প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ২ মে, ২০২০, শনিবার
নেপালে ফিরে যাওয়ার জন্য বিক্ষোভ করছেন বাংলাদেশে আটকে পড়া নেপালি শিক্ষার্থী। ৫৬৪ জন নেপালি শিক্ষার্থীদের অধিকাংশ বাংলাদেশের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজে অধ্যায়নরত। নেপালে লকডাউনের কারণে সকল আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ থাকায় দেশে ফিরে যেতে পারছেন না তারা।
গত ২৯ মার্চ থেকে ক্যাম্পেইন শুরু করে নেপালি শিক্ষার্থীরা। একটাই দাবী- তাদেরকে নিজ দেশে ফিরিয়ে নেওয়া। ইমেইলের মাধ্যমে নেপালের সরকার ও এম্বেসির সাথে যোগাযোগ করে শিক্ষার্থীরা। নেপালের গণমাধ্যমগুলোয় নিজেদের সমস্যার কথা জানায়। বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম- ফেইসবুক, টুইটারের মাধ্যমে কতৃপক্ষের নজরে তাদের দাবি তুলে ধরার চেষ্টা করছে। যদিও এখনও পর্যন্ত আশানুরূপ কোন সাড়া পাওয়া যায় নি।
বর্তমান পরিস্থিতিতে নেপাল সরকারের অনুমতি ছাড়া কাউকে দেশটিতে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। সরকারের অনুমতির জন্য প্রায় প্রতিদিনই এম্বেসিতে যোগাযোগ করছেন নেপালী শিক্ষার্থীরা। নিজেদের ব্যক্তিগত সুরক্ষা নিশ্চিত করতে বলে এম্বেসি অফ নেপাল। এছাড়াও নেপালে ফিরিয়ে নেওয়ার কাজ চলছে বলে আশ্বাস দেয়। চ্যাটার্ড প্লেইনে একটি ফ্লাইটের ব্যবস্থা করা হলে, নিজেদের ফ্লাইটের খরচ বহন করতে এবং দেশে ফিরে গিয়ে কোয়ারেন্টাইনে থাকতে প্রস্তুত শিক্ষার্থীরা।
ডেন্টালের শেষ বর্ষের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন নেপালি শিক্ষার্থী জানান, “আমার প্রফেশনার পরীক্ষা চলছিল। রিটেন শেষ হয়ে যায়, কিন্তু ভাইবা শুরুর আগেই লকডাউন চালু হয়। পরীক্ষা হবে চিন্তা করে ফিরে যাই নি। ভুটান, মালদ্বীপ, মালেশিয়াসহ অন্যান্য বিদেশি শিক্ষার্থীরা নিজেদের দেশে চলে গেছে আরো আগেই। আটকা পড়েছি আমরা।”
বর্তমানে বাংলাদেশে থাকা নেপালি মেডিকেল শিক্ষার্থীদের সমস্যাগুলো সম্পর্কে তিনি জানান, লকডাউনের সময় এখানে থাকা বেশি কঠিন ও বিপদজনক হয়ে পড়েছে। প্রতিনিয়ত বাড়ছে কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। যেখানে নেপালে আক্রান্তের সংখ্যা মাত্র ৫৯। তাছাড়া কিছু মেডিকেল কলেজ এবং হোস্টেল একই বিল্ডিং এ বা কাছাকাছি, এতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি আরো বাড়ছে বলে ভাবছেন তারা।
নিজের দেশ থেকে এত দূরে কোভিড-১৯ আক্রান্ত হলে তাদের দেখা শোনা করার মত কেউ নেই। তাছাড়া অনেকদিন একই রুমে অবস্থান করার কারণে মানসিকভাবেও ভেঙ্গে পড়ছে শিক্ষার্থীরা। এর সাথে যোগ হয়েছে টাকার সমস্যা। ব্যাংকের মাধ্যমে নেপাল থেকে বাংলাদেশে টাকা লেনদেনের ব্যাপারে সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এই মহামারীর সময়ও কিছু মেডিকেল কলেজের কর্তৃপক্ষ বকেয়া হোস্টেল ফি পরিশোধের আদেশ দেওয়ায় অসুবিধায় পড়েন শিক্ষার্থীরা।
এ ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে চিকিৎসা সেবার ব্রত নেওয়া এই শিক্ষার্থীরা নেপাল সরকারের কাছে দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার অনুরোধ জানায়।
নিজস্ব প্রতিবেদক/সুবহে জামিল সুবাহ