তথ্যসূত্রঃ
কো-অর্ডিনেশন অ্যান্ড সাপোর্ট সেন্টার, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
“শাকিবা”
বিরলরোগে আক্রান্ত সাকিবার দায়িত্ব নিলেন ডিজি হেলথের ডিজি মহোদয় এবং মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে।
চাপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার রাধানগর ইউনিয়নের আক্কেলপুর গ্রামের আব্দুল সাত্তারের মেয়ে #শাকিবা। বয়স ২ বছর। আব্দুল সাত্তার পেশায় একজন কৃষক।জন্মের পর থেকেই হাতে একটি ফোস্কা এবং চামড়ায় বিশেষ কিছু দাগ দেখতে পাওয়া যায়। বয়স বাড়ার সাথে সাথে বড় হতে থাকে হাতের ফুলে ওঠা অংশটি। এক সময় পুরো হাত ফুলে ওঠে। একদিকে দারিদ্র, অন্যদিকে রোগ নিয়ে অজানা শঙ্কা শাকিবার পরিবারকে আরো অসহায় করে তুলেছিলো।
সোশ্যাল মিডিয়ার কল্যাণে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এর সম্মানিত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডাঃ আবুল কালাম আজাদের নজরে আসে বিষয়টি। সে মুহুর্তে তিনি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিলেন বিষয়টি নিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এর পক্ষ থেকে শাকিবার চিকিৎসার দায়িত্ব নেওয়ার নির্দেশনা দেন।
সেদিন রাতে যোগাযোগ করা হলো চাপাইনবাবগঞ্জের সিভিল সার্জন ডাঃ কাজী শামীম হোসেন এর সাথে। জানা গেলো, গোমস্তাপুর এর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা কিছুদিন আগেই অন্যত্র বদলী হয়েছেন। তিনি দেরী না করে গোমস্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ সালাউদ্দিন আহমেদ ও ২ জন চিকিৎসক (ডাঃ নাসির উদ্দিন আহমেদ এবং ডাঃ গোলাম সারোয়ার) সহ অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কর্মচারীদের দিয়ে বিশেষ মেডিকেল টিম গঠন করেন। মেডিকেল টীম পরের দিন ২৩ আগস্ট পৌছে যায় শাকিবার বাড়িতে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের ডিজি আবুল কালামের নির্দেশে সোমবার দুপুরে ৭ সদস্যের মেডিকেল টিম শাকিবার বাড়ি যায়। অঞ্চলটি একদিকে যেমন দূর্গম, অন্যদিকে বন্যাপীড়িত। সেখানে পৌছে শাকিবার পরিবারের সাথে কথা বলয়া হয়। প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। রোগের পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস সংগ্রহ করা হয়। শাকিবার পরিবারকে পরিপূর্ণ কাউন্সেলিং করা হয় এবং রোগের ধরণ ও প্রোগনোসিস সম্পর্কে অবহিত করা হয়। অবশেষে চিকিৎসা করাতে রাজী হন শাকিবার পরিবার।
এ সময় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তাগণ সরাসরি শাকিবার পরিবারের সাথে কথা বলেন। এরপর এম্বুলেন্সযোগে শাকিবাকে পৌছে দেওয়া হয় চাপাইনবাবগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে।
সেখানে সিভিল সার্জন ডাঃ কাজী শামীম হোসেন বিকেল বেলা শাকিবার দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং নিজ তত্তাবধানে শাকিবাকে ভর্তি করা হয়। ৩ জন ডাক্তার নিয়ে একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করে দেন তিনি এবং ঐদিনই প্রেস ব্রিফিং এর মাধ্যমে শাকিবার চিকিৎসা পরিকল্পনা গণমাধ্যমকর্মীদের জানানো হয়।এই বোর্ডে সিদ্ধান্ত হবে সাকিবাকে কোথায় রেফার্ড করা হবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এর মহাপরিচালক এ সময় দেশের বাইরে অবস্থান করলেও শাকিবার নিয়মিত খোঁজ খবর নিয়েছেন।
পরবর্তীতে প্রয়োজন হলে শাকিবাকে নিজস্ব রেফারেল সিস্টেমের মাধ্যমে শেখ হাসিনা বার্ণ অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারী ইউনিটেও স্থানান্তরিত করা হতে পারে বলেন জানান সিভিল সার্জন মহোদয়।