প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২০, শুক্রবার
সম্প্রতি ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডিউটিরত এক ইন্টার্ন চিকিৎসকের উপর রোগীর আত্নীয় আকস্মিক আক্রমণ করেন এবং চিকিৎসকরা সেক্ষেত্রে নিরব দর্শক হয়ে না থেকে, তৎক্ষণাৎ প্রশাসনের সাথে পরামর্শ করে এই হামলার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।
জানা গিয়েছে, গতকাল ১৭ সেপ্টেম্বর দুপুরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সিসিইউ তে এ্যাকিউট এম.আই নিয়ে ৮০ বছর বয়সী একজন ভদ্র মহিলা ভর্তি হয়েছিলেন। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী তার সকল চিকিৎসা প্রক্রিয়াই অব্যাহত ছিল। এরপর ১৮ সেপ্টেম্বর রাত ১২.১৫ এর দিকে রোগীর অবস্থা খারাপের দিকে যায়। তখন ডিউটিরত ইন্টার্ন চিকিৎসক উক্ত রোগীর রক্তচাপ পরীক্ষার জন্য যায় এবং রক্তচাপ দেখার সময়ই রোগী মারা গিয়েছেন বলে তিনি মৌখিক ঘোষণা দেন। আর তখনই রোগীর বড় ছেলে পিছন থেকে হামলা করেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা ইন্টার্ন চিকিৎসকটির উপর এবং গায়ে হাত তোলেন। এরপর আশেপাশের অন্যান্য রোগীর স্বজনরা তাকে ফেরায় এবং সেখানে কর্মরত আনসার যেয়ে এই আহত ইন্টার্ন চিকিৎসককে তার রুমে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেন। পরবর্তীতে খবর পেয়ে সকল ইন্টার্ন চিকিৎসক এবং অত্র মেডিকেলের “ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদ” এর সকল সদস্য ঘটনাস্থলে যান। তারা সেখানে পৌঁছে রোগীর অন্যান্য লোকের সাথে পূর্ণ সহমর্মিতা বজায় রেখে কথা বলার চেষ্টা করেন, যেহেতু তাদের রোগী মারা গিয়েছেন। সেই অবস্থায় তারা দোষ স্বীকার করেন এবং দোষীকে মাফ করার কথা বলেন। এমতাবস্থায়, উক্ত চিকিৎসকবৃন্দ হাসপাতাল প্রশাসনের সাথে কথা বলে তাদের সহযোগিতায় আসামীকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন এবং তার বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনে মামলা দেয়ার উদ্যোগ নেন। এর ফলশ্রুতিতে, আসামী বর্তমানে পুলিশের হেফাজতে থানায় রয়েছে। তাছাড়া, উল্লেখিত মৃত ব্যক্তিকে যথাযথ নিয়মে রোগীর অন্যান্য লোকের কাছে হস্তান্তর করা হয় এবং তাদের লাশ সহ বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়।
চিকিৎসকের গায়ে হাত তোলা বর্তমানে একটি নিয়মিত ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ তাই অত্র হাসপাতালের চিকিৎসকবৃন্দ এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর সাহস দেখিয়েছেন। সেই সাথে উক্ত চিকিৎসকবৃন্দকে ভবিষ্যতেও সহযোগিতা করে পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বর্তমান পরিচালক ও উপ পরিচালক। তারা পরবর্তীতেও নিজেদের কর্মস্থলকে নিরাপদ রাখার জন্য সর্বোপরি চেষ্টা চালিয়ে যাবেন, এমনটাই জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।
তথ্যসূত্রঃ ডা. তানভীর আহমেদ রিফাত, ইন্টার্ন চিকিৎসক, মমেকহা