৮ এপ্রিল, ২০২০:
বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজে করোনা ভাইরাস শনাক্তকরণের জন্য খুব শীঘ্রই পিসিআর ল্যাব চালু হতে যাচ্ছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেয়া নির্দেশ অনুযায়ী, ইতিমধ্যে ল্যাব চালুর জন্যে অভ্যন্তরীন সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, বগুড়া ছাড়াও গাইবান্ধা, নাটোর, নওগাঁ , পাবনা, জয়পুরহাট সহ উত্তরাঞ্চলের বেশ কয়েকটি জেলায় করোনা ভাইরাস শনাক্তকরণের তেমন কোনো ব্যবস্থা নেই। করোনা উপসর্গ যেমনঃ সাধারণ সর্দি-কাশি, শ্বাসকষ্ট, জ্বর ইত্যাদি দেখা দিলে রোগীরা বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নেয়ার জন্যে ছুটছেন। কিন্তু পর্যাপ্ত শনাক্তকরণ ব্যবস্থা না থাকার ফলে অনেক রোগীই ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। বর্তমানে উত্তরবঙ্গের এসকল জেলা থেকে সন্দেহভাজন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের নমুনা সংগ্রহ করে রাজশাহী ও ঢাকার ল্যাবে পাঠানো হচ্ছে।
সারাদেশে অস্থিতিশীল যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে রিপোর্ট পৌঁছাতে কমপক্ষে ৪/৫ দিন সময় লেগে যাচ্ছে। ফলে রোগীর পরিবার পরিজনেরাও রয়েছেন সংক্রমণ ঝুঁকির মধ্যে। ইতিমধ্যে, বগুড়ার বিভিন্ন মহল থেকে করোনা ভাইরাস পরীক্ষার জন্য ল্যাব স্থাপনের জোর দাবী জানানো হয়েছে। বিভিন্ন দিক বিবেচনা করে তাই সরকার কর্তৃক বগুড়ায় করোনা ভাইরাস শনাক্তকরণের জন্য ল্যাব স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. রেজাউল আলম জুয়েল জানান, পলিমারেজ চেইন রিএ্যাকশন ( পিসিআর) স্থাপন করতে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ বগুড়ার স্বাস্থ্য বিভাগকে নিদের্শনা দিয়েছেন। সে মোতাবেক বগুড়ার গণপূর্ত বিভাগ মেডিকেল কলেজে পিসিআর ল্যাব বসানোর কাজ শুরু করেছে। গণপূর্ত বিভাগ মেডিকেল কলেজের প্যাথলজি বিভাগের পাশে একটি আলাদা কক্ষে এই ল্যাব স্থাপনের অভ্যন্তরীন উন্নতিকরনের কাজ শুরু করেছে।
বগুড়া গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর অফিস সূত্র হতে জানা গেছে, করোনা ভাইরাস পরীক্ষার ল্যাবের জন্যে মেডিকেল কলেজের একটি কক্ষের ৪টি ইনক্লোজার, সিলিং সহ অন্যান্য নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়েছে। বগুড়া মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. রেজাউল আলম জুয়েল জানান, ল্যাবের প্রাথমিক প্রস্তুতির কাজ দ্রুত শেষ হবে। এরপরেই ঢাকা থেকে পিসিআর মেশিন সহ অন্যান্য সরঞ্জাম ও করোনা শনাক্তকরণ কীট আসবে।
দেশের স্বাস্থ্য বিভাগের বিশেষজ্ঞ টিম পিসিআর ল্যাব স্থাপনের জন্য মেডিকেল ইকুইপমেন্ট স্থাপন সহ অন্যান্য নির্দেশনা দিবেন। আশা করা যাচ্ছে, মেশিন পৌঁছানোর এক সপ্তাহের মধ্যে করোনা ভাইরাস পরীক্ষার কাজ শুরু করা সম্ভব হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, এই ল্যাবের টেকনিক্যাল বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বায়োসেফটি লেভেলের বিষয়টিও বিশেষজ্ঞরা নিরুপণ করে ল্যাব চালু করবেন। সূত্র আরো জানায়, ইতিমধ্যে টেকনোলজিস্টদেরকে নমুনা সংগ্রহের বিষয়ে অনলাইনে প্রাথমিক প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। ঢাকা থেকে বিশেষজ্ঞ টিম এসে অন্যান্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ সহ লোকবলের বিষয়টি নির্ধারণ করবেন। তবে সব মিলিয়ে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ল্যাব প্রস্তুত এবং এরপর দ্রুততম সময়ে পরীক্ষা শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বগুড়া মেডিকেল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের অধীনে এই পিসিআর ল্যাব পরিচালিত হবে বলে জানা গেছে। এটি চালু হলে করোনা ভাইরাস সংক্রমন প্রতিরোধে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন সহ অঞ্চলের লোকজনের মধ্যে করোনা ভাইরাসের চিকিৎসার ক্ষেত্রে ইতিবাচক মনোভাব তৈরী এবং সচেতনতা আরো বৃদ্ধি করবে বলে সংশ্লিষ্টরা আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
নিজস্ব প্রতিবেদক / নাজমুন নাহার মীম