কোরিয়ান সরকারের অর্থায়ণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ১০০০ শয্যাবিশিষ্ট একটি সুপার স্পেশালাইড হাসপাতাল নির্মাণের কার্যক্রম শুরু হতে যাচ্ছে। এ জন্য ইতোমধ্যে কোরিয়ান পরামর্শক নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে।
এ উপলক্ষে আজ বুধবার ১৭ আগস্ট ২০১৬ইং তারিখ, দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বি-ব্লকের নীচ তলায় শহীদ ডা. মিল্টন হলে সুপার স্পেশালাইড হাসপাতালের কনসালট্যান্সি কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
গুরুত্বপূর্ণ এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশস্থ দক্ষিণ কোরিয়ার মান্যবর রাষ্ট্রদূত জনান আন সং-ডু ।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান।
এসময় উপস্থিত ছিলেন এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. এ এস এম জাকারিয়া (স্বপন), কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোঃ আলী আসগর মোড়ল, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল হান্নান, প্রক্টর অধ্যাপক ডা. মোঃ হাবিবুর রহমান দুলাল, পরিচালক (হাসপাতাল) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ আব্দুল্লাহ আল হারুন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল প্রকল্পের পরিচালক অধ্যাপক ডা. জুলফিকার রহমান খান, পরিচালক (মানবসম্পদ) ডা. জামাল উদ্দিন খলিফা, দক্ষিণ কোরিয়ান কনসালটোন্সি টিমের প্রধান মি হ্যান , প্রকল্পের উপ-পরিচালক ডা. নূর-ই-এলাহী (মীম) প্রমুখ।
বাংলাদেশস্থ দক্ষিণ কোরিয়ার মান্যবর রাষ্ট্রদূত আন সং-ডু বলেন, ২০১৯ সালের মধ্যেই সুপার স্পেশালাইসড হাসপাতাল নির্মাণ কার্যক্রম সম্পন্ন হবে। এক্ষেত্রে দক্ষিণ কোরিয়ার অভিজ্ঞতাকেও কাজে লাগানো হবে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল নির্মাণের মধ্য দিয়ে স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে একটি বড় স্বপ্ন পূরণ হবে। এ হাসপাতাল হবে দেশের সকল মানুষের সম্পদ। দেশের মানুষ এখান থেকে সুলভে সর্বোচ্চ মাত্রার স্বাস্থ্যসেবা পাবেন। সুপার স্পেশালাইসড হাসপাতাল নির্মাণের ব্যয়ভার বহন করতে বড় ধরণের আর্থিক সহায়তা দেয়ার জন্য দক্ষিণ কোরিয়ার সরকারের প্রতি কৃজ্ঞতা প্রকাশ করছি ও অভিনন্দন জানাচ্ছি। এর মাধ্যমে দক্ষিণ কোরিয়ার সাথে বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরো সুদৃঢ় হবে এবং তা অব্যাহত থাকবে।
উল্লেখ্য, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের কেবিন ব্লকের পিছনে নিজস্ব ৩ দশমিক ৮২ একর জমিতে দেশের প্রথম সেন্টার বেইজড এ সুপার স্পেশালাইসড হাসপাতাল নির্মাণ করা হবে। অত্যাধুনিক এ হাসপাতালে মোট ১১টি সেন্টার থাকবে। সেন্টারগুলো হলো- কার্ডিওভাসকুলার, কিডনি অ্যান্ড ইউরোলজি, হেপাটোবিলিয়ারি অ্যান্ড অ্যান্ডোক্রাইনোলজি, এক্সিডেন্টাল ইর্মাজেন্সি, মাদার অ্যান্ড চাইল্ড কেয়ার, অনকোলজি উল্লেখযোগ্য। হাসপাতালটি নির্মিত হলে এসব সেন্টারে সংশ্লিষ্ট রোগের যাবতীয় চিকিৎসা দেয়া সম্ভব হবে এবং বাংলার আপামর জনসাধারণ দেশেই সুলভে সর্বোচ্চ মাত্রার স্বাস্থ্যসেবা পাবেন। পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান অবস্থার আরো উৎকর্ষ সাধন হবে। প্রকৃতপক্ষে, এ হাসপাতালটি নির্মিত হলে বাংলাদেশে প্রথম সেন্টার বেইসড সুপার স্পেশালাইজড ভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদান শুরু করা সম্ভব হবে।
আরো উল্লেখ্য যে, চলতি বছরের ২ ফেব্রুয়ারি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একনেক সভায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল নামের এ প্রকল্পটি অনুমোদন দেন। এ প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১৩৬৬.৩৩৭২ কোটি টাকা। এরমধ্যে দক্ষিণ কোরীয় সরকারের ইকোনোমিক ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন ফান্ড থেকে সহজ শর্তে ১০৪৭.৩৩৮৪ কোটি টাকা ঋণ সুবিধা পাওয়া যাবে। অত্যন্ত সহজ শর্তে শতকরা মাত্র দশমিক শূন্য ১ শতাংশ সুদে ৪০ বছরের মধ্যে এ ঋণ পরিশোধ করতে হবে। প্রথম ১৫ বছর ঋণের কোনো টাকা পরিশোধ করতে হবে না। পরবর্তী ২৫ বছরে এ ঋণ পরিশোধ করতে হবে।
নিউজ: প্রশান্ত। ছবি: সোহেল।
তথ্য ঃ facebook.com/bsmmu.edu.bd