সম্প্রতি বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে জাপান-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশীপ হাসপাতালে শিশুমৃত্যু সংক্রান্ত বিভ্রান্তিমুলক সংবাদটি নিশ্চয়ই সকলের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। একটি বিশেষ মহল হাসপাতালের সুনাম নষ্ট করার হীন অপপ্রয়াস হিসেবে এ ধরনের মনগড়া, কাল্পনিক ও বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের চেয়ারম্যান ডাঃ সরদার এ. নাইম।
তিনি তার ফেইসবুক প্রোফাইলে ঘটনার সব আসল তথ্য জানিয়ে একটি স্ট্যাটাস পোস্ট করেছেন। তার বক্তব্যটি নিচে দেওয়া হল-
বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত জাপান বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশীপ হাসপাতালে শিশুমৃত্যু সংক্রান্ত বিভ্রান্তিমুলক খবরের প্রতিবাদ ও ব্যাখ্যাঃ
দুইদিন আগে ৮ই ফেব্রুয়ারী, ২০১৬, তারিখে রাত ৯টায় সিভিয়ার নিউমোনিয়া এবং এনসেফালাইটিস এ আক্রান্ত হয়ে ১ বছর ৪ মাসের শিশু সুমাইয়া সাবাহ এই হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক আই সি ইউ তে ডাক্তার বাকী বিল্লাহর আন্ডারে ভর্তি হয়। যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন স্বত্বেও রোগীর অবস্থার আরো অবনতি হওয়ার কারনে রাত ১০টায় রোগীকে ভেন্টিলেটরে দেয়া হয় এবং প্রয়জনীয় চিকিতসা চলতে থাকে। ঐ দিন রাতেই এবং পরেরদিন সকালে বিএসএমএমইউ এর শিশু নিউরোলোজীর বিশেষজ্ঞ ডাক্তার কাজী আশরাফ হোসেন এসে রোগীকে পরীক্ষা করেন এবং চিকিতসা প্রদান করেন। কিন্তু ৯ই ফেব্রুয়ারী সারাদিন রোগীর অবস্থা সকল প্রচেস্টা স্বত্বেও আর উন্নতি হয় নি।
বিশেষজ্ঞ ডাক্তার সহ সকল ডাক্তারদের অক্লান্ত পরিশ্রমের পরও ১০ই ফেব্রুয়ারী, ২০১৬, সকাল ৭টা থেকে রোগীর অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকে। সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ডাক্তার বাকী বিল্লাহ এবং ডাক্তার কাজী আশরাফ উভয়েই রোগীর পরীক্ষা করেন এবং রোগীর অবস্থার অবনতির কথা রোগীর স্বজনদের জানান। এমতাবস্থায় রোগীকে কৃত্তিম উপায়ে শ্বাস-প্রশ্বাস ও পালস মেইন্টেইন করা হতে থাকে। এমনকি সকাল ১০টা ২২ মিনিটে রোগীর আর্টারিয়াল ব্লাড গ্যাসও চেক করা হয়। কিন্তু তাঁর কিছুক্ষন পর থেকেই রোগীর অবস্থার আরও অবনতি ঘটতে থাকে এবং ১টা ৪০মিনিটের দিকে মৃত্যুবরন করে।
ঐ সময়েই র্যা ব-২ এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এর ভ্রাম্যমান আদালত হাসপাতাল স্বাভাবিক পরিদর্শনে থাকাকালীন সময়ে রোগীর আত্বীয়স্বজনেরা র্যা ব সদস্যদের নিকট মৃত শিশুকে চিকিতসা প্রদানের মিথ্যা অভিযোগ করেন এবং হাসপাতাল কতৃপক্ষের বিরুদ্ধে অবহেলার অভিযোগ তুলেন। এমনকি তাদের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা জোরপূর্বক আদায় করারও মিথ্যা অভিযোগ তুলেন।
এখানে হাসপাতাল কতৃপক্ষ স্পস্টতঃই জানাতে চায় যে, কোন অবস্থাতেই মৃত রোগীর উপর চিকিৎসা করা হয় নি, বরং বিশেষজ্ঞ ডাক্তার সহ সকল ডাক্তারদের অক্লান্ত পরিশ্রমের পরও শিশুটি মৃতুবরন করে। সর্বসাকুল্যে রোগীর চিকিৎসায় ৩৭,৯৭৮ (সাইত্রিশ হাজার নয়শত আটাত্তর টাকা) বিল করা হয় এবং রোগীর স্বজনরা মাত্র ৭,০০০ (সাত হাজার টাকা) হাসপাতালে জমা করেন। বাকী টাকা না দেয়ার উদ্দেশ্যেই তারা র্যাববের সদস্যগনকে মিথ্যা কথায় বিভ্রান্ত করে এবং টাকা না দিয়েই লাশ নিয়ে চলে যায়।
সুতরাং মৃতশিশুর উপর চিকিতসা প্রদান করে, শিশুর লাশকে বিল তোলার মেশিন বানিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ, গোপন সুত্রে খবর পেয়ে শিশুটির লাশ উদ্ধারে র্যাব সদস্যদের আগমন ইত্যাদি স্বম্পূর্ন মিথ্যা এবং জাপান বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশীপ হাসপাতালের দ্বীর্ঘদিনের সুনামের পরিপন্থি।
জাপান বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশীপ হাস্পাতাল একদল বিশেষজ্ঞ ডাক্তার এর দ্বারা তৈরী এবং এটি কোন ব্যাবসা প্রতিস্টহান নয়। হাসপাতালটি এদেশের চিকিতসা বিজ্ঞানে অনন্য অবদান রেখে চলেছে এবং এদেশের মানুষের সেবা করে যাচ্ছে। আপনারা হাসপাতালটির জন্য দোয়া করবেন। কোন অশুভ শক্তি যেন এর কোন ক্ষতি করতে না পারে। ধন্যবাদ।