বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০২৫
ভুল চোখে অস্ত্রোপচারের নামে গণমাধ্যম বিকৃত তথ্য প্রকাশ করেছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আই হসপিটাল ও ইন্সটিটিউট কর্তৃপক্ষ।
আজ বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) আই হসপিটাল থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ বিষয়ে জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, ‘সম্প্রতি কিছু ইলেকট্রনিক, প্রিন্ট মিডিয়া এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাংলাদেশ আই হসপিটাল অ্যান্ড ইনস্টিটিউট এ রোগীর ‘ভুল চক্ষু অস্ত্রপচার’ ঘটেছে বলে রোগীর স্বজনদের দ্বারা দাবি করা হয়েছে। এই প্রতিবেদনে রোগীর সাথে সংশ্লিষ্টদের ভাষ্য সম্পূর্ন ভিত্তিহীন ও প্রকৃত ঘটনাকে সম্পূর্ন বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।’
‘এমতাবস্থায় জরুরি ভিত্তিতে হাসপাতালের নির্বাহী কমিটির একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভায় ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। উক্ত তদন্ত কমিটি ১৫ই জানুয়ারি ২০২৫ তারিখে বিকেল সাড়ে তিনটার সময় একটি মিটিং এর আয়োজন করেন।’
‘উক্ত মিটিং এ শিশুটির চিকিৎসার সাথে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন। উক্ত তদন্ত কমিটি প্রাথমিক তদন্তে জানতে পারেন যে, গত ১৪ই জানুয়ারি ইরতিজা আরিজ হাসান নামে ১৮ মাস বয়সী একজন শিশু রোগী চোখের চিকিৎসার জন্য শিশু চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা. সাহেদ-আরা বেগম, কনসালটেন্ট, বাংলাদেশ আই হসপিটাল অ্যান্ড ইনস্টিটিউটের নিকট আসেন এবং তিনি চোখের পাতার নীচে করেন বডি (চোখের পাপড়ি) ও কর্নিয়াল অবরেইজনের অস্থিত্ব যা চোখের কর্ণিয়ার ক্ষতির কারণ হতে ত পারে বিধায় তা বের করে আনার পরামর্শ প্রদান করেন।’
‘উক্ত চিকিৎসাটি কোন অস্ত্রোপচার ছিল না। ছোট শিশু, তাই আউটডোরে এর চিকিৎসা সম্ভব নয় বিধায় অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে এক্সামিনেশন আন্ডার অ্যানেসথেশিয়া দিয়ে সম্পূর্ণ চিকিৎসা করার জন্য। তিনি দুই চোখ পরীক্ষা করে প্রথমে ডান চোখ থেকে চোখের পাপড়ি সরিয়ে দেন। পরবর্তীতে শিশুটির মা-বাবার কথার ভিত্তিতে বাম চোখ পুনরায় পরীক্ষার জন্য অপারেশন রুমে নিয়ে যান এবং বাম চোখ থেকেও চোখের পাপড়ি বের করেন। চোখের উপরিভাগের ঘর্ষনজনিত সমস্যা হতে দ্রুত নিরাময়ের জন্য ওই শিশুটির চোখ ব্যান্ডেজ করে দেওয়া হয়। এটি এই ধরনের চিকিৎসার স্বীকৃত ও প্রচলিত পদ্ধতি, যা কোন অস্ত্রপচার বা অপারেশন নয়। পরবর্তী চিকিৎসা ব্যাবস্থা যথাযথ অনুসরন করা হলে শিশুটির চোখের কোন সমস্যা হবে না।’
‘চিকিৎসার সাথে সাথে শিশুটির সাথে থাকা মা-বাবাকে পরবর্তী চিকিৎসা ব্যবস্থা পুরোপুরি বুঝিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু রোগীর মা-বাবা এবং আত্মীয়স্বজন চিকিৎসা প্রক্রিয়ার পুরো অংশটি বুঝতে ভুল করেন। তারা পরবর্তীতে তদন্ত কমিটির কাছে কোন অভিযোগ না দিয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন যে, ধারালো অস্ত্র দিয়ে শিশুটির চোখে ক্ষতিসাধন করা হয়েছে। অথচ তদন্ত কমিটির পক্ষ থেকে বারবার যোগাযোগ করা হলেও তারা আসতে বা সহায়তা করতে অপারগতা প্রকাশ করেন। ফলে তারা বাংলাদেশ আই হসপিটাল অ্যান্ড ইনস্টিটিউটের মত স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানের পুরো চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা নিয়ে যা যা বলেছেন তা ভিত্তিহীন এবং অপপ্রচারের মামিল।’
‘বাংলাদেশ আই হসপিটাল অ্যান্ড ইনস্টিটিউট স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং মান সম্মত চিকিধান্য প্রদানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই বিষয়ে বা অন্য যেকোন বিষয়ে আরও প্রশ্ন থাকলে বা সঠিক তথ্য প্রয়োজন হলে দয়া করে আমাদের অফিসিয়াল প্রতিনিধিদের সাথে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ জানানো হচ্ছে’, বলা হয় বিবৃতিতে।
প্ল্যাটফর্ম/