে নামবে।
আজকে যে আদেশের কথা বলা হয়েছে উপজেলা পরিষদের গত ৫/৮/১৫ তারিখে মাননীয় অর্থমন্ত্রীর সাথে যোগাযোগ করেছিলাম, সেখানে মাননীয় অর্থমন্ত্রী মহোদয় পরিষ্কারভাবে এটাকে বাতিল করার জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে জিও লেটার দিয়েছেন। কিন্তু তারপরেও জনপ্রশাসন ষড়যন্ত্র করে উপজেলার সকল কর্মকর্তাকে জিম্মি করার চেষ্টা করছে সেটা অত্যন্ত দুঃখজনক।
সকল কর্মকর্তাদের পদোন্নতির সুযোগ থাকলেও নন ক্যাডারদের পদোন্নতির সুযোগ অত্যন্ত সীমিত। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার আবেদন, যে বাংলাদেশের নন ক্যাডার কর্মকর্তাদের টাইম স্কেল এবং সিলেকশন গ্রেড থেকে বঞ্চিত করা হয় তাহলে তাঁদের আর কিছুই থাকেনা। আমরা ৫ বছর চাকুরি পূর্তিতে সিনিয়র স্কেল, ১০ বছর চাকুরি পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড চাই, পে কমিশন আমাদের বলেছি আমাদের পুরো চাকরি জীবনে ৪টা পদোন্নতি অথবা ৪টা স্কেল থাকবে সারা চাকরি জীবনে। আমরা আজকের সমাবেশের মাধ্যমে নন ক্যাডার কর্মকর্তাদের পক্ষে থেকে এই দাবি জানাচ্ছি।
বাংলাদেশে ১৫ হাজার ক্যাডার কর্মকর্তার মাঝে ৪ হাজার প্রশাসন ক্যাডার, এবং সাড়ে তিন লক্ষ নন ক্যাডার সারা বাংলাদেশে মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে। আজকের সমাবেশের নেতৃবৃন্দ কর্মসূচি দিলে আমরা অবিলম্বে সকল নন ক্যাডার কর্মকর্তা একসাথে অংশগ্রহণ করবো।
১০
প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী সমিতি, ভাইস চেয়ারম্যান, ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউট, ঢাকা। মূল বক্তব্যঃ
একদিকে পদোন্নতি যোগ্য পদ থাকা স্বত্বেও উনারা বিভিন্ন অজুহাতে আমাদের পদোন্নতি আঁটকে রাখছেন অন্যদিকে পদোন্নতিযোগ্য পদ না থাকা স্বত্বেও একটি বিশেষ ক্যাডারের জন্য সুপারনিউমারি পদ সৃষ্টি করে লাগামহীন ভাবে পদোন্নতি দেয়া হচ্ছে। সেই লাগামহীন পদোন্নতির ধরণটি কেমন?
পদ পদের সংখ্যা মোট পদায়িত
অতিরিক্ত সচিব ১০৮ ৪৩৭
যুগ্ম সচিব ৪৩০ ৯৩২
সহকারী সচিব ৮৩০ ১২৮৮
বিশেষ ক্যাডারের এই পদোন্নতির ফলে যা হয়েছে, সচিবালয়ে তাঁদের বসার জায়গা নাই। অতিরিক্ত পদোন্নতি প্রাপ্ত এই সকল উদ্বাস্তু কর্মকর্তাদের পুনর্বাসনের লক্ষ্যে অত্যন্ত সুকৌশলে বিভিন্ন ক্যাডার এবং ফাংশনাল সার্ভিসে ৫ম থেকে তদুর্ধ্ব গ্রেডগুলোতে পদ শূন্য রাখার ষড়যন্ত্র হচ্ছে। সিলেকশন গ্রেড বাতিলের মাধ্যমে বিশেষ ক্যাডার এই পদ্গুলো দখল নিতে চাচ্ছে। এই ষড়যন্ত্র প্রতিহত করার লক্ষ্যে আমার সুস্পষ্ট প্রস্তাব, সংশ্লিষ্ট ক্যাডার এবং ফাংশনাল সার্ভিস বহির্ভূত প্রেষণ প্রথা অবিলম্বে বাতিল করতে হবে। প্রকৃচি-বিসিএস সমন্বয় কমিটির এই আন্দোলন সরকারের বিরুদ্ধে কোন আন্দোলন না, এই আন্দোলন সকল প্রকার বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন, পেশাজীবীদের অধিকার এবং মর্যাদা রক্ষার আন্দোলন। এই আন্দোলন সে সকল গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আন্দোলন যারা অন্যান্য ক্যাডারের কর্মকর্তাদের উপর নিয়ন্ত্রণ এবং নির্যাতন করছে।
১১
ডাঃ সেলিম রেজা, সভাপতি, বিসিএস, হেলথ এসোসিয়েশন। মূল বক্তব্যঃ
ব্রিটিশ সম্রাজ্যবাদের উত্তরসূরি হিসেবে আজকে জন প্রশাসন মন্ত্রণালয়ে যারা বসে আছেন তাঁদের কাজ হচ্ছে শুধু ফাইলে সই করা এবং সে কাজটাকে তাঁরা শুধু চান বিলম্বিত করার জন্য। তাঁরা খুব সংক্ষেপে লিখে দেন ফাইলের উপর ‘আলোচনা করুন’। ১৯৮৯ সালের দিকে আমাদের সিভিল সার্জন বলেছিলেন, কোন এক ব্যাপারে মিস্টার ডিসি আপনি দশ মিনিটের ভেতর আসবেন কিনা আসুন নইলে এই বন্যা উপদ্রুত এলাকায় আমি আমার সমস্ত কর্মীকে প্রত্যাহার করবো, আপনি সেভ করেন ফাইল আর আমি সেভ করি লাইফ।
