প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ১১ জুলাই, ২০২০, শনিবার
সম্প্রতি চীনের উত্তরের মঙ্গোলিয়া অঞ্চলে এক পশুপালক ব্যক্তির দেহে প্রাচীন বিউবনিক প্লেগ দেখা গিয়েছে। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বলছে, তারা আক্রান্ত ব্যক্তির দেহে রোগটি পর্যবেক্ষণ করছে; এ থেকে উচ্চ ঝুঁকির সম্ভাবনা নেই এবং রোগীর অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে।
বিউবনিক প্লেগ কি?
Xenopsylla cheopis ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের কারণে সৃষ্ট বিউবনিক প্লেগ মানব ইতিহাসের সবচেয়ে মারাত্মক মহামারীর জন্য দায়ী। মধ্যযুগের শেষদিকে (১৩৪০-১৪০০) ইউরোপে এ ভয়ঙ্কর রোগের প্রাদুর্ভাব হয়। ১৩৪৭ সালে কুখ্যাত বিউবনিক প্লেগের মহামারী হয়, যা প্রায় এক তৃতীয়াংশ লোকের প্রাণহানি ঘটায়। ইতিহাসে এটি ব্ল্যাক ডেথ নামে পরিচিত। ১৬৬৫ সালে এ মহামারী চলাকালীন সময়ে লন্ডনের জনসংখ্যার প্রায় পঞ্চমাংশ এবং চীন ও ভারতে ১৯ শতকের সময়ে ১২ মিলিয়নেরও বেশি লোক মারা যায়।
বিউবনিক প্লেগ এক সময় বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর রোগ ছিল, তবে এখন সহজেই অ্যান্টিবায়োটিক এর মাধ্যমে চিকিৎসা করা সম্ভব। চিকিৎসা না করা অবস্থায়, রোগটি সাধারণত অন্যান্য প্রাণী থেকে মানুষের মধ্যে সংক্রামিত হয়। এ রোগে মৃত্যুর হার ৩০-৬০%।
প্লেগের লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে:
- উচ্চ জ্বর,
- ঠান্ডা লাগা,
- বমি বমি ভাব,
- দুর্বলতা এবং
- ঘাড়, বগল বা কুঁচকি এর লিম্ফ নোড ফুলে যাওয়া।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এর মুখপাত্র মার্গারেট হ্যারিস বলেন,
“বিউবনিক প্লেগ বহু শতাব্দী ধরে আমাদের সাথে ছিল এবং সর্বদা আমাদের সাথে রয়েছে। চীনের ঘটনাটিকে এই মুহুর্তে আমরা উচ্চ ঝুঁকি বিবেচনা করছি না। তবে আমরা এটি সাবধানতার সাথে পর্যবেক্ষণ করছি।”
বিউবনিক প্লেগ সাধারণত বিরল একটি রোগ, তবে সময়ে সময়ে এই রোগের কয়েকটি ঘটনা রয়েছে। ২০১৭ সালে, মাদাগাস্কারে ৩০০ টিরও বেশি কেস দেখা যায়। মেডিকেল জার্নাল দ্য ল্যানসেটের এক গবেষণায় দেখা গেছে, এ সময় ৩০ জনেরও কম লোক মারা গিয়েছিল।
গত বছরের মে মাসে মঙ্গোলিয়ায় এ রোগে দু’জনের মৃত্যু হয়েছিল, ইঁদুরের কাঁচা মাংস খাওয়ার কারণে।
স্ট্যানফোর্ড হেলথ কেয়ারের সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. শান্তি কপ্পগোদা নিউজ সাইট হিথলাইনকে জানান,
“পরিস্থিতি বর্তমানে ১৪ শতাব্দীর মত নয়, এখন আমাদের এটি সম্পর্কে ধারণা রয়েছে। আমরা জানি কীভাবে রোগটি প্রতিরোধ করা যায়। তাই, মহামারী হওয়ার সম্ভাবনা কম।”
তথ্যসূত্র: বিবিসি নিউজ