প্ল্যাটফর্ম প্রতিবেদন, ১৫ আগষ্ট ২০২০, শনিবার
প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক এবং আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ বলেন, আগস্ট মাস শোকের মাস। ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করেছিল স্বাধিনতাবিরোধী পরাজিত শক্তি। এই হত্যাকাণ্ড পুরো জাতির জন্য একটি বেদনার্ত দিন, বাঙালীর ইতিহাসে সবচেয়ে বেদনাময় দিনগুলোর একটি। তিনি ১৫ আগস্টের প্রাক্বালে জাতির পিতা, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব এবং তাঁর পরিবারের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা এবং কৃতজ্ঞতা জানান।
ডা. এবিএম আবদুল্লাহ বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বাস্থ্যচিন্তা ছিল অত্যন্ত যুগোপযোগী, আধুনিক এবং জনবান্ধব। তিনি চেয়েছিলেন সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে। সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে তিনি কাজ শুরু করেছিলেন।
ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ আরও বলেন, আজকের যে স্বাস্থ্যের পরিকাঠামো, সেটা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর চিন্তাপ্রসূত। তিনি ইউনিয়ন হেলথ কমপ্লেক্স, মহকুমা হাসপাতাল ব্যবস্থা- যেটি এখন উপজেলা হয়েছে, জেলা হাসপাতাল, মেডিকেল কলেজের ধারণা দিয়েছিলেন। অর্থাৎ মানুষ যেন বিনামূল্যে বা ন্যূনতম মূল্যে রাষ্ট্রীয়ভাবে সব চিকিৎসা সেবা পায়, সেটা নিশ্চিত করতে চেয়েছিলেন তিনি। আজ বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় যেটা বাংলাদেশে চিকিৎসার ক্ষেত্রে উচ্চতর চিকিৎসার পাদপীঠ, সেটিও বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া। বঙ্গবন্ধু প্রথম আইপিজিআর প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সেখানে চিকিৎসকরা যেন উচ্চতর চিকিৎসা এবং গবেষণার কাজ করতে পারেন, সেই ব্যবস্থা বঙ্গবন্ধুই করেছিলেন।
ডা. আবদুল্লাহ বলেন, আজ যে কমিউনিটি ক্লিনিক ব্যবস্থা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করেছেন, এটার স্বপ্ন দেখেছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার পরিকল্পনা নিয়েছিলেন। কিন্তু ৭৫ এর ১৫ আগস্টের হৃদয়বিদারক ঘটনার জন্য তিনি সেটি করতে পারেননি। তাঁর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেটি পূরণ করছেন।
প্রবীণ এই চিকিৎসক আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৪ মেয়াদে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার প্রভূত উন্নয়ন হয়েছে। বাংলাদেশ বিশ্বের স্বাস্থ্যে একটা রোল মডেল হয়েছে, অনেকগুলো আন্তর্জাতিক পুরস্কার অর্জন করেছে। স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় এখনও যে দুর্নীতি, অনিয়ম, বিশৃঙ্খলাগুলো রয়েছে সেগুলো থাকতো না, যদি বঙ্গবন্ধু আর কিছুদিন থাকতেন, একটা সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা যদি তিনি গড়ে তুলতে পারতেন।
উপমহাদেশের খ্যাতনামা এই চিকিৎসক বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে পরিকল্পনা করেছিলেন তাতে কোনো মানুষ যেন চিকিৎসার আওতার বাইরে না থাকে, কোনো মানুষকে যেন অর্থের অভাবে চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হতে না হয়, সেই চিন্তা-চেতনা এবং ধারণাকে তিনি বিকশিত করেছিলেন। সেজন্যই দেখা যায় যে, বাংলাদেশে এখনও স্বাস্থ্য ব্যবস্থা অনেক বেশি গরীববান্ধব। এখানে একজন গরীব মানুষ যেভাবে ন্যূনতম মূল্যে চিকিৎসা পায়, সেটিও বিশ্বে একটি বিরল ঘটনা।
ডা. এবিএম আবদুল্লাহ বলেন, পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টে কেবল জাতির পিতাকে হত্যা করা হয়নি। বাঙালীর স্বপ্নকে হত্যা করা হয়েছিল। আমাদের যে স্বাস্থ্য অধিকারের স্বপ্ন, সেটাকে হত্যা করা হয়েছিল।