আমাদের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা এমডিজি এওয়ার্ড পান মাতৃ মৃত্যু এবং শিশু মৃত্যুর হার হ্রাস করার জন্য। আজকে সেই সংক্রামক রোগ থেকে আমরা মুক্ত হয়েছি,আমাদের গড় আয়ু ৭৪ এ উন্নীত হয়েছে এর জন্য কারা দায়ী? কাদের কৃতিত্ব? যারা এর মন্ত্রণালয়ে বসে থাকেন তাঁরা না যারা এ কাজ করেছেন স্বাস্থ্য কর্মী, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, মেডিকেল অফিসাররা? অত্যন্ত দুঃখের সাথে বলতে হয় ২৯ হাজার ক্যাডার, নন ক্যাডার, এডহক কর্মকর্তা এবং প্রকল্পের কর্মকর্তার দুঃখ শোনেন আপনারা। এই সরকার আসার পরই অনেকের পদোন্নতি হয়েছে। এরকম অনেক উদাহরণ আছে বাবা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ছেলে একই উপজেলার মেডিকেল অফিসার (উদাহরণ ফুলপুর উপজেলায়-শ্রুতি লেখক) এভাবে বাবা রিটায়ার্ড করেছেন চাকরি থেকে। ২০১১ সাল থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে ডিপিসির মাধ্যমে আমাদের ক্যাডারে অনেক পদোন্নতি হয়েছে, এরফলে অনেকে অন্তত চতুর্থ গ্রেড পেয়ে অবসরে যেতেন। অথচ নবঘোষিত পে স্কেলে আমাদের উপর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য এবং নিজেরা সমস্ত উপরের পদগুলোতে আসীন হবার জন্য পৃষ্ঠপোশকতা করছে এবং আমাদের যুক্তিসংগত দাবিকে সরকার বিরোধী আন্দোলন হিসেবে প্রতীয়মান করার অপচেষ্টায় লিপ্ত। আমরা বলতে চাই প্রধানমন্ত্রীর এমডিজি এওয়ার্ড আমরাই এনে দিয়েছি, চ্যাম্পিয়ানস অফ দ্যা আর্থ এওয়ার্ড আমরাই এনে দিয়েছি অর্থাৎ দেশের চিকিৎসক, কৃষিবিদ পেশাজীবীদের অবমুল্যায়ন করার যে কোন অপচেষ্টা কে আমরা প্রতিহত করবো।
মাননীয় সাংসদ এবং মিডিয়ার ভাইয়েরা এ সকল বিষয় জননেত্রী শেখ হাসিনা এবং জনগণকে অবহিত করুন, তাঁর দৃষ্টিতে আনুন কিভাবে আমাদের বঞ্চিত করা হচ্ছে। আমরাতো চাইনা কোন কর্মবিরতিতে যেতে, আমরাতো আমলাদের মত ফাইল গার্ড দেই না। আমি আজকে যদি কোন রোগীকে না দেখি সে রোগীটা পর মুহূর্তে মৃত্যু মুখে পতিত হওয়া সম্ভব, আমিতো আমার দায়িত্বকে অবহেলা করতে পারবো না। কিন্তু আমাদেরকে দয়া করে বাধ্য করবেন না এমন কোন কর্মসুচি দিতে। আপনারা আমাদের সদাশয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টিগোচর করুন।
১২
কৃষিবিদ খাইরুল আলম প্রিন্স, বিসিএস কৃষি এ্যাসোসিয়েশন। মূল বক্তব্যঃ
নবঘোষিত পে স্কেলে আমাদের সকলের বেতন দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। বিভিন্ন ক্যাডার এ্যাসোসিয়েশন এবং সমিতির পক্ষ থেকে যখন জননেত্রী শেখ হাসিনার চারপাশ ফুলের মালায় ভরে যাবার কথা তখন এমন একটি পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে কুচক্রী মহল যে কোন সংগঠনের পক্ষ থেকেও তাঁকে অভিনন্দন জানানো হয়নি। এটি একটি গভীর ষড়যন্ত্র।
অংকের হিসেবে আমরা কোন অলীক রাজপ্রাসাদের স্বপ্ন দেখতে চাই না, আমাদের যে কুড়েঘরটি আছে এই কুড়েঘরটি আমরা রক্ষা করতে চাই। আমাদের কোন অলীক রাজপ্রাসাদের দরকার নেই, টাইম স্কেল এবং সিলেকশন গ্রেড পুনর্বহাল করা হোক।
উপজেলা পরিষদের ক্ষমতায়নের নামে যে পরিপত্র জারী করা হয়েছে এর প্রতিটি বাক্যে উপজেলা পরিষদের ক্ষমতায়নের নামে আসলে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে ক্ষমতায়ন করা হয়েছে। এবং উপজেলায় হস্তান্তরিত ১৭ টি ডিপার্টমেন্টের মাঝে বাকি ১৬টি ডিপার্টমেন্টের উন্নয়নের যে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে সেখানে ক্ষমতাহীন দায়িত্ব দেয়া হয়েছে, ক্ষমতাহীন দায়িত্ব এবং দায়িত্বহীন ক্ষমতা অত্যন্ত ভয়ংকর। উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে দায়িত্বহীনভাবে এবসলিউট ক্ষমতা দেয়া হয়েছে এবং অন্যান্য বিভাগকে ক্ষ্মতাহীন দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। কাজেই অনতিবিলম্বে এই পরিপত্র প্রত্যাহার করতে হবে।
