প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ১ জুন, ২০২০, সোমবার
অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরী
ভিয়েতনাম কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রনের সফলতার পেছনে ছিল চারটা ব্যবস্থা। ৯৪ মিলিয়ন লোকের মধ্যে প্রমাণিত কোভিড-১৯ রোগী ছিলেন মাত্র ৩২৭ জন। অথচ কোভিড-১৯ বিস্তার লাভ করেছে প্রথম দিকের এমন দেশগুলোর অন্যতম ছিল ভিয়েতনাম।
ভিয়েতনাম কি করেছিল ?
১। আগাম কৌশলী টেস্টিং (Early strategic testing):
চীন ১১ জানুয়ারি সে দেশে করোনায় প্রথম মৃত্যুর কথা ঘোষণা করলে অবিলম্বে ভিয়েতনাম টেস্টিং শুরু করে। ভিয়েতনাম বিমান বন্দরে কঠোর স্বাস্থ্য চেকিং শুরু করে। যাত্রীদের তাপমাত্রা মাপন আর কোভিড-১৯ এর উপসর্গ আছে এমন যাত্রী চিহ্নিত করা। দৃঢ় প্রতিপন্ন যাত্রীদের আর সঙ্গী যাত্রীদের আর যারা তাদের সংস্পর্শে এসেছিলেন এদের সবাইকে কোয়ারেনটাইন করা। আগাম এসব কাজ ভাইরাসের বিস্তারকে ধীর করেছে। ভিয়েতনামের সবার টেস্ট করার মত সামর্থ্য ছিলনা, তাই এরা প্রবর্তন করল বেশি উপদ্রুত দেশ ইউরোপ আর আমেরিকা থেকে আসা যাত্রীদের ১৪ দিনের সঙ্গ নিরোধ। এরপর মার্চে ভিয়েতনামে সব বিদেশি ফ্লাইটের আগমন বন্ধ হল।
২। ব্যপক কন্টাক্ট অনুসন্ধান:
সংক্রমণ প্রমাণিত সব লোকের সংস্পর্শে যারা এসেছিলেন বা এসব সংস্পর্শে আসা লোকদের সঙ্গে সাক্ষাত হয়েছিল এমন সবাইকে ভিয়েতনাম অনুসরণ করল আর খুঁজে বের করল। এদের আইসোলেশনে রাখা হল ১৪ দিন। তৈরি করলো একটি এপ (APP) যেখানে জনগণ প্রতিদিন তাদের স্বাস্থ্য অবস্থা আর তাদের প্রতিবেশে কোন সংক্রমণ ঘটলে এসব খবর রিপোর্ট করতে পারে।
৩। শক্তিশালী জনসচেতনতা:
জনগণের কাছে খুব কার্যকর ভাবে বার্তা পৌঁছানো হল। হাত ধোয়া সম্বন্ধে তৈরি করা হলো একটি মিউজিক ভিডিও। এমন একটি স্থল লঞ্চ করা হলো যেখানে জনগণ স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষা সরঞ্জাম ব্যয় ভার বহনের জন্য অর্থ দান করতে পারে। লক্ষ লক্ষ মানুষ দান করলো। এতে ভাইরাসের বিস্তার সম্বন্ধে গড়ে উঠল ব্যপক জনসচেতনতা।
৪। ভিয়েতনাম উদ্ভাবন করলো নিজস্ব টেস্টিং কিট:
বিজ্ঞানীরা এমন টেস্ট উদ্ভাবন করলেন যার ফলাফল পাওয়া গেলো ১ ঘণ্টার মধ্যে। এভাবে টেস্টিং কিট আমদানি না করেও ভিয়েতনাম খুব কার্যকর ভাবে কোভিড-১৯ নির্ণয় করলো।
২০০৩ সালে SARS (Severe Acute Respiratory Syndrome) এর অভিজ্ঞতা তাদেরকে এমন কার্যকর কর্ম সম্পাদনে সহায়ক হয়েছিল। চীন থেকে প্রথম SARS বিস্তার লাভ করে ভিয়েতনামে।