আজ ৭ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮।
গত ৪ ফেব্রুয়ারি ছিল বিশ্ব ক্যান্সার দিবস। ক্যান্সার বিষয়ে বিশ্বব্যাপি সাধারণ মানুষদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করাই এই দিবসের লক্ষ্য। শরীরের অন্যান্য অংশে ক্যান্সার যেমন ভয়াবহ ,মুখের ক্যান্সার(Oral Cancer) ও ঠিক ততটাই ভয়াবহ ও মরনঘাতি ।
বাংলাদেশের ওরাল এন্ড ম্যাক্সিলোফেসিয়াল সার্জনদের সবচেয়ে বড় ও একমাত্র জাতীয় সংগঠন
বামোস (বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অফ ওরাল এন্ড ম্যাক্সিলোফেসিয়াল সার্জনস)। মুখের ক্যান্সার বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এবারের বিশ্ব ক্যান্সার দিবসে তাই বামোস এর উদ্যোগে দেশের উল্লেখযোগ্য কিছু প্রতিষ্ঠানে দিবসটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণভাবে পালন করা হয়। আর আয়োজন করা হয় সচেতনতামূলক র্যালি ও আলোচনা সভার ।
বামোস এর উদ্যোগে দেশের যে সকল প্রতিষ্ঠানে মুখের ক্যান্সার বিষয়ক কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে, সেগুলো হলঃ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়,ঢাকা ডেন্টাল কলেজ ও হাসপাতাল,সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (ডেন্টাল ইউনিট), সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল (ডেন্টাল ইউনিট), রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল (ডেন্টাল ইউনিট),রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল(ডেন্টাল ইউনিট), ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ক্যান্সার রিসার্চ এন্ড হসপিটাল, হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে।
দেশের ক্যান্সারজনিত কারণে যত মৃত্যু হয় তার মধ্যে কারণ হিসেবে মুখের ক্যান্সার তৃতীয়। মুখের ক্যান্সারের অন্যতম প্রধান কারন হল পান – সুপারি ,বিড়ি সিগারেট সহ সকল প্রকার তামাক জাতীয় দ্রব্য। তবে এই রোগের চিকিৎসাও আছে। সার্জারি, রেডিওথেরাপি, ক্যামোথেরাপি দ্বারা মুখের ক্যান্সারের চিকিৎসা করা হয়ে থাকে । এইসব চিকিতৎসাগুলো অবশ্যই ক্যান্সারের এডভান্স স্টেইজে করতে হবে । বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় আক্রান্ত রোগীরা ক্যান্সারটি ছড়িয়ে যাওয়ার পর একদম শেষমুহূর্তে চিকিৎসার জন্য আসে। অথচ মুখের ক্যান্সার প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত করা গেলে, সঠিক চিকিৎসা দ্বারা সেটা অবশ্যই সারিয়ে তোলা সম্ভব। তার থেকেও গুরুত্বপুর্ণ ব্যাপার হচ্ছে সচেতনতা ও প্রাথমিক স্ক্রিনিং এর মাধ্যমে এটি প্রতিরোধ করা সম্ভব।
কিন্তু বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে অধিকাংশ রোগিই নিম্ন ও নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের । যার কারনে তাদের মধ্যে মুখের ক্যান্সার সচেতনতা সম্পর্কিত জ্ঞান কম। এছাড়াও দেশে মুখের ক্যান্সারজনিত চিকিৎসার জনবলও তেমন নেই । আর তাই বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় ক্যন্সারটি যখন মুখে ছড়িয়ে গিয়ে শেষ পর্যায়ে পৌঁছে যায়, আক্রান্ত রোগী ও তার পরিবারের জীবনও দুর্বিষহ হয়ে ওঠে তখন ।
বিশ্ব ক্যান্সার দিবসে তাই মুখের ক্যান্সার প্রতিরোধ বামোস (বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অফ ওরাল এন্ড ম্যাক্সিলোফেসিয়াল সার্জনস) এর উদ্যোগে দেশের সর্বত্র এই আয়োজনের ব্যবস্থা করা হয়। আর এই আয়োজনের মাধ্যমে তারা প্রাথমিক অবস্থায় সনাক্তকরণ, নিয়মিত স্ক্রিনিং এবং যথাসময়ে ওরাল এন্ড ম্যাক্সিলোফেসিয়াল বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শরনাপন্ন হওয়ার উপর অধিক গুরুত্ব আরোপ করেন।
তথ্য ও ছবি: ডা. সাবরিনা ফরিদা চৌধুরী, প্ল্যাটফর্ম ডেন্টাল উইং।