ঘটনা ১ঃ রোগী জ্বর নিয়ে এসেছে।
কয়দিন ধরে জ্বর?
স্যার গতকাল রাত থেকে।
ওষুধ খেয়েছেন কিছু?
স্যার রাতে Zimax, সকালে Cef3 এরপরও যখন জর কমেনি দুপুরে Ceftron 2gm দিছে ডাক্তার (কোয়াক)।
বললাম আমার কাছে আর কেন!?
ঘটনা ২ঃ রোগীর পায়ে ব্যাথা।
ওষুধ খাচ্ছেন?
স্যার ট্যাবলেট তো মেলা খাইছি।।কাল
থেকে 1gm (Ceftriaxone) দিছে ডাক্তার সাব।
এরকম হাজার টা উদাহরণ দেয়া যাবে। আপনারা যারা রোগী দেখেন আপনারাও পান।কিন্তু এর পরিনাম কি হচ্ছে? কোথায় গিয়ে দাড়িয়েছে?
জ্বরের রোগী এলে আমার নিজের ই জ্বর চলে আসে। কি দিবো? কাজ হবে তো?
যখন একটা রোগীর কালচার রিপোর্টে সব এন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্ট দেখি আমার কান্না আসে?যখন একটি প্রসাব ইনফেকশন এর রোগীর জ্বর মেরোপেনেম এর মতো এন্টিবায়োটিক দিয়েও কমাতে পারিনা তখন আমার অসহায় লাগে ।। রোগীর লোক যখন জিজ্ঞেস করে ডাক্তার সাহেব এতো টাকা খরচ করালেন জ্বর তো কমেনা! তখন আমি নিরবাক। লজ্জিত!
এর দায়ভার কার?আপনার,আমার নাকি সরকারের?
আজব এক দেশে বাস করি আমরা! যে দেশে সবাই ডাক্তার।যেখানে সরকার প্রশিক্ষণ দিয়ে কোয়াক বানায়। আমাদের কোন এন্টিবায়োটিক পলিসি নাই।থাকলেও নামে মাত্র।আর কতো দিন গেলে আমরা এর বিরুদ্ধে দাড়াবো? কবে বন্ধ হবে এই যথেচ্ছাচার?
এক দিন শ্রদ্ধেয় এম,এ , ফয়েজ স্যার একটা MDR TB র পেশেন্ট কে বলেছিলেন আপনার মত লোক কে গুলি করে মারা উচিৎ ।।। উনার TB ধরা পড়ে ১ মাস ওষুধ খেলে জ্বর কমে গেলে উনি সেটা বন্ধ করেন।এরপর উনার কিছু দিন পরপর জ্বর আসে আর দোকানদার তাকে টিবির ওষুধ দেন।
আমার খুব ভয় হয় আমাদের সন্তানদের জন্য। তারা কি নিয়ে লড়বে? সামান্য একটু ইনফেকশন ওদের জীবন কেড়ে নিবে না তো?খুব ভয় হয়।
ওদের জন্য আমাদের আজ যুদ্ধে নামতে হবে। এ যুদ্ধ হবে যথেচ্ছা এন্টিবায়োটিক ব্যবহার এর বিরুদ্ধে। একটা নীতি মালা, সাথে তার ব্যবহার। কোয়াকরা কতটুকু দিবে? প্রেসকিপশন ছাড়া এন্টিবায়োটিক বিক্রি নিষিদ্ধ হোক।ফুল কোর্স ছাড়া এন্টিবায়োটিক বিক্রি নিষিদ্ধ হোক!! শুধু আইন না। এর প্রয়োগ প্রয়োজন।
আসুন আমরা সবাই সোচ্চার হই। আমাদের সন্তানদের নিরাপদ ভবিষ্যতের জন্য আরও একটা যুদ্ধে নামি …
লেখকঃ ডা. হাবিব
এস. এস. এম সি( 2001-2002)
প্ল্যাটফর্ম ফিচার রাইটারঃ উর্বী সারাফ আনিকা
৫ম বর্ষ
রংপুর কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ।