নিপাহ থেকে বাচতে চাইলে আজই কাচা খেজুরের রস খাওয়া বন্ধ করুন!
শুধুমাত্র কাচা খেজুরের রস খাওয়া বন্ধ করলে ৯৯ % নিপাহ এনক্যাফালাইটিস কমে যাবে! নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর ৭০ % ই মারা যাই! আর যারা বেচেঁ থাকে তারাও কেও পুরোপুরি সুস্থ হয় না! হয় বোবা হয়ে যাই, না হয় হাত পা কাজ করে না, না হয় স্মৃতিভ্রষ্ট হয়ে যাই!
কখন হয় ??
এই ভাইরাস সাধারনত মহামারি আকার ধারন করে ডিসেম্বর থেকে মে মাস পর্যন্ত! গত ২০১৩ এর ডিসেম্বার থেকে মে ২০১৪ পযর্ন্ত এই ভাইরাসে ২৭ জন আক্রান্ত হয়ে মারা যাই ১৪জন আর এই বছর এই পর্যন্ত ৯ জন আক্রান্ত হয়ে ৬ জন মারা গেছে বলে খবর পাওয়া গেছে!
কোন অঞ্চলে বেশি হয়??
খেজুরের রস উৎপাদন যে অঞ্চলে বেশি হয় সেই এলাকাতে এই রোগের প্রাদুর্ভাব সবচেয়ে বেশি সেই হিসাবে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হলো, ফরিদপুর, রাজবাড়ি, মাগুরা, রংপুর ,দিনাজপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী প্রভূত অঞ্চল! তবে যশোর ঝিনাইদহ, খুলনা এলাকা ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হলেও এখন পর্যন্ত কোন রোগি সনাক্ত করা সম্ভাব হয়নি!
খেজুরের রস পানরত অবস্থায় বাদুর
কিভাবে ছড়ায়??
এই রোগ ছড়ায় সাধারনত বাঁদুরের মাধ্যমে! সেই হিসাবে শীত আসলে বাদুর যখন খেজুরের রস খেতে যাই তখন তার প্রস্রাব কিংবা লালা রসের ভিতর যাই আর এই রস খেলে মানুষের ভিতর রোগ প্রবেশ করে! এছাড়া বাদুরে খাওয়া ফল খেলে অথবা বাদুরের লালা কিংবা প্রস্রাব যুক্ত ফল খেলে এই রোগ হতে পারে! আর একবার যদি কেও এই রোগে আক্রান্ত হয় তাহলে তার আশপাশে যদি উপযুক্ত প্রটেকশন নিয়ে না যাওয়া হয় তাহলে তারও এই রোগ হবার সমুহ সম্ভাবনা আছে! তবে যারা শুকুর পালন করে অথবা এর আশপাশে থাকে তাদেরও এই রোগ হতে পারে! সবচেয়ে মজার বিষয় বাদুর আক্রান্ত খেজুরের রস দিয়ে যদি তাড়ি তৈরি করা হয় তাহলে ঐ তাড়ি যে খাবে তারও নিপাহ এনক্যাফালাইটিস হতে পারে!
নিপাহ ট্রিটমেন্ট কি??
সত্যি বলতে নিপাহ এনক্যাফালাইটিস এর ডেফিনেটিভ ট্রিটমেন্ট এখন আবিষ্কার হয়নি তবে আমরা সাপোরেটিভ ট্রিটমেন্ট এর মাধ্যমে রোগকে কন্ট্রোলে আনতে পারি!তাছাড়া অনেক গুলো অনগোয়িং ট্রায়েল থেরাপি চলছে এই রোগের হাত থেকে বাচতে!
তাহলে এই রোগ থেকে বাচতে হলে আমাদেরকে কি করতে হবে?
প্রতিরোধ ব্যাবস্থা নিতে হবে! আর এই প্রতিরোধ ব্যাবস্থা গুলো হলো
১। কাচা খেজুরের রস খাওয়া সম্পুর্ন নিষেধ!
২। খাও ফল কখনো খাওয়া যাবেনা।
৩। সব সময় ফল ধুয়ে খেতে হবে!
৪। আক্রান্ত কারো কাছ থেকে আশার পর ভালোভাবে হাত মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে
৫। আক্রান্ত ব্যাক্তিকে যতো তাড়াতাড়ি সম্ভাব নিকটস্থ সরকারি হাসপাতালে নিতে হবে!
চিকিৎসক এবং সেবিকাদের করণীয় কি??
আক্রান্ত ব্যাক্তির ট্রিটমেন্ট দিতে যাওয়া সেবিকা কিংবা চিকিৎসকরা কিভাবে এই রোগ থেকে বাচবে? হ্যা, অবশ্যই রোগীকে হাসপাতালের নিদিষ্ট আইসোলেটেড ওয়ার্ডে তাদের চিকিৎসা দিতে হবে! চিকিৎসকরা ১০০% প্রোটেকশন ছাড়া কখনোই রোগির কাছে যাবেনা কারন রোগি বাচাতে গিয়ে নিজে মরার কোন অর্থ হয় না! কমপ্লিট প্রোটেকশন সেট প্রতিটি সরকার নিধারিত হাসপাতালে দেওয়া আছে!
এই রোগ হলে কিভাবে বুঝবো???
যদি কোন ব্যাক্তি হঠাৎ জ্বরে আক্রান্ত হবার পর মুর্ছা যাই, প্রলাপ বকে, অজ্ঞান হয়ে যাই সাথে মাথা ব্যাথা, বমি হয় কিংবা ডাইরিয়া হয় এবং সাথে ২ থেকে ১৪ দিনের ভিতর খেজুরের রস খাওয়ার ইতিহাস থাকে তাহলে আমরা প্রাথমিক ভাবে নিপাহ এনক্যাফালাইটিস ধারনা করতে পারি!
রোগী পাওয়া গেলে কি করবে???
এই ধরনের কোন রোগী পাওয়া গেলে সাথে সাথে সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে অথবা আইইডিসিআর এর হটলাইনে যোগাযোগ করতে হবে! আইইডিসিআর এর হট লাইন- 01937110011 …..( শুধুমাত্র চিকিৎসকদের জন্য)
সবায় ভালো থাকুন!
সবায় সুস্থ থাকুন!
প্ল্যাটফর্মের জন্য সম্পাদনা করেছেন,
ডাঃ আজিজুর রহমান
আবাসিক মেডিকেল অফিসার,
উপজেলা স্বাস্থকমপ্লেক্স, কোটচাঁদপুর পুর, ঝিনাইদহ