সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪
মাত্র ১৪ জন চিকিৎসক দিয়ে চলছে রাজবাড়ী জেলার চিকিৎসা সেবার প্রধান প্রতিষ্ঠান ২৫০-শয্যার রাজবাড়ী আধুনিক হাসপাতাল। এ হাসপাতালের উপর নির্ভরশীল জেলায় বসবাসরত ১২-১৪ লক্ষাধিক মানুষ। প্রতিদিন হাজারও রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসলেও হাসপাতালটি নিজেই নানা সমস্যায় জর্জরিত।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে,উন্নত চিকিৎসার জন্য জেলার এ প্রধান হাসপাতালটিতে প্রয়োজনীয় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও সহায়ক জনবল, যন্ত্রপাতি, ওষুধ, শয্যা প্রভৃতির সংকট রয়েছে। কাগজে-কলমে একশ থেকে ২৫০ শয্যায় উন্নীত হলেও সাড়ে চার বছরে শেষ হয়নি রাজবাড়ীর সদর হাসপাতালের নতুন ভবনের নির্মাণ কাজ। ফলে পুরাতন ভবনগুলোতে স্বল্প জনবল নিয়েই চলছে চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম।
২৫০ শয্যায় এ হাসপাতালে মাত্র ১৪ জন চিকিৎসক নিয়ে জোড়াতালি দিয়ে চলছে মেডিসিন, সার্জারি ও কার্ডিওলজির মতো গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ। ১০জন সিনিয়র কনসালট্যান্টের পদ শুন্য। ১১ জন জুনিয়র কনসালট্যান্টের বিপরীতে রয়েছেন মাত্র ৩জন এবং ১৫জন মেডিকেল অফিসারের পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন ১১জন।
এছাড়া নার্সসহ বিভিন্ন পদে রয়েছে জনবল সংকট। স্বল্প জনবল নিয়ে রোগীদের সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, এই হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে ৩০০ থেকে ৪৫০ জন রোগী ভর্তি থাকেন। বহিঃর্বিভাগে প্রতিদিন চিকিৎসা নিতে আসেন গড়ে ৫৫০ থেকে ৬৫০ জন। এরপর প্রশাসনিক কাজ, ময়নাতদন্ত, ফরেনসিক টেস্ট-সহ বিভিন্ন কার্যক্রম সীমিত জনবল নিয়ে সম্পন্ন করতে হয়।
এ হাসপাতালে শিশুদের জন্য নির্ধারিত ২৫ টি শয্যা থাকলেও এখানে রোগীর সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি থাকে। প্ল্যাটফর্মের এ প্রতিবেদন লেখার সময় হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি আছে ৪৩ জন। শয্যা না থাকায় ভর্তি হওয়া শিশু রোগীদের অনেককেই বাধ্য হয়ে হাসপাতালের অপরিচ্ছন্ন মেঝে, বারান্দা, সিঁড়ি ঘরের পাশে অবস্থান করতে হয়।
রাজবাড়ীর গণপূর্ত বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালের মার্চে ৫৫ কোটি ৭০ লাখ টাকা ব্যয়ে রাজবাড়ীর ১০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালটি ২৫০ শয্যায় উন্নীতকরণ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। প্রথম পর্যায় অর্থাৎ নিচ থেকে ছয় তলা পর্যন্ত কাজটি বাস্তবায়ন করছে সালাম কনস্ট্রাকশন নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এবং দ্বিতীয় পর্যায় সপ্তম থেকে অষ্টম তলা পর্যন্ত করছেন মো. খলিল কনস্ট্রাকশন। এই ভবনে চারটি লিফটসহ রোগী ও স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য থাকবে আধুনিক সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা। কিন্তু এখনো পর্যন্ত ভবনের কাজ সম্পন্ন করা হয়নি।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ১০০ শয্যারও কম জনবল দিয়ে সেবা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। নানা সংকটের মধ্যেও সর্বোচ্চ সেবা প্রদানের চেষ্টা করা হচ্ছে। ২৫০-শয্যা বিশিষ্ট রাজবাড়ী আধুনিক হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোহাম্মদ আবদুল হান্নান মোল্লা প্ল্যাটফর্মকে জানান, ১০০ শয্যা থেকে ২৫০ শয্যায় উন্নীত করা হলেও হাসপাতালের অবকাঠামো ও জনবল বাড়েনি। এসব বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে লিখিতভাবে অবহিত করা হয়েছে।
প্ল্যাটফর্ম প্রতিবেদক: মঈন উদ্দিন আহমদ শিবলী