১৩
প্রকৌশলী মনির হোসেন পাঠান, সভাপতি এ্যাসোসিয়েশন অফ রোডস এন্ড হাইওয়ে। এর মূল বক্তব্যঃ
প্রশাসন ক্যাডার থেকে বেতন বৈষম্যের যে বিভেদ সৃষ্টি করা হয়েছে, উপজেলা প্রশাসনের যে অচলাবস্থা সৃষ্টি করা হয়েছে সেটা আমাদেরকে একত্রিত করার সুযোগ। আমাদের পক্ষে যে যুক্তিগুলো আছে এবং তাঁদের পক্ষে যে যুক্তিগুলো আছে তা যদি কোন নিরপেক্ষ কমিটির মাধ্যমে আলোচনায় অংশ নেয়া যায় তবে আমরা আন্দোলনের পক্ষে হাজারো যুক্তি দেখাতে পারবো কিন্তু তাঁদের এই কর্মকাণ্ডের পক্ষে একটি যুক্তিও উপস্থাপন করতে পারবে না সরকারের কাছে।
আমরা জিডিপি বাস্তবায়ন করি, আমরা মূল শক্তি, আমরাই সরকারের ভিশন ২০২১ এর দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু আপনারা কি করেন? এসআরও জারী করেন। আপনারা ২৬ ক্যাডারের নেতৃবৃন্দকে আপনাদের সাথে আনতে চেষ্টা করেছেন কিন্তু পারেন নি। আমাদের সাথে আছে সকলে, আপনাদের আছে বায়বীয় শক্তি আর এসআরও। এসআরও জারী করার ক্ষমতাবলে আপনারাই বিচারক, আপনারাই দাবিদার। এ জন্য আমরা আমাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বহুবার বঞ্চিত হয়েছি।
আমাদের পিছিয়ে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই। আজকে মঞ্চে যারা আছেন তাঁরা প্রত্যেকেই সরকারের সহায়ক শক্তি। আজকের এই সমাবেশ থেকে একদিনের মধ্যেই তাঁরা সরকারের কাছে বলতে পারেন যে দেখুন এই আন্দোলনের পক্ষে হাজারো হাজারো কর্মকর্তা একত্রিত হয়েছে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি তাঁদের কথা একটু শুনুন। নেতৃবৃন্দ আজকে আপনাদের হাত শক্তিশালী করে দিলাম।
১৪
কৃষিবিদ তাসাদ্দেক আহমেদ, বিসিএস সমন্বয় পরিষদের সহসভাপতি। মূল বক্তব্যঃ
আজকে উত্থাপিত দাবীগুলোর সাথে কৃত্য পেশাভিত্তিক প্রশাসন ব্যবস্থা কায়েম না হওয়া পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরবো না। গত ১৫ জুলাইয়ের পর থেকে পর পর ৩টি আদেশ জারী করা হয়েছে, তিনটি আদেশেই আমাদেরকে ব্যাপক ভাবে বৈষম্যের সৃষ্টি করা হয়েছে।
যেখানে সচিবালয়ে সকল পদের বিপরীতে অতিরিক্ত পদায়ন অনেক বেশি তবুও ইন সিটু পদ্ধতির মাধ্যম অবৈধ ভাবে এডমিন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের পদোন্নতি হচ্ছে। অথচ এই ইন সিটো পদ্ধতিতে পদোন্নতি হওয়ার কথা শুধু মাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং গবেষকদের। কিন্তু এই ইন সিটু পদ্ধতির সুবিধা নিচ্ছে প্রশাসনের কর্মকর্তারা। তাঁরা যেহেতু পদোন্নতি পাচ্ছে তাই ইচ্ছে করে সিলেকশন গ্রেড এবং টাইম স্কেল বাতিল করেছে যাতে অন্যান্য ক্যাডাররা পদোন্নতি না পায়।
১৫ সেপ্টেম্বর আরেকটি আদেশ জারী করেছে-বিভাগীয় পর্যায়ে কোন সমন্বয় কমিটি এর আগে ছিল না। এর ফলে বিভাগীয় পর্যায়ের সকল কর্মকর্তা, জেলা পর্যায়ের প্রকল্পের বিভিন্ন কর্মকর্তাদের নিয়ে আলাদা মিটিং করা হচ্ছে কেন্দ্রের বাইরে। আগামীকাল সিলেটে বিভাগীয় কমিশনারের সভাপতিত্বে মিটিং অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আমি মনে করি এই সভাগুলো বাতিল করতে হবে।
১৪ সেপ্টম্বর উপজেলা পরিষদকে ক্ষমতায়নের নামে ইউএনওকে সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী করা হয়েছে। আমরা এই সভা থেকে আশা করবো উপজেলা চেয়ারম্যান এবং জনপ্রতিবিধিরা আমাদের সাথে একাত্বতা ঘোষণা করে পত্রিকায় বিবৃতি দেবেন, মাননীয় সাংসদরাও আমাদের সাথে একমত পোষণ করবেন।
