বিএসএমএমইউ এর ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরের বাজেট ও উন্নয়নের রূপকল্প ২০২১ ঘোষণা করা হয়েছে

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরের জন্য ৩২৯ কোটি ৬৭ লাখ টাকার বাজেট ও উন্নয়নের রূপকল্প ২০২১ ঘোষণা করা হয়েছে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ)’র ২০১৭-২০১৮ইং অর্থ বছরের জন্য ৩২৯ কোটি ৬৭ লাখ টাকার বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। গত বছর (২০১৬-২০১৭ইং) বাজেটের পরিমাণ ছিল ২৭৪ কোটি ৮৫ লাখ টাকা ( সংশোধিত)। গতকাল ২১ জুন ২০১৭ইং তারিখ, বুধবার, বিশ্ববিদ্যায়ের বি ব্লকের নীচতলায় ডা. মিল্টন হলে দুপুর ২টায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বাজেট সম্পর্কিত এ তথ্য তুলে ধরেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আলী আসগর মোড়ল। এসময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান উপস্থিত ছিলেন। আরো উপস্থিত ছিলেন অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ডা.এ.এস.এম জাকারিয়া (স্বপন), রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল হান্নান, প্রক্টর অধ্যাপক ডা. মোঃ হাবিবুর রহমান দুলাল, পরিচালক (অর্থ ও হিসাব) জনাব মোঃ ছিদ্দিকুর রহমান ভূঁঞা, পরামর্শক (অর্থ ও হিসাব) জনাব মোঃ আব্দুস সোবহান, অতিরিক্ত পরিচালক (অর্থ, হিসাব ও অডিট) জনাব মোঃ শফিকুর রহমান প্রমুখ। এর আগে দুপুর ১২টায় একই স্থানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬৬তম সিন্ডিকেট সভায় সর্বসম্মতিক্রমে ২০১৭-২০১৮ইং অর্থ বছরের বাজেট অনুমোদিত হয়। গুরুত্বপূর্ণ ওই সিন্ডিকেট সভায় সভাপতিত্ব করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান। সিন্ডিকেট সভায় বাজেট উপস্থাপন করেন অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আলী আসগর মোড়ল। ওই সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুন্নয়ন বাজেটের পাশাপাশি তৃতীয়বারের মতো উন্নয়ন বাজেটও তুলে ধরা হয়। এছাড়া উন্নয়নের রূপকল্প ২০২১ ঘোষণা করা হয় এবং প্রথমবারের মতো গবেষণা বাজেট ঘোষণা করা হয়।

FB_IMG_1498097053015

ঘোষিত বাজেটের মধ্যে (৩২৯ কোটি ৬৭ লাখ টাকা) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের জন্য ২০৯ কোটি ৬৫ লাখ টাকা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ১২০ কোটি ২ লাখ টাকার বাজেট অনুমোদন দেয়া হয়েছে। বাজেটে বেতন ও ভাতাদি বাবদ ২০৫ কোটি ৬ লাখ টাকা, পেনশন বাবদ ১৪ কোটি ৭০ লাখ টাকা, শিক্ষা ও অন্যান্য সাধারণ আনুষাঙ্গিক ৮১ কোটি ২২ লাখ টাকা, গবেষণায় ৭ কোটি ৯০ লাখ টাকা এবং মূলধন মঞ্জুরী বাবদ ২০ কোটি ৭৯ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান বলেন, বর্তমান প্রশাসন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়কে চিকিৎসা শিক্ষা, গবেষণা ও চিকিৎসা সেবা সর্বদিক থেকে সত্যিকার অর্থেই একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের হাসপাতালে বর্তমানে ১৯০৪ টি রোগীর বিছানা আছে যা আইপিজিএমআর এর সময় ছিল ৮০০টি। বর্তমানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫০টি বিভাগ ও ১টি সেন্টারে শিক্ষক ৪৬০ জন, কনসালটেন্ট ৫০, মেডিক্যাল অফিসার ৪৪৬ জন, গবেষণা সহকারী ৫৮ জন, কর্মকর্তা ২৮৩ জন, নার্স ও ব্রাদার ১১৮৮ জন এবং কর্মচারী ২০১৩ জনসহ মোট জনবল ৪৪৯৮ জন। ৪২টি অধিভুক্ত প্রতিষ্ঠানে ৯২টি উচ্চ শিক্ষার কোর্সে ৩৩০০ জন শিক্ষার্থী মেডিক্যাল শিক্ষায় স্নাতকোত্তর কোর্সে অধ্যয়নরত। ২৪টি বৈকালিক বিশেষায়িত বহির্বিভাগে প্রতিদিন প্রায় ১০০০ রোগী সেবা নিচ্ছেন। ক্যাজুয়ালিটিসহ জেনারেল ইমাজেন্সী চালুর কার্যক্রম চলমান রয়েছে। ১৩ শত কোটি টাকা ব্যয়ে ১০০০ বেডের একটি অত্যাধুনিক সেন্টার বেইজড সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল তৈরি করার যাবতীয় কার্যক্রম চলমান রয়েছে। চলতি বছর এ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত রেসিডেন্টদের পারিতোষিক শিক্ষা মন্ত্রণালয় বরাদ্দ প্রদান করেছে এবং অধিভুক্ত প্রতিষ্ঠানসমূহের রেসিডেন্টদের বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব তহবিল থেকে পারিতোষিক দেয়া হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, একই সেন্টারে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ওয়ান পয়েন্ট হেলথ চেকআপ সেন্টার চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এটা বাস্তবায়নে ১০ কোটি টাকা প্রয়োজন।

