অনেকদিন ধরেই ক্যারি অন সিস্টেম এবং এবছর থেকে চালু হওয়া মেডিকেলের নতুন কারিকুলাম নিয়ে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে । অনেক কাঠ-খড় পুড়িয়ে দলিল হাতে পেয়েছি। কিন্তু কপি দেওয়া হয় নি! সবার সুবিধার্থে নিয়মগুলো বলছি। এগুলোর উৎস MBBS Curriculum 2012 (September) যা বর্তমান সেশন তথা ২০১৩-১৪ এর জন্য প্রযোজ্যঃ
১। ১ম বৃত্তিমূলক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবার আগে কোন ক্যারি অন সিস্টেম নেই।
২। ১ম বৃত্তিমূলক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবার পর শিক্ষার্থীরা সব পূর্বশর্ত পালন করা সাপেক্ষে ২য় বৃত্তিমূলক পরীক্ষায় বসতে পারবে। এর মাঝের সময়ে শিক্ষার্থীরা ওয়ার্ডের প্লেসমেন্ট ও ক্লাসে অ্যাটেন্ড করতে পারবে।
৩। ৩য় বৃত্তিমূলক পরীক্ষায় বসার জন্য ২য় বৃত্তিমূলক পরীক্ষার সব বিষয়ে উত্তীর্ণ হতে হবে এবং পরীক্ষায় বসার অন্যান্য পূর্বশর্ত পালন করতে হবে। অন্তর্বর্তী সময়ে শিক্ষার্থীরা ওয়ার্ড প্লেসমেন্ট, ক্লাস এবং ৪র্থ ফেজের সব ক্লাসই অ্যাটেন্ড করতে পারবে।
৪। ৪র্থ বা চূড়ান্ত বৃত্তিমূলক পরীক্ষায় বসার জন্য একই ভাবে ৩য় বৃত্তিমূলক পরীক্ষার সবগুলো বিষয়ে উত্তীর্ণ হতে হবে এবং উপস্থিতিসহ অন্যান্য শর্ত পূরণ করতে হবে। অন্তর্বর্তীকালীন সময়ে শিক্ষার্থীরা সব ওয়ার্ড ও ক্লাসে অ্যাটেন্ড করতে পারবে।
কাজেই আতঙ্কের কিছুই নেই। অর্থাৎ আগের কারিকুলামে (২০০২) যে নিয়মে ক্যারি অন ছিল, এখনো তাই আছে। আমাদের সময় ফার্স্ট প্রফে ২ বার ফেল করলে পরের বছরের সাথে ক্লাস করার নিয়ম ছিল। এখনো তাই আছে। এর পরের প্রফগুলোতে যদি সাপ্লি থাকেও তাহলে ক্যারি অন করা যাবে যদি উপস্থিতি ঠিক থাকে এবং রেগুলার ব্যাচের প্রফের আগে পূর্ববর্তী প্রফের সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষাগুলো ক্লিয়ার হয়ে যায়।
এবার আসি ছুটির প্রসঙ্গে।
ফেজ ১ এ মোট PL(Preparatory Leave) ৩ টার্মের আগে ৭ দিন করে মোট ২১ দিন। প্রথম ও দ্বিতীয় টার্মের পর ৭ দিন করে মোট ১৪ দিন ছুটি (Post-term leave). এই পোস্ট টার্ম লিভের মধ্যে কলেজ চাইলে সাংস্কৃতিক সপ্তাহ বা অন্যান্য কো-কারিকুলার কার্যক্রম চালাতে পারে। PL এর ব্যাখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে। এই কারিকুলাম কমিটির একজন মুখ্য কর্তা মত দিয়েছেন যে, প্রিপারেটরি লিভ এর সময় ছাত্রছাত্রীদের কলেজে আসতে হবে এবং গ্রুপ স্টাডি করে সমস্যা হলে শিক্ষকদের সহায়তা নিতে হবে, কিন্তু পার্সেন্টেজ দেয়া হবে না। যদিও কারিকুলামে এমন কোন কথা বলা নেই। PL কনসেপ্টটি বুয়েট, কুয়েট, চুয়েট, রুয়েট ইত্যাদি প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে বহুল প্রচলিত। সেখানে পি,এল বলতে ছুটিই বোঝায় এবং সেই ছুটিতে শিক্ষার্থী প্রস্তুতি নিল না কী করল- সেটা দেখা কোন পরিণত ও প্রাপ্তবয়স্ক শিক্ষা-ব্যবস্থার লক্ষণ নয়। তাছাড়া এসময় কলেজে আসতে হলে যানজট ও অন্যান্য কারণে সময় নষ্ট হবার বিষয়টা থেকেই যায়। এই বিষয়ে মেডিকেল কলেজগুলোতে কী হচ্ছে সেটা জানতে ছাত্র ও শিক্ষকদের সাহায্য চাই।
টার্মের পর আর অটো নেবার কোন প্রশ্নই নেই। কালচারাল উইক না হলে ন্যায্য ছুটি আছে ৭ দিন। এটা কর্তৃপক্ষের অনুমতি-সাপেক্ষ- এমন কোন কথা লেখা নেই। কাজেই এই ছুটি না দিলে সেটা কারিকুলামের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।থার্ড টার্মের পর ফার্স্ট প্রফের আগে ১ মাস পি,এল।
ফেজ ২ এ, কম্যুনিটি মেডিসিনে ১০ দিন ডে ভিজিট, ১০ দিন RFST এবং ১০ দিন শিক্ষা সফর। ফরম্যাটিভ এসেসমেন্টের আগে ১৫ দিন এবং সামেটিভ এসেসমেন্টের আগে ২০ দিনের প্রস্তুতিমূলক ছুটি।
এই হচ্ছে নতুন কারিকুলামের উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনগুলো। প্রফ এখন ৪টি। এটা নতুন কিছু নয়। ৭০ এবং ৮০র দশকে এই নিয়মই প্রচলিত ছিল এবং এখনকার সব অধ্যাপক এই নিয়মেই বিকশিত হয়েছিলেন।
আগ্রহীরা পি,ডি,এফ ফাইলগুলো ডাউনলোড করতে পারেন এই লিঙ্ক থেকেঃ
http://bmdc.org.bd/mbbs-curriculum-update-2012/
লেখক ডাঃ নির্ঝর অলয়,
লেখাটি ফেসবুক গ্রুপ প্ল্যাটফর্মে প্রথম প্রকাশিত ।
কিন্তু প্রথম পয়েন্টটা কী মেডিকেল স্টুডেন্টদের জন্য ভাবনার বিষয় না-যতদূর বুঝতে পারছি ।
ভাবনার বিষয় অবশ্যই। কিন্তু এই সিস্টেমটা প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে। ২০০২-০৩ সাল থেকে বর্তমান কারিকুলামের ঠিক আগের কারিকুলামটি চালু হয়। বিগত কারিকুলামটি ২০০২ সালে প্রকাশিত হয়েছিল। ২০০২-০৩ থেকে ২০১২-১৩ সাল পর্যন্ত এই নিয়মই বহাল ছিল যে, প্রথম প্রফেশনাল পরীক্ষায় ২ বার অকৃতকার্য হলে পরবর্তী বছরের জুনিয়রদের সাথে ক্লাস করতে হবে। বর্তমান কারিকুলাম যেটা সেপ্টেম্বর, ২০১২ তে প্রকাশিত সেখানেও এরই ধারাবাহিকতা রাখা হয়েছে, নতুন কিছু হয়নি।