১৫
অধ্যাপক নাসরিন বেগম, বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির সভাপতি। মূল বক্তব্যঃ
ডঃ ফরাসউদ্দীন পে স্কেল সম্পর্কে এক সাক্ষাতকারে বলেন, টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড বাদ দেয়ার কথা আমি বলিনি, আমি বলেছি এটা পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখা হোক, সময় নিয়ে এটা বাতিলের ব্যবস্থা পরে করা হোক। উনি বলছেন, সচিব কমিটি কে? আমারো এই প্রশ্ন বাংলাদেশের আইনে এই সচিব কমিটি বলে কিছু আছে কিনা? উনার বক্তব্যে এটাও স্পষ্ট ছিল, কোন পে স্কেল সচিব কমিটি রিভিউ করতে পারে না। সেটা করবে মন্ত্রী পরিষদ কমিটি, তারাই এটা করার ক্ষমতা রাখে। কিন্তু আমরা দেখলাম মন্ত্রী পরিষদ এটাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে পে স্কেলে সিলেকশন গ্রেড এবং টাইম স্কেল বাতিল করলো। কত বড় ঔদ্ধত্য তাঁদের হতে পারে। যেহেতু বিভিন্ন ক্যাডারকে এক নম্বর গ্রেডে নিয়ে যাওয়া হয়েছে সেহেতু তাঁরা তাঁদের আরো উপরে তোলার জন্য সুপার গ্রেড তৈরি করে ফেললো। তাঁরা মনে করে সুপার গ্রেড তৈরি করে তাঁরা একেক জন সুপার ম্যান হয়ে গেছে। আর আমরা যারা অন্য ক্যাডারে চাকরি করি তারা সবাই আম আদমি। কিন্তু তাঁরা জানেনা এই আম আদমির শক্তি। এই সুপার পাওয়ার সুপার ম্যানদের ধ্বংস করে দিতে পারে।
আমরা শিক্ষা ক্যাডার এই আন্দোলনের সবচেয়ে বড় শক্তি দেশের সবচেয়ে বড় ক্যাডার প্রায় সাড়ে ১৫ হাজার সদস্যের ক্যাডার। আমাদের এই আন্দোলন পথ হারাবেনা, আজকে মঞ্চে উপবিষ্ট নেতৃবৃন্দ আন্দোলনে সুনির্দিষ্ট দিক নির্দেশনা দিবেন যেন আমাদের এই আন্দোলন পথ না হারায়।
১৬
কৃষিবিদ হামিদুর রহমান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক। মূল বক্তব্যঃ
চক্রান্তকারীরা আমাদের জননেত্রী শেখ হাসিনাকে জীবিত অবস্থায় পরাভূত করতে এরকম পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। আমরা সিস্টেমের বিরুদ্ধে নই তবে কেউ যেন অন্যায়ভাবে বঞ্চিত না হয় তাই অত্যন্ত নিয়মতান্ত্রিক এবং ধারাবাহিকভাবে এ আন্দোলন পরিচালিত হচ্ছে।
১৭
প্রকৌশলী জনাব নুরুজ্জামান, বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদ। মূল বক্তব্যঃ
১৯৭৮ সালে এই আন্দোলন শুরু হয়েছিল, আমার সৌভাগ্য সে সময় থেকেই এই আন্দোলনে জড়িত থাকার, তখন সবে মাত্র জয়েন করেছিলাম। আর এখন চাকরি শেষ হয়েছে, এখনো সেই একই আন্দোলন করছি। আমরা জনগণের টাকায় চাকরি করি, কিন্তু সব চাকরের উপর কর্তৃত্ব কার থাকবে? সেটা থাকবে জনপ্রতিনিধিদের।
১৮
ডাঃ হাবিবে মিল্লাত, সংসদ সদস্য। মূল বক্তব্যঃ
বাংলাদেশের জনপ্রতিনিধিরা জনগণের পক্ষে থাকে, যৌক্তিক এবং ন্যায় দাবির পক্ষে থাকে, সেই জন্যে একজন সংসদ সদস্য হিসেবে আজকে আপনাদের সাথে সংহতি জানাতে উপস্থিত হয়েছি। আপনারা জানেন জননেত্রী শেখ হাসিনা যে কোন যৌক্তিক দাবি আনন্দের সাথে মেনে নেন এবং যদি তাঁকে বোঝানো যায় তাহলে যে কোন যৌক্তিক আন্দোলন সফল হবে।
১৯
সলিমুল্লাহ তালুকদার, মহাসচিব, বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি। মূল বক্তব্যঃ
আজকে আমলাতন্ত্রের যে দাপট তার মূল, ২০০৩ সালে শহীদুল আলম শিক্ষা সচিব থাকা কালে তাঁর একটা নীল নক্সা ছিল। তখন বিভিন্ন ক্যাডার, অধিদপ্তর, প্রকল্পের শীর্ষ পদ্গুলো দখল করা। শিক্ষা ক্যাডারে আমরা তীব্র আন্দোলন করেছিলাম ২০০৩ সালে। আমি মনে করি শহীদুল আলমের প্রেতাত্মা আবার আমলাতন্ত্রের উপর ভর করেছে।
