মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল, ২০২৫
মেডিকেল ভর্তি কোচিং প্রতিষ্ঠান মেডিকোর প্রতিষ্ঠাতা ডা. জুবায়দুর রহমান জনি তার বিরুদ্ধে করা প্রশ্নফাঁস মামলাকে ‘পুরোপুরি ষড়যন্ত্র’ বলে দাবি করেছেন। মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন তিনি।
তিনি অভিযোগ করেছেন, তাকে জড়িয়ে ষড়যন্ত্রমূলক মামলার সুযোগে তার পরিবারের কাছে পাঁচ কোটি টাকা দাবি করা হয়। এর মধ্যে ছয় কিস্তিতে চার কোটি টাকা আদায় করা হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘আমি যখন আটক ছিলাম, তখন আমার স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যদের স্কাইসিটি হোটেলে ডেকে মুক্তির বিনিময়ে পাঁচ কোটি টাকা দাবি করা হয়। পরে আমার পরিবার ৪ কোটি টাকা দিয়েছে ছয়টি কিস্তিতে। টাকাগুলো আগারগাঁও এলাকা থেকে এসে নিয়েছেন সাব-ইন্সপেক্টর মেহেদী হাসান।’
তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘আমার স্ত্রীকে কেন স্কাইসিটি হোটেলে ডাকা হয়েছিল? কেন আমাকে মেরে ফেলার ভয় দেখানো হয়েছিল? এটা কি শুধুই তদন্তের অংশ, না কোনো চক্রান্ত?’
২০২৩ সালের জুলাইয়ে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস নিয়ে সিআইডি তদন্ত শুরু করে। তার ধারাবাহিকতায় ২৩ আগস্ট ভোরে সাদা পোশাকে পুলিশ ডা. জনিকে তার বাসা থেকে আটক করে। তিনি দাবি করেন, কোনো তদন্ত বা প্রমাণ ছাড়াই তাকে গ্রেপ্তার করা হয় আর এ প্রক্রিয়াটি ছিল অত্যন্ত অসম্মানজনক ও ভয়াবহ।
গ্রেপ্তারের সময় তার স্ত্রী ও শিশু সন্তান ঘরে ছিলেন। ডা. জনি বলেন, ‘আমি বলেছিলাম একটু সময় দিন, আমার স্ত্রী কাপড় পাল্টানোর সুযোগ পাক। কিন্তু কোনো কথা না শুনেই পুলিশ জোর করে রুমে ঢুকে পড়ে।’ পরে তাকে থানায় নেওয়ার পর শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয় এবং হাত ভেঙে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
মেডিকো কর্ণধার অভিযোগ করেন, হেফাজতে থাকার সময় তাকে চিকিৎসা নিতে দেওয়া হয়নি, এমনকি আদালতের নির্দেশের পরও তাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে অস্বীকৃতি জানায় পুলিশ। পরে আদালতের চাপের মুখে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হলেও তা পর্যাপ্ত ছিল না।
ডা. জনির ভাষ্য অনুযায়ী, তাকে শুধু হয়রানি নয়, বরং আর্থিকভাবে নিঃস্ব করার জন্য একটি প্রাতিষ্ঠানিক চক্রান্ত চালানো হয়েছে। ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করে দেওয়া হয়, পরিবারকে ভয় দেখানো হয় এবং হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে ধারাবাহিকভাবে হুমকি দেওয়া হয়।
তার অভিযোগ, ২৭ ঘণ্টা আটকে রেখে তাকে আদালতে তোলা হয়, যা বেআইনি। পুরো প্রক্রিয়াটিকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত উল্লেখ করে ডা. জনি বলেন, ‘আমি যুবদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকলে আমার পেশা ছিল ভিন্ন একটি জগৎ, যেখানে রাজনৈতিক কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। আমরা মনে করছি, আমাকে শুধু রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে টার্গেট করা হয়েছে।’
ডা. জনি তার পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি এ ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেন। তার প্রশ্ন, ‘যদি আমি দোষীই হতাম, তাহলে তদন্তে প্রমাণ তুলে ধরা হতো। কিন্তু সেটা না করে কেন টাকার জন্য এমন চাপ দেওয়া হলো?’
প্ল্যাটফর্ম/