FB_IMG_1498097062474

সংবাদ সম্মেলনে সম্মানিত কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোঃ আলী আসগর মোড়ল লিখিত বক্তব্যে জানান, ৩২৯ কোটি ৬৭ লাখ টাকার মধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন থেকে অনুদান পাওয়া যাবে ২৬২ কোটি ৪৮ লাখ টাকা এবং নিজস্ব আয় থেকে ব্যয় নির্বাহের পরিমাণ ধরা হয়েছে ২৮ কোটি টাকা । ফলশ্রুতিতে ২০১৭-১৮ অর্থ বৎসরে সামগ্রিক ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াবে ৩৯ কোটি ১৯ লক্ষ টাকা। এই ঘাটতি কাটিয়ে উঠার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সর্বোত্তম প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে।
সংবাদ সম্মেলনে সম্মানিত কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোঃ আলী আসগর মোড়ল লিখিত বক্তব্যে অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নের রূপকল্প ২০২১ অর্থাৎ মাস্টার প্লান বাস্তবায়ন, বোন ম্যারো ট্রান্সপ্ল্যানটেশন ইউনিট, সেন্টার অব এক্সিলেন্স, গবেষণা কেন্দ্র স্থাপন, আধুনিক লাইব্রেরি স্থাপন, টাওয়ার নির্মাণ, বহির্বিভাগ ভবনের ঊর্ধ্বমুখী সম্পসারণ, বৈকালিক স্পেশালাইজড সার্ভিস, পরীক্ষা কেন্দ্র ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিসের জন্য স্বতন্ত্র ভবন নির্মাণ, ইনস্টিটিউশনাল প্রাকটিস সার্ভিস চালুকরণ, ছাত্রছাত্রীদের আবাসিক হল নির্মাণ, নার্সদের আবাসিক হল নির্মাণ, প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জন্য হল নির্মাণ, জেনারেল ইমার্জেন্সি ইত্যাদি বিষয় তুলে ধরেন।

সংবাদ সম্মেলনে সম্মানিত কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোঃ আলী আসগর মোড়ল আরো বলেন, গবেষণায় সাফল্যের কারণে স্পেনের সিমাগো রিসার্চ গ্রুপ প্রকাশিত জরিপে বাংলাদেশে ১১টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৫ম স্থান অধিকার করে নিয়েছে। এ বছর গবেষণা খাতে ৭ কোটি ৯০ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। গত অর্থ বছরে ৩৩৮টি গবেষণা প্রকল্পে মোট ৩ কোটি ২০ লাক টাকা ব্যয় হয়েছে। উন্নয়ন বাজেট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তিনি উৎসের মাধ্যমে ১ হাজার ৯ শত ৬৫ কোটি ২১ লাখ ৭৪ হাজার ৮ শত টাকা বিভিন্ন প্রকল্পে মোট বরাদ্দের পরিমাণ এবং এর মধ্যে ২০১৭-২০১৮ইং অর্থবছরে ১০০ কোটি ৪৫ লাখ ৯৪ হাজার টাকা প্রস্তাবিত ব্যয় রাখা হয়েছে এবং গত অর্থ বছরে ১৭৬ কোটি ২৫ লাখ ৬৭ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে।

