বাংলাদেশে এই প্রথম কোন বিদেশীর কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্ট হয়েছে বাংলাদেশে। চিকিৎসক কমিনিউটির পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন, অধ্যাপক ডা. হাবিবুর রহমান দুলাল এবং তার টিম।
চাঁদপুরের ছেলে বিন সালাউদ্দিন ভাগ্য অন্বেষণে ১২ বছর আগে মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমান। দীর্ঘদিন মালয়েশিয়ায় থাকতে থাকতে তার কলিগ মালয়ি মেয়ে রোজ লায়লা’র প্রেমে পড়ে যান এবং তারপর পরিণয়। কিন্তু সুখের মাঝে দুঃখ হানা দেয় বিয়ের তিন মাস পরেই। ধরা পড়ে রোজ লায়লা’র দুটি কিডনি’ই পুরোপুরি নষ্ট।
মালয়েশিয়ায় কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্ট সম্পূর্ণ ফ্রি কিন্তু সেই সিরিয়াল আসবে ৩ বছর পর। তিন বছর ডায়ালাইসিস নিয়ে বেচে থাকতে হবে এটা কোন ভাবেই মেনে নিতে পারেন নি, রোজ লায়লা ও তার প্রিয়তম স্বামী। তখন বাংলার সালাউদ্দিন তার প্রিয়তমা স্ত্রী কে বাচানোর জন্য বাংলাদেশে কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্ট করানোর সিদ্ধান্ত নেন। কিডনি দিতে রাজি হন রোজ লায়লার বড় বোন রুহানি। সালাউদ্দিন যোগাযোগ করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের নেফ্রোলজি ও ইউরোলজি বিভাগের সাথে। ভর্তি হন নেফ্রোলজি বিভাগের অধীনে। সকল পরীক্ষা নিরীক্ষা ও আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে গত ৫ ই জানুয়ারি ট্রান্সপ্ল্যান্ট সফল ভাবে সম্পন্ন করেন ইউরোলজি বিভাগ।
৭ ই ফেব্রুয়ারি, বৃহস্পতিবার দীর্ঘ তিন মাস নেফ্রোলজি বিভাগের অধীনে ভর্তি থেকে ছাড়পত্র নিয়ে মালয়েশিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হবেন। একটি সফল ট্রান্সপ্ল্যান্টের জন্য নেফ্রোলজি বিভাগের সম্মানিত শিক্ষক ও চিকিৎসকরা যে কষ্ট করেন তা অনবদ্য মাইলফলক।
এই সফল ট্রান্সপ্ল্যান্ট সম্ভব হয়েছে নেফ্রোলজি বিভাগের অধ্যাপক ও প্রোভিসি (এডমিন) অধ্যাপক ডাঃ মুহাম্মাদ রফিকুল আলম স্যার, চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডাঃ আছিয়া খানম ম্যাম, অধ্যাপক শহীদুল ইসলাম স্যার সহ অন্যান্য শিক্ষক বৃন্দের জন্য।
সফল ট্রান্সপ্ল্যান্টের সাথে যুক্ত ছিল ইউরোলজি বিভাগের ট্রান্সপ্ল্যান্ট ইউনিটের অধ্যাপক হাবিবুর রহমান ও ডাঃ তৌহিদ দীপু সহ সকল চিকিৎসক। আরও যারা যুক্ত ছিলেন তারা হলেন ডাঃ এরশাদ, ডাঃ রেমিন রাফি,ডাঃ সাইফুল,ডাঃ জাকির সুমন সহ অন্যান্য রেসিডেন্টবৃন্দ। তাদের পরিশ্রমের ফসল এই সফল ট্রান্সপ্ল্যান্ট।
ভালো থাকুক সালাউদ্দিন – রোজ লায়লা এবং বিদেশে সমুন্নত হোক বাংলাদেশের ভাবমূর্তি।