প্ল্যাটফর্ম নিউজঃ ২৯ এপ্রিল ২০২০, বুধবার
৫০ শয্যা বিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। সদ্য তৈরী এই নতুন এই হাসপাতালটি আনুষ্ঠানিক ভাবে এখনো চালু হয় নি। জনবল থেকে শুরু করে সবকিছুরই যথেষ্ঠ অভাব বিদ্যমান। এখানে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন মার্চ থেকে চালু রয়েছে। শুরু থেকে পুরো ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মধ্যে এখানেই প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন চালু ছিল।
প্রতিনিয়ত ভারতের আগরতলা দিয়ে আটকে পড়া বাংলাদেশি মানুষ আসছে। এখানকার ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মীরা হাড়ভাঙা পরিশ্রম করছে বিগত ৩৫টা দিন। ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত সর্বমোট ১১৩ জনের কোভিড টেস্টের জন্য নমুনা নেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে ৭৩ জনের টেস্টের ফলাফল পাওয়া গিয়েছে। বাকিগুলোর ফলাফল এখনো হাতে পাওয়া যায় নি। এই ৭৩ জনের মধ্যে ১১ জনের করোনা পজিটিভ এসেছে।
১১ জনের মধ্যে ডাক্তার ৩ জন, ২ জন স্বাস্থ্য কর্মী ও ১ জন অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার রয়েছেন। অর্থাৎ উক্ত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ৬ জন স্টাফ আক্রান্ত হয়েছেন।
হাসপাতালটির এক স্বাস্থ্যকর্মী মশিউর রহমান জানান, “হাসপাতালটিতে ডাক্তার ৯ জন, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ২ জন, ১ জন ইপিআই ও ১ জন ল্যাবরেটরি সহযোগী রয়েছেন। কোনো নার্স বর্তমানে কর্মরত নেই। ইতিমধ্যেই ৬ জন কোভিড পজিটিভ। পর্যাপ্ত জনবল ও সুরক্ষার অভাবের কারনে হাসপাতালটি বন্ধ হবার আশঙ্কা রয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা যারা এখনও কর্মরত আছি, তারা শারিরীক ভাবে সুস্থ না। রাত-দিন কাজের ফলে আমরা আক্রান্ত হবার সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে আছি। এইসব তোয়াক্কা না করেই আমরা ফিল্ড পর্যায়ে কাজ করে যাচ্ছি। শুধু এদেশের মানুষকে বাঁচাবো বলে!
আমরা এটাই বলতে চাই, আমরা কাজ করে যেতে চাই, যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের সামর্থ্য আছে। মানুষকে আপন ভেবে নিয়ে কাজ করে চলছি প্রতিনিয়ত। মরে গেলেও আফসোস থাকবে না। বরং মানুষকে ভালোবেসেই তো মরতে পারবো। যদি মরেও যাই একটাই আফসোস থেকে যাবে, সেটা হল- আমরা জয় করতে পারি নাই, আপনারা জয় করবেন করোনার মত এই মহামারীকে।”
বিজয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মত দেশের শত শত চিকিৎসা কেন্দ্রের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীরা এভাবেই লড়াই করে যাচ্ছেন করোনা নামক শত্রুর বিরুদ্ধে। এ যুদ্ধে তাদের অনুপ্রেরণা আমরাই দিতে পারি! আর সরকারের উচিত পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা।
স্টাফ রিপোর্টার/শরিফ শাহরিয়ার