ভান্ডারিয়ায় একজন সিনিয়র শিক্ষককে একজন এসি ল্যান্ড পা ধরে মাফ চাইতে বাধ্য করেছিল। আমরা প্রতিবাদ করেছিলাম, শিক্ষা সচিবের কাছে, জনপ্রশাসন সচিবের কাছে, মন্ত্রীর কাছে অভিযোগ করেছিলাম। উনারা বলেছিলেন তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবেন, আমরা বলেছিলাম তাৎক্ষনিকভাবে ব্যবস্থা নেয়া হোক। তাঁরা সেটা করেন নাই বরং তাঁকে বদলি করা হয়েছে, আগের চেয়ে ভালো যায়গায় পোস্টিং দিয়েছে। আমরা বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের পক্ষ থেকে ভান্ডারিয়া গিয়েছিলাম ৫০০ ও অধিক শিক্ষক। আমাদেরকে হুমকি দেয়া হয়েছিল এরেস্ট করা হবে। আমরা তাঁদের ভ্রুকুটি উপেক্ষা করে কর্মসুচি দিয়েছিলাম, হাইকোর্টে মামলা করে তাঁকে তিনদিন আদালতে স্বশরীরে উপস্থিত হতে বাধ্য করেছিলাম। আমরা পিরোজপুর জজকোটেও মামলা করেছি যেটা এখনো চলছে।
সব সময় সকল পে স্কেলে নতুন সুযোগ সুবিধা দেয়া কিন্তু নতুন পে স্কেলে উল্টোটা ঘটেছে, শিক্ষা ক্যাডারে পদ অবনমন করা হয়েছে। ঢাকা কলেজ, ইডেন কলেজের প্রিন্সিপালরা ছিলেন তৃতীয় গ্রেডে কিন্তু এখন চতুর্থ গ্রেডে স্থান দেয়া হয়েছে। তাই এ ধরনের আমলাতন্ত্র আমাদের মানার কোন সুযোগ নাই। সকল দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরে যাবো না।
আমাদের সরকার একটি স্থিতিশীল সরকার, তাঁরা চায়না বাংলাদেশে কোন স্থিতিশীল সরকার থাকুক।
২০
শম গোলাম কিবরিয়া, বিসিএস সমন্বয় কমিটির সদস্য, মহাসচিব, বিসিএস তথ্য। মূল বক্তব্যঃ
কৃত্য পেশা ভিত্তিক প্রশাসন চাই-এই একটি দাবি বাস্তবায়ন হলে আর কোন দাবির প্রয়োজন পরে না। এছাড়া আর দুটি বিষয় সামনে এসেছে টাইম স্কেল এবং সিলেকশন গ্রেড পুনর্বহাল, আরেকটি উপজেলা প্রশাসনে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের উপর নেতৃত্ব দেয়া হয়েছে। নতুন বেতন স্কেলে যে ক্রমপুঞ্জিভূত বেতন বৃদ্ধির কথা বলা হয়েছে সেটা এক ধরনের ভেক। এই বৈষম্যের বেতন স্কেল। সর্বোচ্চ বেতন বৈষম্য আগে যেখানে ৬ হাজার ছিল এখন সেটা ৮ হাজার ৫০০ হয়ে যাবে।
সরকারের বিপুল সংখ্যক পদ রয়েছে যেগুলো ব্লক পদ। এসকল পদের কর্মকর্তারা শুধু প্রত্যাশা করেন “টাইম স্কেল”। সুতরাং এই আমলা তন্ত্র সরকারকে বিব্রত করতবার জন্য সরকারকে অস্থিতিশীল করার জন্য এ পে স্কেল করা হয়েছে। একই সঙ্গে যখন আমরা পে স্কেল নিয়ে কথা বার্তা বলছিলাম তখন নতুন করে একটি জঞ্জাল আবির্ভূত হলো সেটি হলো উপজেলা প্রশাসন ব্যবস্থাপনা। আমরা এ দুটি অবিলম্বে বাতিল চাই। পাশাপাশি কৃত্য পেশা ভিত্তিক প্রশাসন চাই। ৪৪ বছরের জঞ্জাল সরানোর জন্য আমাদের ধীর স্থির এবং অবিচল থেকে আরো কঠোর আন্দোলনের কর্মসুচি নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। এই কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচি কেন্দ্র থেকে দেয়া হবে।
২১
সদস্য প্রকৃচি স্টিয়ারিং কমিটি, সাধারণ সম্পাদক, ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউটের পক্ষ থেকে প্রকৌশলি মোঃ আব্দুস সবুর ৫০ হাজার প্রকৌশলী সমাজের পক্ষ থেকে কক্সবাজার থেকে পঞ্চগড়, সুনামঞ্জ থেকে সাতক্ষিরা থেকে আগত সকলকে স্বাগত এবং ধন্যবাদ জানান।
২২
কৃষিবিদ ইন্সটিটিউটের মহাসচিব কৃষিবিদ মোবারক আলীর মূল বক্তব্যঃ
আমলারা প্রধানমন্ত্রীর কাছে এই মুহূর্তে মেসেজ দিচ্ছে যে, আমরা সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছি। আপনারা যারা মিডিয়াকর্মী আছেন আপনারা আমাদের সত্য কথাটা তুলে ধরুন, আমরা কিন্তু সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছি না। এই মঞ্চে যারা আছেন তাঁরা সবাই সরকারের পক্ষে, কৃষিবিদ ইন্সটিটিউশন, বাংলাদেশ মেডিকেল এ্যাসোসিয়েশন, ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউট সহ যতগুলো প্রতিষ্ঠানের সভাপতি-মহাসচিব এখানে উপস্থিত আছেন সবাই সরকারের পক্ষের লোক। এক কথায় এটা সরকার বিরোধী আন্দোলন নয়।
