reflex hammer এর ইতিহাসটার সূচনা হয় ১৮৭৫ সালে যখন হাইনরিক আর্ব ও কার্ল ফ্রেডরিক ওটো ওয়েস্টফাল ‘pattelar reflex’ এর ওপর তাঁদের বিখ্যাত গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন। এর পর থেকেই মূলত এই রিফ্লেক্স দেখার জন্যে নানা রকম পদ্ধতির চিন্তা ভাবনা শুরু হয়। আর এ ধারাবাহিতায় প্রথম ব্যবহৃত যন্ত্রটি ছিল ‘percussion hammer’।
এই ফাঁকে পারকাশন হ্যামারের কাহিনীটাও ছোট করে বলে ফেলার লোভ সামলাতে পারছি না। ? ‘Thoracic percussion’ পদ্ধতির জন্ম হয় ১৭৬১ সালে লিওপার্ড অয়েনব্রাগার এর হাত ধরে। পদ্ধতিটা তিনি পেয়েছিলেন তাঁর পিতার কাছ থেকে যিনি এ পদ্ধতি পিপের মধ্যে বিয়ার বা ওয়াইনের লেভেল সনাক্ত করতে ব্যবহার করতেন। পারকাশনের জন্যে প্রথম হ্যামার তৈরি করেন জার্মান চিকিৎসক ম্যাক্স উইনট্রিক ১৮৪১ সালে। (ছবি কমেন্টে) পরবর্তীতে এর আরো উন্নতি সাধিত হয়।
টেন্ডন রিফ্লেক্স আবিষ্কৃত হবার পর এ কাজে পারকাশন হ্যামার ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হতে থাকে, যদিও এক্ষেত্রে এর উপযোগিতা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই গিয়েছিল। রিফ্লেক্স দেখার জন্যে প্রথমবারের মতো বিশেষায়িত হ্যামারের ডিজাইন উপস্থাপন করেন জন মেডিসন টেইলর ১৮৮৮ সালে ‘Philadelphia neurological society’ এর সভায়, যার আদল অনেকটা বর্তমানে ব্যবহৃত ত্রিকোণাকার হ্যামারের মতোই ছিল। (চিত্র-১) টেইলর তাঁর আবিষ্কারকে উপস্থাপন করেন “a cone flattened on the opposite side, with apex and base carefully beveled or rounded, of about the thickness throughout of the human index finger. … The special feature of this hammer is that the shape of the striking surface is like the outer surface of the extended hand, palm downward, which is more often used in obtaining tendon jerk.”
রিফ্লেক্স হ্যামারের আরেকটি জনপ্রিয় মডেল উপস্থাপন করেন উইলিয়াম ক্রিস্টোফার ক্রস ১৮৯৪ সালে ‘American neurological association’ এর সভায়। (চিত্র-২) তাঁর হ্যামারে দুটো রাবারের গোলকখন্ড ছিল, বড়টি প্যাটেলার রিফ্লেক্স এর জন্য, আর ছোটটি বাইসেপস রিফ্লেক্স এর জন্য। হাতলের নিচের অংশ ছিল শক্ত রাবারের তৈরী, আর উপরের অংশ ধাতুর তৈরী। এতে আরো একটা সুবিধা পাওয়া যেত, রাবারের তৈরী অংশটুকু ঘর্ষণের ফলে গরম হয়ে থাকতো, আর ধাতব অংশ ঠান্ডা থাকতো। এর মাধমে শৈত্য আর তাপ সংবেদনশীলতাও দেখা যেত। এ মডেলটির আরো একটি সংস্করণ তৈরী করেন আর্নেস্ট ট্রমনার। (চিত্র-৩) এর হাতলটি পুরোপুরি ধাতুর তৈরী ছিল, যা ব্যবহারকে আরো সহজ করে তোলে এবং হাতলের একটি সূক্ষ্ম প্রান্ত ছিল যার মাধ্যমে কিউটেনিয়াস বা ভাস্কুলার রিফ্লেক্স পরীক্ষা করাও সম্ভব ছিল।
পরবর্তী বছরগুলোতে চিকিৎসক সমাজের নিত্যসঙ্গী এ যন্ত্রটির আরো উন্নতি ও সংস্কার সাধিত হয়।
………
লিখেছেনঃ
আব্দুর রাফি
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