মেডিকেল শিক্ষার্থীদের হতাশা এবং প্রতিকারের পথ

একজন মেডিকেল স্টুডেন্ট কখন ফ্রাষ্টেটেড হয়?
একটা ছাত্র কতটা কষ্ট পেলে আত্মহত্যা করে?
আমরা তো মানুষ হতেই এসেছি মেডিকেলে তাই না?
একবুক স্বপ্ন নিয়ে মানবতার মঙ্গলদ্বীপ হাতে আমরাই তো এগিয়ে যাবো, নাকি?
তাহলে কেন এই অভিমান? কেন এভাবে পিছু হটা?
কেউ কেউ প্রতিজ্ঞা করেছে বই খুলবে না, কেউ কেউ বই খুলে অঝোরে কাঁদে!
ছোট ভাই ও বোনদের জন্য কিছু না বললে হয়তো আমিও দায় এড়াতে পারবো না। মেধাগুলোর এই যে অকালে ঝরে যাওয়া এর কিছুটা দায় কিন্তু বড়োদেরও আছে।
সহপাঠীরা এড়িয়ে যায়, শিক্ষকরা তিরষ্কার করে, অথচ এই পিছিয়ে থাকাদের কারো মাঝেই হয়তো আছে লুকিয়ে থাকা বারুদ! শুধু একটু আদর সোহাগের অভাবে, ভয় আর চাপে সে বারুদ আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত এর মতো ফেটে বেরুতে পারছে না।
কিছু কথা বলবো! সবাই জানে, তবুও বলি!
শুধু জুনিয়র প্ল্যাটফর্মিয়ান দের জন্য বলা! কথা গুলো খুব সহজ কিন্তু!
মেডিকেলে ভালো করতে চাও?
ভালো স্টুডেন্ট হতে চাও?