২৩
অধ্যাপক ডাঃ ইকবাল আর্সলান, বিএমএ মহাসচিব। মূল বক্তব্যঃ
১৯৭৮ সালে প্রকৃচির তৎকালীন নেতৃবৃন্দ সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আমাদের অধিকার আদায় করেছিলেন। আমি প্রশাসনের লোকদের সতর্ক করে দিতে চাই আপনারা জেনেছেন, ইতিমধ্যে তাঁরা আজকের এই সমাবেশকে যাতে আমরা সফল করতে না পারি, মাঠ পর্যায়ে বিভিন্ন কর্মসুচি তাঁরা গ্রহণ করেছে। প্রশাসনের লোক দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ভিসিট বা কর্মসুচি এই সময়ে দিয়ে আমাদের কর্মসুচি প্রতিরোধ করতে চেষ্টা করেছে। কিন্তু ওরা জানেনা যে সামরিক সরকারের সময়েও আমরা আমাদের অধিকার আদায় করে নিয়েছি সংগ্রামের মধ্য দিয়ে। প্রশাসনের মধ্যে লুকায়িত এ দেশে উন্নয়নের বিরোধী যে শক্তি তারাই কুপরামর্শ দিয়ে এই অবস্থান সৃষ্টি করেছে। সরকারি চাকরিবিধি অনুযায়ী যে কমিশনের অস্তিত্ব নাই সেই কমিশন কিভাবে রিপোর্ট রিভিউ করে? কোন অধিকারে? কে তাঁদের সে অধিকার দিয়েছে?
আজকের সমাবেশে উপস্থিত জনপ্রতিনিধি ডাঃ হাবীবে মিল্লাত মুন্না, এবং আজকের সমাবেশের সভাপতি আপনারা লক্ষ্য করুন, আজকে তাঁরা জনপ্রতিনিধিদের ওয়ারেন্ট অফ প্রিসিডেন্স কে খর্ব করেছে, আপনারা যদি সতর্ক না হন আমি নিশ্চিত এরপরে তাঁরা বলবে, সচিবরা মন্ত্রীর উপর ওয়ারেন্ট অফ প্রিসিডেন্স চাইবে। সে জন্য আপনাদেরকে আমরা অনুরোধ করবো যারা আপনারা জনপ্রতিনিধি আছেন তাঁরা আপনাদের পার্লামেন্টে বা যে সমস্ত ফোরাম আছে সেখানে গিয়ে এ বিষয়গুলো উত্থাপন করেন। এই মনস্টার এই ফ্র্যাঙ্কেন্সটাইনকে আপনারা এখনি অবদমিত করেন এখনি প্রতিহত করেন। না হলে আজকের বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা, জননেত্রী শেখ হাসিনা যে লক্ষ্য নিয়ে ত্যাগ তিতিক্ষা নিয়ে এ দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন সে অভীষ্ট লক্ষ্যে এ দেশ এ দেশের মানুষ পৌঁছাতে পারবে না।
যে কোন আন্দোলনের সফলতার মূল বিষয় হচ্ছে এর ডিসিপ্লিন। এখানে আমরা একটা চেইন ওফ কমান্ড তৈরি করেছি এর অধীনে আমরা আন্দোলন করবো, কোন বিচ্ছিন্নভাবে আন্দোলন করবো না। যে কোন আন্দোলন স্বল্প মেয়াদী, মধ্যমেয়াদী, দীর্ঘমেয়াদী হয়। সেই শিক্ষক নেতৃর মত বলবো এই ছয় দফার প্রথম দফা হলে আর বাকি পাঁচ দফার দরকার নেই, বঙ্গবন্ধুর ছয় দফার মত ছয় দফা হলেই বাংলাদেশ স্বাধীন হয়ে যেত আর এক দফার দরকার ছিলো না, এটা তাঁর উলটো এক দফা হলেই পাঁচ দফা ছয় দফা হয়ে যাই।
তাই আমি বলবো আমাদের বার্নিং ইস্যু আমাদের যতদ্রুত সম্ভব পে স্কেল এবং জনপ্রশাসন থেকে যে আদেশ জারী করা হয়েছে এ দুটো বিষয় যতদ্রুত সম্ভব বাতিল করতে কাজ করতে হবে। দ্বিতীয়ত, দীর্ঘমেয়াদে আন্দোলনের জন্য আজকে তাঁরা আমাদের প্ল্যাটফর্ম তৈরী করার সুযোগ করে দিয়েছে। আপনাদেরকে আমরা অঙ্গীকার করছি এটাকে আমরা স্থায়ী রূপ দেব, আমরা গঠনতন্ত্রে একে নিয়ে আসবো, স্টিয়ারিং কমিটি থাকবে, লাগাতারভাবে আমরা আমাদের ন্যায্য অধিকারের জন্য লড়াই করে যাব, এই হোক আমাদের অঙ্গীকার।
২৪
প্রকৌশলী কবির আহমেদ ভুইঞা, প্রেসিডেন্ট, ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউট। মূল বক্তব্যঃ
