প্ল্যাটফর্ম নিউজ ডেস্কঃ
ভুল স্বীকার করে বৃক্ষমানব আবুল বাজানদার আবারও হাসপাতালে ফিরেছেন। সোমবার (২১ জানুয়ারি) বোর্ড গঠন করে তার চিকিৎসা নতুন করে শুরু করা হবে।
আজ রবিবার সকাল ১০ টায় মা আমেনা বেগমকে সঙ্গে করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে আসেন আবুল। বর্তমানে তিনি বার্ন ইউনিটে অবস্থান করছেন। তার হাতে নতুন করে শেকড় গজিয়েছে।
আবুল জানায় ২০১৬ সালে আমি ঢামেকের বার্ন ইউনিটে ভর্তি হই। আড়াই বছর হাসপাতালে ছিলাম। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহযোগিতা আর এখানকার চিকিৎসকরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে আমার হাতে ও পায়ে ২৫টি অস্ত্রোপচার করে। আমি তাদের কাছে কৃতজ্ঞ। কিন্তু এক পর্যায়ে আমি হতাশ হয়ে যাই। এতগুলো অপারেশনের পরেও আমি যখন সুস্থ হচ্ছি না, আমার হাতে ও পায়ে আবারও শেকড় গজাচ্ছে। তখন আমি নিরাশ হয়ে একপর্যায়ে রাগের মাথায় খুলনায় বাড়িতে চলে যাই।
এখন আমি ভুল বুঝতে পেরেছি, আমার যাওয়াটা ঠিক হয়নি। আমি আবারও বাঁচতে চাই, সাধারণ মানুষের মতো সুস্থ হয়ে কাজ করে খেতে চাই। আবারও ফিরে এসেছি চিকিৎসার জন্য। ডা. স্যার আমাকে আবারও চিকিৎসা করাবেন বলে জানিয়েছেন।
ঢাকা মেডিকেল বার্ন ইউনিটের সমন্বয়কারী ডাক্তার সামন্ত লাল সেন জানান, বাজানদার হাসপাতাল ছেড়ে যাওয়ার পর থেকেই ওর সঙ্গে আমি বার বার ফোনে যোগাযোগ করেছি। তাকে ফিরে আসতে বলেছি। সে ঠিকই ফিরে এসেছে তবে অনেক দেরি হয়ে গেছে। সোমবার (২১ জানুয়ারি) ভর্তি করে বোর্ড গঠনের পাশাপাশি তার চিকিৎসার সব সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
আবুল বাজানদার গত ১০ বছর ধরে হাত-পায়ে শেকড়ের মতো গজিয়ে ওঠা বিরল এক জেনেটিক রোগে ভুগছিলেন।
২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার চিকিৎসার জন্য পাঁচ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সব খরচ রাষ্ট্রীয়ভাবে করার নির্দেশ দেন। গত দু’বছরে তার ওপর ২৫ দফা অস্ত্রোপচার চালানো হয়।
চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ এনে ঢামেক হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যান আবুল বাজানদার।
২০১৬ সালের ৩০ জানুয়ারি ৫১৫ নম্বর কক্ষে জায়গা হয় আবুল বাজনদারের। মে মাসের ৮ তারিখ থেকে তিনি ৬১১ নম্বর কক্ষে ছিলেন। শনিবার তিনি এই কক্ষ থেকেই স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে বাড়ির উদ্দেশে যাত্রা করেন।
আবুল বাজনদার এই হাসপাতালে রেকর্ড সৃষ্টি করেছেন। এত বেশি সময় কোনো রোগীর অবস্থান ঢাকা মেডিকেলের নেই বলে জানিয়েছিলেন প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ খান আবুল কালাম আজাদ।