17629_10206421640846318_131761939441679584_n

দুইটা জিনিস!
১) রেগুলারিটি – প্রতিদিন ২-৩ ঘন্টা পড়াশোনা।
মনোযোগ থাকুক আর নাই থাকুক। পড়তে থাকো।
কতদিন ভালো লাগবে না?
দুই দিন? তিন দিন?
২৪ ঘন্টায় ২ ঘন্টা পারবে না?
পরীক্ষার কথা আলাদা। তখন বেশী পড়তেই হবে।
আমি প্রতিদিনের কথা বলছি
ভাত খাওয়া গোসল করার মতো!
অল্প অল্প পড়তে পড়তে পড়াশোনার ইঞ্জিন যখন একবার
চলতে শুরু করবে, মজা পেয়ে তুমি নিজেই পড়বে,
কেউ বলতেও হবে না।
সবচেয়ে বাজে লোক যিনি,
উনার স্ত্রীও উনাকে ভালোবাসেন, কেন জানো?
একসাথে থাকতে থাকতে একটা মায়া পড়ে যায়!!
এই মায়াটার বড় প্রয়োজন।
কি পারবে না?
২) একই বিষয়, বারবার পড়া!
রিভিশান আর ডিসকাশান।
যা পড়লে তা কাউকে বলা বা নিজেকে নিজে যাচাই করা।
এতে ব্রেইন স্টর্ম হয়, পড়া মনে থাকে।
কোন কিছু মনে রাখার সহজ উপায় হলো সেটা বারবার পড়া।
মেডিকেলের ব্যপার গুলো একটু কঠিন। মনে থাকে না।
কো রিলেট করতে হয়। কষ্ট লাগে।
পারি না, পারবো না বলে নিজের উপর রাগ লাগে, ডিপ্রেশান ভর করে।
প্লিজ, এই দাদার কথাটা একবার মনে করে দেখো।
আমিও ডিপ্রেশানিষ্টদের দলে ছিলাম, আমাকে কেউ বলেনি।
কোথাও কেউ ছিলো না। হাতড়াতে হাতড়াতে এখনো বেঁচে আছি।
মাঝে কষ্ট হয় বলে আমিও বুঝি একজন কখন কষ্ট পায়, কখন ডিপ্রেশান আসে!
আই প্রমিজ ইউ অল, ডিপ্রেশান আসলে, বইকে আরো জোরে জড়িয়ে ধরো,
পড়াশোনা করবে বলেইতো মেডিকেলে আসা তাই না?
কিসের অভাব আমাদের বলতে পারো?
পারিনা বলার আগে তুমি কি পাঁচ বার একটা টপিক পড়ে দেখবে? প্লিজ!
আমার মনে হয়, সবচেয়ে খারাপ ছাত্রও পাঁচ বার রিডিং পড়ার পর নিজের মতো করে বুঝে নেবে সেই টপিক!!
আমার বড় ভাই এর অনুপ্রেরণায় মেডিকেলে আসা। উনি নেই ১২ বছর। মেডিকেলের বাজে সময়টা কিভাবে কেটেছে আমি জানি। তাই এই লেখাটা লিখলাম, আমার মতো কেউ যেন পড়াশোনাকে ভয় না পায়।
সেই যে একবার পেছনে পড়েছিলাম, সেই ঘানি এখনো টানতে হচ্ছে, বারবার ঘুরে দাঁড়াতে গিয়েও নিজের অজান্তেই পেছনে তাকাই, সেখানে কোন শিক্ষকের ছায়া থাকে না, আফসোস! তাই নিজেরটা নিজেকেই বুঝতে হবে, স্যার, ম্যাডাম, পড়ালো কি পড়ালোনা সেটা নিয়ে অনুযোগ আর নয়! যে বলবে, পড়াশোনা করা লাগেনা, ধুর এটা কিছু, তাদের সংগ এড়িয়ে চলাই উত্তম। নিজের মতো একটা বন্ধু খুঁজে পড়াশোনা শুরু করে দাও!!
ভালো ডাক্তার, সমাজ সেবা, সব কিছুর পেছনে অনেক শ্রম, অনেক জ্ঞান।
মুন্না ভাই এম বি বি এস এর মতো ডাক্তার হয়ে লাভ নেই!!
মানবসেবা আর জ্ঞান দুইটাই থাকা লাগবে!!
আজ থেকেই শুরু হোক, পিছিয়ে পড়াদের সংগ্রাম!
আমিও আছি, আমি তোমাদেরই একজন!!
ছোট লিখতে গিয়ে বড় হয়ে গেলো।
প্ল্যাটফর্মের ছোট ভাই বোনেরা ভালো থেকো!!
‪#‎ছোটদের_জন্য‬
সময় পেলে আরো কিছু কথা বলবো , অন্য কোন দিন!!

লিখেছেন – ডা মৃনাল সাহা।

পরিমার্জনায়- মারেফুল ইসলাম মাহী।

Ishrat Jahan Mouri

Institution : University dental college Working as feature writer bdnews24.com Memeber at DOridro charity foundation

Next Post

পালিত হল 'নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস-২০১৫'

Fri May 29 , 2015
“প্রতিটি জন্মই হোক পরিকল্পিত, প্রতিটি প্রসব হোক নিরাপদ” এ স্লোগান নিয়ে গত ২৮মে, ২০১৫ইং বৃহস্পতিবার নানা আয়োজনে দেশে পালিত হয়েছে নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস। দিবসটি সারা বিশ্বে আন্তর্জাতিক নারী স্বাস্থ্য দিবস হিসেবে পালিত হলেও মাতৃস্বাস্থ্যের প্রতি গুরুত্ব ও এর কার্যকারিতা অনুধাবন করে ১৯৯৭ সাল থেকে বাংলাদেশে যথাযথভাবে নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস হিসেবে […]

Platform of Medical & Dental Society

Platform is a non-profit voluntary group of Bangladeshi doctors, medical and dental students, working to preserve doctors right and help them about career and other sectors by bringing out the positives, prospects & opportunities regarding health sector. It is a voluntary effort to build a positive Bangladesh by improving our health sector and motivating the doctors through positive thinking and doing. Platform started its journey on September 26, 2013.

Organization portfolio:
Click here for details
Platform Logo