পে স্কেলের বিষয় নিয়ে আমরা আড়াই মাস আগে প্রকৃচি-বিসিএস সমন্বয় কমিটি প্রায় আড়াই মাস আগে আমাদের কার্যক্রম শুরু করি। আমরা সরকারের কাছে প্রতিবাদ লিপি দেই, অর্থমন্ত্রীকে আহবান জানাই আলোচনার জন্য। ১৮ আগস্ট উনি আমাদেরকে সময় দিয়েছিলেন সেখানে আমরা দু ঘন্টা আলোচনা করি। তাঁকে আমরা বোঝাতে সক্ষম হয়েছি, এই পে স্কেলে একটি মাত্র ক্যাডার বেনিফিটেড হবে সেটা হলো এডমিন ক্যাডার। উনি বললেন কিভাবে? আমরা বললাম, অন্যান্য ক্যাডারে একজন কর্মকর্তার পদোন্নতি হতে বিশ বছর আঠারো বছর লাগে অথচ এডমিন ক্যাডারে একই সময়ে তিনটা প্রমোশন পায়। যাঁদের পদের দরকার নাই তাঁরা পদোন্নতি পাচ্ছে, তাইলে টাইম স্কেল ও তাঁদের দরকার নাই, টাইম স্কেল অন্যদের দরকার। আমরা দশজন ছিলাম, দশজনের প্রত্যেক ক্যাডারকে উনি জিজ্ঞাসা করে একই চিত্র দেখেছেন। তখন তিনি আমাদেরকে ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সামনেই বলেছেন যে তিনি অতটুকু চিন্তা করেন নাই। আমরা যা বলেছি তা অত্যন্ত যুক্তিসংগত এবং পর্যালোচনার দাবি রাখে। ১৯ আগস্ট সমস্ত পত্রিকায় এটি এসেছে যে এই বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করা হচ্ছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় এই যে, পরবর্তী দেখা গেল অর্থমন্ত্রী যিনি একজন জাদরেল সিএসপি তারপরেও তিনি কিভাবে আমাদের সাথে একমত হয়েও অপরিবর্তিতভাবে উপস্থাপন করলেন।
তারপর আসলো আরেকটি বার্নিং ইস্যু উপজেলা পরিষদের বিষয়টা। পহেলা অক্টোবরে জারী করা হয়েছে যেখানে কখনো বিভাগীয় পর্যায়ে কোন সমন্বয় কমিটি ছিলো না অতএব আমরা বিভাগীয় পর্যায়ে জারীকৃত এই আদেশের বিরুদ্ধেও সংগ্রাম করবো। সবচেয়ে দুঃখের বিষয় এডমিন ক্যাডার সৃষ্টি করা হয়েছিল ব্রিটিশ আমলে জমিজমার খাজনা আদায় করার জন্য। তাঁদের আর কোন কাজ ছিলো না, কালেক্টকর হিসেবে কাজ করার পর তাদেরকে ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার দেয়া হলো। তাঁরা আজকে সমস্ত উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের সুপারভিশন করে যেখানে তাঁদের ভূমি মন্ত্রণালয় আড়াইশ বছর আগে যে কারণে সৃষ্টি করা হয়েছিল এটা আজকে বাংলাদেশের সব চেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত, যারা তাঁদের একটা ডিপার্টমেন্টকে ভালো করতে পারে নাই, সামলাতে পারে নাই তাঁরা কিভাবে বাংলাদেশের সব কিছুর তদারকি করবে।
আজকে ফেসবুকে বিসিএস এডমিন ক্যাডারের পক্ষ থেকে একটা পোস্ট দেখলাম, ইউএনও কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিনিধি, তো বাংলাদেশে কয়টা প্রদেশ আছে যে বাকিরা প্রাদেশিক সরকারের প্রতিনিধি হবে? এই ধরনের বিভ্রান্ত কথার অবশ্যই আপনারা উত্তর দিবেন।
আন্দোলন কিন্তু একদিন দু দিন, একমাস দু মাসে শেষ হবে না, দীর্ঘস্থায়ী একটা আন্দোলন করতে হবে। অতএব আমাদের আন্দোলনের স্টেপগুলো ধীরে ধীরে যেতে হবে, আমাদের অস্থির হলে চলবে না। তবে আপনারা যদি উপজেলায়, জেলায় সমস্ত কর্মকর্তা ইস্পাত কঠিন ঐক্য সৃষ্টি করতে পারেন তাহলেই এই আন্দোলন খুব বেশিদিন অপেক্ষা করতে হবে না। আপনারা নিজ নিজ উপজেলা জেলায় ভীষণ ভাবে সংগঠিত হন তাহলেই আমরা উদ্দীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারব। আমি আপনাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হবার জন্য আহবান জানাচ্ছি।
২৫
অধ্যাপক ডাঃ মাহমুদ হাসান, সভাপতি, বিএমএ। মূল বক্তব্যঃ
জনগণের কাছে সুস্পষ্ট বক্তব্য রাখতে হবে যে এই আন্দোলন সরকারের বিরুদ্ধে নয় বরং যারা সরকারকে দিয়ে আমাদের উপর অন্যায় চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে, আমাদের প্রতিবাদ সেই সমস্ত লোকের বিরুদ্ধে যারা সরকারকে দিয়ে এসব কাজ করাচ্ছে। জনগণকে যদি আমরা সাথে নিতে না পারি তবে এই আন্দোলনে সফলতা পাওয়া কঠিন হবে, জনগণকে যদি আমাদের বুঝাতে হবে আমরা বেতন বৃদ্ধির জন্য টাকা পয়সা পাওয়ার জন্য এ আন্দোলন করছি না। আমরা যে বিদ্যমান সুযোগ সুবিধা ছিল সেটা বাড়ানোতো দূরের কথা সেটা উইথ ড্র করা হয়েছে, তুলে নেয়া হয়েছে আমরা তারই প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
