প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ২২ জুলাই ২০২০, বুধবার
গত ১৮ জুলাই রোজ শনিবার, আলমডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. আশরাফুন নাহার নীনা ও আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মোর্তজা আরেফিনকে লাঞ্চনা করার অভিযোগে আব্দুর রহিমকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গত ১৬ জুলাই, রোজ বৃহস্পতিবার, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মেডিকেল অফিসার ডা. আশরাফুন নাহার নীনা দুপুরে দায়িত্ব পালন করছিলেন। এ সময় কুমারী ইউনিয়নের যাদবপুর গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে আব্দুর রহিম তার বাবার পায়ের পীড়ার সমস্যা সংক্রান্ত বিষয়ে কথা বলতে হাসপাতালে ঢোকেন। ডা. আশরাফুন নাহার নীনা তার পিতাকে হাসপাতালে নিয়ে আসার পরামর্শ দেন এবং রোগীকে না দেখে ব্যবস্থাপত্র না দেওয়ারও কথা বলেন।
কিন্ত রহিম তার বাবার অনুপস্থিতিতেই চিকিৎসার ব্যবস্থাপত্র দিতে চাপাচাপি করতে থাকেন এবং তাদের মধ্যে এ নিয়ে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। এরমধ্যেই ক্ষীপ্ত হয়ে আব্দুর রহিম ডা. নীনার চুলের মুঠি ধরে হাসপাতাল থেকে বের করে দেয়ার হুমকি দেন। ঘটনার আকস্মিকতায় অসহায় হয়ে পড়েন ডা. নীনা। এক পর্যায়ে অপর একটি কক্ষ থেকে বেরিয়ে আসেন হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আরএমও ডা. মোর্তজা আরেফিন। ডাক্তার আরেফিন ও নীনা রহিমকে ধরে আটকে ফেলতে যান। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। হাসপাতালের কলাপসেবল গেইটে তালা লাগিয়ে দেওয়ার আগেই জোরাজুরি করে রহিম দ্রুত হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যান।
এরপর থেকেই পলাতক ছিলেন রহিম। শনিবার দিনগত গভীররাতে পাবনার রূপপুরে আত্মগোপনে থাকা রহিমকে গ্রেফতার করা হয়।
থানার অফিসার ইনাচার্জ আলমগীর কবীর বলেন, “করোনা মহামারিতে দেশের চিকিৎসকরা সন্মুখযোদ্ধা। অকারণে হাসপাতালে ঢুকে মাস্তানি ও ডাক্তারকে লাঞ্চনা করার ঘটনার পরপরই পুলিশ অভিযুক্ত রহিমকে আটকের জোর চেষ্টা করছিল। অবশেষে তাকে ৪৮ ঘন্টার মধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে।”
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আমিনুল ইসলাম বলেন, “ঘটনার পরপর পুলিশের সাড়াশি অভিযানে রহিম পাবনার রূপপুরে পালিয়ে যায়। মোবাইল ট্র্যাকিং করে আসামী রহিমের অবস্থান জানতে পারি। শনিবার রাতে রূপপুর থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।”
ডাক্তার নীনা বলেন, “পৌনে দুইটার সময় অপারেশন থিয়েটারের দিকে যাচ্ছিলাম। এ সময় একজন এসে বলেন, তার বাবার পায়ে কাটা ফুটেছে ওষুধ লিখে দিতে। আমি বলেছি, আপনার বাবাকে নিয়ে আসুন তার পায়ের অবস্থা দেখে চিকিৎসা দেব। কিন্তু তিনি রেগে গিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। চুলের মুঠি ধরে হাসপাতাল থেকে বের করে দেয়ারও হুমকি দেয়।”
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা হাদি জিয়াউদ্দিন আহমেদ বলেন, “রহিম নামের একজন হাসপাতালে ঢুকে কর্তব্যরত ডাক্তারকে গালিগালাজসহ হেনস্থা করেছে। তার নামে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল।” অভিযুক্ত রহিমকে গ্রেফতার করায় তিনি পুলিশকে ধন্যবাদ জানান।
নিজস্ব প্রতিবেদক/ দিলোয়ারা ইয়াসমিন প্রিয়া