খুলনায় র্যাব-৬ সদস্যারা নগরীর বিভিন্ন ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ফার্মেসিতে অভিযান চালিয়ে ৭ জন ভুয়া চিকিৎসককে আটক করেছে।
বুধবার সকাল থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত চলা অভিযানে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে তাদের বিভিন্ন মেয়াদের সাজা দিয়ে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। আটককৃতরা হলো- গাউসুল আযম, ফেরদৌস রহমান, সৌমেন মিত্র, ইব্রাহিম বাহাদুর, কান্তি লাল, পঞ্চানন মহলী ও অনুপ মিত্র।মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন ব্যাব-৬ এর ম্যাজিস্ট্রেট এ এইচ এম আনোয়ার পাশা। এসময় উপস্থিত ছিলেন ব্যাব-৬ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল এনামুল আরিফ ও খুলনা সিভিল সার্জনের প্রতিনিধি সিনিয়র মেডিক্যাল অফিসার ডা. মো. মাসুদ সাত্তার।
র্যাব-৬ এর ম্যাজিস্ট্রেট এ এইচ এম আনোয়ার পাশা বলেন, ভুয়া চিকিৎসক গাউসুল আযমকে ৯ মাসের জেল, ১ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে ৩ মাসের কারাদন্ড, মিমি নার্সিং হোমের চিকিৎসক ফেরদৌস রহমানকে ২ বছর কারাদন্ড ১লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে ৩ মাসের জেল, এন ডায়াগনস্টিক সেন্টারের চিকিৎসক সৌমেন মিত্রকে ৯ মাস কারাদন্ড, ১ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে ৩ মাস কারাদন্ড, রংধনু ক্লিনিকের চিকিৎসক ইব্রাহিম বাহাদুরকে ৯মাস কারাদন্ড, ১ লাখ টাকা জরিমান অনাদায়ে আরো ৩ মাস কারাদন্ড, কান্তি লালকে ১ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে ৩ মাসের কারাদন্ড, খুলনা ডায়াগনস্টিক সেন্টারের চিকিৎসক পঞ্চানন মহলীকে ২ বছর কারাদন্ড, ২লাখ জরিমানা অনাদায়ে ৩ মাসের কারাদন্ড এবং সেবা ক্লিনিকের চিকিৎসক অনুপ মিত্রকে ২ বছর কারাদন্ড, ২ লাখ জরিমানা অনাদায়ে আরো ৩ মাসের কারাদন্ড দেয়া হয়েছে।
র্যাব-৬ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল এনামুল আরিফ বলেন, চট্টগ্রামে র্যাবের অভিযানে ৮জন ভুয়া চিকিৎসককে আটক করা হয়। আটককৃত চিকিৎসকরা জানান, ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনাসহ বাংলাদেশে ২৫০ জন ভুয়া চিকিৎসক রয়েছে। ওই চিকিৎসকরা তাদের নামের পাশে এমবিবিএস, এমডি, পিএইচডি, পিজিটি প্রভৃতি ডিগ্রি ব্যবহার করে প্রতারণা করে আসছিল। ওই তথ্যের ভিত্তিতে বুধবার আমরা অভিযান পরিচালনা করি। চিকিৎসা দেয়া অবস্থায় তাদের আটক করা হয়েছে। পরে তাদের জরিমানা করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
র্যাব-৬ এর অধিনায়ক আরও জানান, অধিকাংশ ভুয়া চিকিৎসকেরই শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি বা তারও নিচে। দিনের পর দিন তারা প্রতারণা করে ঝুঁকিপূর্ণ চিকিৎসা সেবা দিচ্ছিলেন রোগীদের। গ্রেফতারকৃত ৩/৪ জন বিজ্ঞান বিষয়ে লেখাপড়া না করেও এমবিবিএস বনে গেছেন। এসব ভুয়া ডাক্তারের স্বার্থ রক্ষায় একটি সংগঠনও রয়েছে বলে জানান র্যাব-৬ এর অধিনায়ক।
তিনি জানান, ২০০৫ সালে ঢাকায় প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি এবং পরবর্তীতে ওই প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তন করে পিচ-ব্লেন্ড বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নামে সার্টিফিকেট বিক্রির কার্যক্রম চালায় প্রতিষ্ঠানটি। খুলনার ভুয়া চিকিৎসকদের বেশ কয়েকজন সেখান থেকে সার্টিফিকেট কিনেছেন।
র্যাবের অধিনায়ক আরও জানান, গ্রেফতারকৃত ভুয়া চিকিৎসকরা পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া না ভেবেই রোগীদের উচ্চমাত্রার এন্টিবায়োটিকসহ ৫ ধরনের ওষুধ লিখে দিতেন। যা রোগীর জন্য খুবই ক্ষতিকর।
র্যাব জানায়, নগরীর ৩১০ নম্বর খানজাহান আলী রোডে ভুয়া চিকিৎসক জি এম মৃধাকে গ্রেফতারের জন্য অভিযান চালানো হলেও তাকে সেখানে পাওয়া যায়নি।