রবিবার, ২৬ জানুয়ারি, ২০২৬
সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উন্নয়ন সংস্থা-ইউএসএইডের অর্থায়নে বাংলাদেশে বাস্তবায়নাধীন সব প্রকল্প ও কর্মসূচির ব্যয় অবিলম্বে বন্ধের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
গতকাল (২৫ জানুয়ারি) এক চিঠিতে মার্কিন সহায়তায় কার্যক্রম পরিচালনা করা দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে পাঠানো এক চিঠিতে একথা জানানো হয়। চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন করেন ইউএসএইডের অধিগ্রহণ ও সহায়তা তত্ত্বাবধায়ক চুক্তি কর্মকর্তা ব্রায়ান অ্যারন।
ইউএসএইড জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র আর বাংলাদেশকে সহায়তা দেবে না। তবে জরুরি খাদ্যসহায়তা এবং ইসরায়েল ও মিসরের জন্য সামরিক অর্থায়নকে এই সিদ্ধান্তের বাইরে রাখা হয়েছে।
আজ (২৬ জানুয়ারি) ইউএসএইড বাংলাদেশ কার্যালয়ের পরিচালক রিচার্ড অ্যারন সংস্থাটির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ সব স্থানীয় উন্নয়ন সংগঠনের জন্য এ নির্দেশনা জারি করে চিঠি দেন।
‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশ : যুক্তরাষ্ট্রের বিদেশি সহায়তার পুনর্মূল্যায়ন ও পুনঃসামঞ্জস্যকরণ’ শীর্ষক চিঠিতে বলা হয়েছে, ইউএসএইড-বাংলাদেশের সব বাস্তবায়ন অংশীদারদের প্রতি একটি নির্দেশিকা হিসেবে পাঠানো হচ্ছে।
ইউএসএইডের চিঠিতে বলা হয়েছে, ইউএসএআইডি, বাংলাদেশ বাস্তবায়নকারী সব অংশীদারদের চুক্তি, কার্য আদেশ, অনুদান, সমবায় চুক্তি বা অন্যান্য অধিগ্রহণ বা সহায়তা স্মারকের অধীনে সম্পাদিত যেকোনও কাজ অবিলম্বে বন্ধ অথবা স্থগিত করার জন্য একটি নির্দেশনা হিসেবে কাজ করে এই চিঠি। চিঠিতে বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের প্রাপ্ত বরাদ্দ থেকে ব্যয় কমানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়। এছাড়া লিখিত কোনও নির্দেশ না আসা পর্যন্ত কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে চিঠিতে। চিঠিতে রেফারেন্স হিসেবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া এই সংক্রান্ত নির্দেশনা বাস্তবায়নে দ্রুত একটি গাইডলাইন পাঠানোর কথাও বলা হয়।
কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ গণতন্ত্র ও শাসন, মৌলিক শিক্ষা এবং পরিবেশগত কার্যক্রমের পাশাপাশি বিশ্বের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য কর্মসূচি নিয়ে বাংলাদেশে ইউএসএআইডি কর্মসূচি এশিয়ার বৃহত্তম। রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় ইউএসএআইডি বাংলাদেশে বড় ধরনের মানবিক সহায়তা তদারকি করে। তবে এই আদেশের প্রভাব জরুরি খাদ্য সহায়তার ওপর নাও পড়তে পারে বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় এতদিন ইউএসএইড অনন্য ভূমিকা রেখে আসছিল। বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশগুলোর স্বাস্থ্যখাতকে স্থিতিশীল রাখতে সহায়তা করত ইউএসএইড। বিশেষ করে বাংলাদেশে যক্ষারোগ নির্ণয়ে বিনামূল্যে যে জিন এক্সপার্ট পরীক্ষা করার সুযোগ দিয়ে আসত ইউএসএইড। কার্যক্রম বন্ধ করায় আইসিডিডিআরবির এর সকল যক্ষা রোগ নির্ণয় ও প্রতিরোধ বিষয়ক কার্যক্রম আগামী তিন মাসের জন্য স্থগিত করা হয়েছে।পাশাপাশি অন্যান্য স্বাস্থ্য প্রজেক্ট, পাবলিক হেলথ নিউট্রিশান সহ বিভিন্ন এসডিজি সম্পর্কিত প্রজেক্টও বন্ধ করতে হবে।
ফলে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা আরো হুমকির মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা!
প্ল্যাটফর্ম/