সিন্ডিকেট সভায় উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য ও মাননীয় সংসদ সদস্য মোঃ মাহবুব আলী, মাননীয় সংসদ সদস্য ডা. মোঃ রুস্তম আলী ফরাজী, মাননীয় সংসদ সদস্য ডা. মোঃ মোজাম্মেল হোসেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব জনাব মোঃ আমিনুল ইসলাম খান, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জনাব সরদার আবুল কালাম, সমাজসেবা অধিপ্তরের মহাপরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব জনাব গাজী মোহাম্মদ নুরুল কবীর, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মোঃ আবুল কালাম আজাদ, বাংলাদেশ মেডিক্যাল এাসোসিয়েশন (বিএমএ)’র সভাপতি অধাপক ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, বাংলাদেশ ফেডারেল ইউনিয়ন অফ জার্নালিস্ট-এর সভাপতি জনাব মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, বিসিপিএস’র সভাপতি অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া, বিএমডিসি’র সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সহিদুল্লা, বিএসএমএমইউ’র সম্মানিত উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ডা.এ.এস.এম জাকারিয়া (স্বপন), অধ্যাপক কাজী শহীদুল আলম, অধ্যাপক মোঃ নজরুল ইসলাম, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন অনুষদের ডীন অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ, ডেন্টাল অনুষদের ডীন অধ্যাপক ডা. গাজী শামীম হাসান, নার্সিং অনুষদের ডীন অধ্যাপক ডা. অসীম রঞ্জন বড়ুয়া, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. খান আবুল কালাম আজাদ, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোঃ বিল্লাল আলম, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল হান্নান, কার্ডিওলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সজল কৃষ্ণ ব্যানার্জী, সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. ছয়েফ উদ্দিন আহমেদ, নিউরো সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসেন, অনকোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. সাদিয়া শারমিন প্রমুখ। সভায় আমন্ত্রণক্রমে অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত প্রক্টর অধ্যাপক ডা. মোঃ হাবিবুর রহমান দুলাল, পরিচালক (পরির্দশন) অধ্যাপক ডা. আবুল খায়ের মোঃ সালেক, পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. আবু নাসার রিজভী, পরিচালক (হাসপাতাল) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ আব্দুল্লাহ আল হারুন, পরিচালক (এইচআরএম) ডা. মোঃ জামাল উদ্দিন খলিফা, পরিচালক (অর্থ ও হিসাব) জনাব মোঃ ছিদ্দিকুর রহমান ভূঁঞা, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক জনাব মোঃ ইফতেখার আলম, অতিরিক্ত পরিচালক (অর্থ, হিসাব ও অডিট) জনাব মোঃ শফিকুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit is exhausted. Please reload the CAPTCHA.

Next Post

স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় বিরাজমান সমস্যা ও সমাধানের উপায় : ডাঃ মেহেদি হাসানের কলাম থেকে

Thu Jun 22 , 2017
বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাত বর্তমানে এক ক্রান্তিকালের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।সাম্প্রতিক সময়ে রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে স্বজনদের হাসপাতাল ভাংচুর ও চিকিৎসক লাঞ্চনার অসংখ্য ঘটনা চিকিৎসক ও চিকিৎসা সেবার সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে করে রেখেছে আতঙ্কিত। চিকিৎসা একটি অত্যন্ত জটিল ও ঝুঁকিপূর্ণ বিজ্ঞান।এখানে রোগীর অবস্থা যতোই জটিল বা খারাপ হোক না কেন চিকিৎসকের চেষ্টা থাকে […]

Platform of Medical & Dental Society

Platform is a non-profit voluntary group of Bangladeshi doctors, medical and dental students, working to preserve doctors right and help them about career and other sectors by bringing out the positives, prospects & opportunities regarding health sector. It is a voluntary effort to build a positive Bangladesh by improving our health sector and motivating the doctors through positive thinking and doing. Platform started its journey on September 26, 2013.

Organization portfolio:
Click here for details
Platform Logo