বলা হয়ে থাকে, হাসপাতালের দেয়াল মানুষের দুঃখ-কষ্ট আর বেদনা সবচেয়ে বেশি প্রত্যক্ষ করে।মন্দির-মসজিদের চেয়ে হাসপাতালেই মানুষের আকুতি-প্রার্থনা বেশি শোনা যায়।অসুস্থ অসহায় মানুষের ভারী কান্না আর কষ্টে গুমোট হয়ে থাকে হাসপাতালের পরিবেশ।আর সেই পরিবেশে শিশুরা বড্ড বেমানান।কোমলমতি বাচ্চারা থাকবে আপন নীড়ে,খেলাঘরে হাসিখুশি আর আনন্দের পরিবেশে।কিন্তু অসুস্থতা এই বাচ্চাদেরই বেশি ভালোবাসে যেন।তাইতো না চাইলেও অসুস্থ হলেই বাবা-মারা বুকে চেপে আদরের সন্তানকে নিয়ে আসেন হাসপাতালে। সেখানে তাদের ঠাঁই হয় শিশু বিভাগে।
কিন্তু হাসপাতালের সেই চার দেয়ালের মাঝে অসুস্থ শিশুমন খুব সহজে মানিয়ে নিতে পারেনা।ছোট ছোট দুঃখী মুখগুলোর না বলা না বুঝাতে পারা আকুতি সবাই অনুভবও করতে পারেনা।শিশু ওয়ার্ডকে যদি তাদের অবুঝ হৃদয়ের রঙিন জগতের মতোই সুন্দর করে তোলা যায় তাহলে হয়তো তাদের কষ্ট কিছুটা ভুলিয়ে রাখা যায়।আর সে সুন্দর এবং শুভ চিন্তা থেকেই ফরিদপুর মেডিকেল কলেজের শিশু বিভাগকে তাদের উপযোগী করে সাজানোর এক বৈচিত্র্যময় উদ্যোগ নিয়েছে ‘সন্ধানী, ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ ইউনিট’।
ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুরাতন ভবনের তৃতীয় ও চতুর্থ তলায় অবস্থিত শিশু বিভাগের দেয়াল রাঙানো হয়েছে মীনা,টম এন্ড জেরি, মিকি মাউস সহ বিভিন্ন কার্টুন দিয়ে।লেখা হয়েছে শিশুসচেতনতা বিষয়ক বিভিন্ন বাণী। সিলিং থেকে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে বিভিন্ন রঙিন পুতুল ও খেলনা।এতে করে আগের চেয়ে আরো প্রাণবন্ত ও আনন্দময় হয়ে উঠবে এখানে চিকিৎসা নিতে আসা শিশুরা।
আজ সোমবার নতুন বছর পয়লা দিনে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন ফরিদপুর মেডিকেল কলেজের সম্মানিত অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডাঃ এস এম খবীরুল ইসলাম স্যার।সেখানে উপস্থিত ছিলেন শিশু বিভাগের প্রধান ডা. অলোক কুমার সাহা স্যার , গাইনি এন্ড অবস বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা: শীলা রানী দাস ম্যাম, মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডা: মো. তৌহিদুল ইসলাম স্যার, ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ডা: আবু ফয়সাল মো: পারভেজ স্যার, শিশু বিভাগের ডা. মো. কামরুল হাসান স্যার প্রমুখ। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন সন্ধানী, ফমেক ইউনিটের সভাপতি মনিরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মোহন কুমার পাল সহ সন্ধানীর উপদেষ্টা ও সদস্যবৃন্দ। এ কার্যক্রমে অর্থায়ন করেছে ‘সিরাজ-খালেদা মেমোরিয়াল ট্রাস্ট’।
লেখা- মো: হাসনাত বিন যুবায়ের