২৬
কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম এমপি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক,
প্রকৃচি-বিসিএস সমন্বয় কমিটির কমিটির আহ্বায়ক, কৃষিবিদ ইনস্টটিউটের সভাপতি, সমাবেশের সভাপতির বক্তব্যে আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন। মূল বক্তব্যঃ
আজকে আমরা কেহানে আন্দোলনের জন্য নয় আমাদের অধিকারের জন্য সমবেত হয়েছি, আমরা আজকে সমবেত হয়েছি আমাদের মর্যাদার জন্য। আমরা আমাদের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করতে চাই। আমাদের আন্দোলন অবশ্যই অবশ্যই জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে কোন ক্রমেই নয়, আমাদের আন্দোলন ঐ কুচক্রী মহলের বিরুদ্ধে যারা একটি গণতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে আমাদের পেশাজীবীদের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়েছে।
সকল কিছু বিবেচনায় নিয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকারের কাছে আমাদের দাবিগুলো আপনাদের সামনে তুলে ধরছিঃ
১ মন্ত্রনালয়ের সহকারী সচিব থেকে সিনিয়র সচিব সকল পর্যায়ের কর্মকর্তা সংশ্লিষ্ট ক্যাডারের মধ্য থেকে কর্মকর্তা পদায়ন করতে হবে
২ বেতন স্কেলে টাইম স্কেল এবং সিলেকশন গ্রেড পুনর্বহাল করতে হবে
৩ উপজেলা পরিষদে ইউএনওর কর্তৃত্ব বাতিল করে জনপ্রতিনিধিদের অর্থাৎ উপজেলা চেয়ারম্যানের ক্ষমতায়ন করতে হবে
৪ আন্তঃ ক্যাডার বৈষম্য নিরসন করতে হবে
৫ একই সাথে বঙ্গভবন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, মন্ত্রীপরিষদ বিভাগ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে সকল ক্যাডারের প্রতিনিধিত্ব থাকতে হবে
৬ নিজস্ব ক্যাডার এবং ফাংশনাল সার্ভিস বহির্ভূত সকল ধরনের প্রেষণ বাতিল করতে হবে
৭ সকল ক্যাডার এবং ফাংশনাল সার্ভিসে পদোন্নতির সমান সুযোগ প্রদান করতে হবে
এ সকল দাবি আদায়ে প্রকৃচি-বিসিএস সমন্বয় কমিটি কর্তৃক সর্বাত্মক আন্দোলন চালিয়ে যাবার লক্ষ্যে আন্দোলনের অংশ হিসেবে নিম্ন লিখিত কর্মসূচি ঘোষনা করছি।
কর্মসূচিঃ
১ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সমস্যার সমাধানে তার হস্তক্ষেপ কামনা,
২ ২৮ অক্টোবর দেশের সকল উপজেলা, জেলা, বিভাগ ও কেন্দ্রীয়ভাবে দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হবে,
৩ বেতনভাতা উত্তোলনের ক্ষেত্রে উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের পূর্বের নিয়ম অনুসরণ করবেন,
৪ ৫ নভেম্বর উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে প্রতিবাদ সমাবেশ
৫ নভেম্বরের মধ্যে উপজেলা, জেলা, বিভাগীয় ও কেন্দ্রীয় পর্যায়ে জনপ্রতিনিধি ও নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে মতবিনিময় করা হবে
৬ ৮ নভেম্বরের মধ্যে দাবি মানা না হলে পরবর্তীতে আরো কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে
কেন্দ্রীয়ভাবে ঘোষিত এই কর্মসূচি উপজেলা, জেলা, বিভাগে সকল কর্মকর্তাদের পালন করতে অনুরোধ করা হলো।
শ্রুতি লিখন এবং সংক্ষেপণঃ ডাঃ মোহিব নীরব, বিসিএস (স্বাস্থ্য)
বাংলাদেশের সকল উপজেলায়, জেলা, বিভাগে, প্রতিটি ক্যাডার এবং ফাংশনাল সার্ভিস, নন ক্যাডার কর্মকর্তাদের চলমান আন্দোলনকে বেগমান করতে গত ২৪ তারিখের সমাবেশের সকল পেশাজীবী প্রতিনিধি এবং নেতৃবৃন্দের মূল বক্তব্য সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে প্ল্যাটফর্মের পক্ষ থেকে সকলের মূল বক্তব্যের পিডিএফ করা হলো। সকলকে প্রিন্ট করতে অনুরোধ করা হচ্ছে।পিডিএফ লিঙ্কঃ
Thanks for the details report. Much appreciated. Cheers!