আজ বিএমএ আয়োজিত তরুন চিকিতসকদের মত বিনিময় সভা সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন হয়েছে বিএমএ অডিটরিয়ামে। সভার শুরুতেই বিএমএ প্রেসডেন্ট ডা: মোস্তফা জালাল মহিউদ্দীন বিএমএ এর সাম্প্রতিক কর্মকান্ড সম্পর্কে জানান। শিক্ষামন্ত্রীকে প্রক্টর বিষয়ে, স্বাস্থ্য ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রিকে হামলা বিষয়ে যাবতীয় তথ্য দেয়া হয়েছে জানানো হয়।
এছাড়া বিএমএ এ বিষয়ে মামলা করেছে সেটিও প্রশংসিত হয়। উক্ত সভায় কেন্দ্রীয় বিএমএ ইসি সদস্য ডা: Md Jabed এর আহ্বানে প্ল্যাটফর্মের পক্ষ থেকে ডা: মোহিব নীরব, ডাঃ মারুফুর রহমান অপু এবং ডা: তুনাজ্জিনা শেহরিন উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন আরেকজন প্ল্যাটফর্ম এডমিন এবং সেন্ট্রাল কাউন্সিলর ডা: আসিফ ।
প্ল্যাটফর্মের পক্ষ থেকে প্ল্যাটফর্ম পত্রিকায় প্রকাশিত এবং অন্যান্য উপায়ে সংগৃহীত চিকিতসকদের উপর বিভিন্ন সময়ে হামলার তথ্য এবং অন্যান্য দেশের আইনের তুলনামূলক বিশ্লেষন তুলে ধরেন ডা: মোহিব নীরব।
উপাত্ত গুলো মঞ্চে উপস্থিত সকলে বেশ মনোযোগের সাথে শোনেন, নোট নেন এবং বিএমএ মহাসচিব তথ্যগুলো পরে তাকে দেবার জন্য অনুরোধ করেন। যার কয়েকটি চুম্বক অংশ ছিলো-
এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুসারে ২০১২ সাল থেকে এ পর্যন্ত হামলার সংখ্যা ১৯৬। হামলার মূল কারন ভুল চিকিতসা নয় বরং আনুসাংগিক অন্যান্য কারন। চীনে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড এবং অস্ট্রেলিয়ায় ১৪ বছরের কারাদন্ড। নেপালে সরকারবাদী হয়ে মামলা করে।
প্ল্যাটফর্ম থেকে নিম্নোক্ত প্রস্তাবনা সমূহ দেয়া হয় যা অধিকাংশ তরুন পুনরায় তাদের বক্তব্যে পেশ করেন:
– র্যাপিড রেসপন্স টীম গঠন এবং একটি সার্বক্ষনিক হেল লাইন তৈরি করা ৯১১ এর মত যেন দেশের যেকোন প্রান্তে আক্রান্ত চিকিতসক ফোন করে সাথে সাথে সাহায্য পেতে পারে।
– লীগাল উইং তৈরি যেখান থেকে এডভোকেট নিজেই ভিকটিম কে ফোন দিয়ে এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে উপস্থিত হয়ে আইনী প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবেন।
– বিএমডিসিকে শক্তিশালী করা যেন ডাক্তার সংক্রান্ত কোন অভিযোগ সরাসরি আদালতে যা যেয়ে বিএমডিসির মাধ্যমে নিষ্পত্তি হয়
– অন্যান্য দেশের মত শক্ত হসপিটাল ভায়োলেন্স আইন করা
– ভিকটিম কে ক্ষতিপুরন প্রদানের ব্যবস্থা রাখা এবং তার শারিরীক ও মানসিক চিকিতসার সব রকম ব্যাবস্থা করা।
– চিকিতসকদের হাসপাতালের মাঝে প্রশাসনিক ক্ষমতা প্রদান (উপজেলার ক্ষেত্রে RMO, অন্য স্থানে সুপারিন্টেন্ডেন্ট বা পরিচালক), জরিমানা ও অন্যান্য শাস্তি প্রয়োগের ক্ষমতা প্রদান।
– অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং নিরাপত্তা প্রদান (পুলিশ সহ)
– মেডিকেল জার্নালিজম কে প্রতিষ্ঠিত করা যেন প্রতিটি পত্রিকায় একজন নূন্যতম গ্রাজুয়েট চিকিতসক স্বাস্থ্য বিষয়ক খবরগুলো যাচাই বাছাই করে দেন।
এছাড়াও অন্য যেসব দাবী উঠে আসে সেগুলো হলো:
– রোগীদের ক্ষুব্ধ হবার গবেষণাভিত্তিক কারণ খুজে বের করে সে অনুসারে আত্নশুদ্ধির কাজ করা।
– হাসপাতালে বহিরাগতদের প্রবেশ নিয়ন্ত্রন করা এবং প্রতিটি ভুল সংবাদের প্রতিবাদে বিএমএ থেকে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দেয়া।
– আগামী বিসিএস এ অধিক ডাক্তার নিয়োগ নিশ্চিত করা
– বেসরকারী চিকিতসকদের বেতন সরকারী চিকিতসকদের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ করা।
– বিসিপিএস এর পরীক্ষার ভাতা কমানো।
– বিএমএমএমইউতে প্রচুর সংখ্যক ডাক্তার নিয়োগ করা।
সভার শেষ পর্যায়ে বিএমএ মহাসচিব ডা: ইহতেশামুল হক দুলাল স্যার আগামীকাল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বেলা ১২টা থেকে বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ নিতে সবাইকে আহ্বান জানান এবং ঢাকার বাইরে লোকাল বিএমএ আয়োজিত বিক্ষোভ কর্মসূচীতে অংশ নিতে বলেন।
আজ এই গুরুত্বপূর্ণ সভায় তরুন চিকিতসকদের উপস্থিতি ছিলো হতাশা জনক। আসুন আমরা ফেসবুকেই শুধু দাপট না দেখিয়ে সকল সম্ভবপর কর্মসূচীতে অংশগ্রহন করি এবং বিএমএ কে শক্তিশালী হতে সহায়তা করি। কাল চলে আসুন শহীদ মিনারে বেলা ১২টায়।
তথ্য ঃ ডাঃ মারুফুর রহমান অপু