বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
জুলাই মাসের অভ্যুত্থানে পুলিশের গুলির আঘাতে মুখমণ্ডল হারানো খোকন চন্দ্র বর্মণকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাশিয়া পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আগামীকাল ২১ ফেব্রুয়ারি, ভোর ৪টা ২৫ মিনিটে কাতার এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে তাকে রাশিয়া পাঠানো হবে।
এর আগে তার চিকিৎসার বিষয়ে রাশিয়ার সহায়তা চেয়েছিলেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা। এ বিষয়ে প্ল্যাটফর্মে আহত খোকনের জটিল এবং সময়সাপেক্ষ চিকিৎসার ব্যাপারে রাশিয়ার সহযোগিতা চাইলেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল। এই সহযোগিতার প্রেক্ষিতে রাশিয়া পাঠানো হচ্ছে তাকে।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন প্ল্যাটফর্মকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, খোকন চন্দ্র বর্মণের আঘাতটি অত্যন্ত গুরুতর এবং তার মুখ পুনর্গঠন অত্যন্ত জটিল এক প্রক্রিয়া। বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যোগাযোগ করা হলেও বেশিরভাগ চিকিৎসকই এই চ্যালেঞ্জ নিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। তবে রাশিয়ার মস্কোর ইউনিভার্সিটি ক্লিনিক অব লোমোনোসোভ হাসপাতাল এই চ্যালেঞ্জ গ্রহণে সম্মত হয়েছে এবং তাদের এখানে খোকনের চিকিৎসা হবে।
শাহাদাত হোসেন আরও জানান, জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসা সেবা অব্যাহত রয়েছে। ইতোমধ্যে ৩৮ জন আহত ব্যক্তিকে সিঙ্গাপুর এবং থাইল্যান্ডে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে, এবং এর মধ্যে ৩ জন চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরেছেন। অন্যান্য আহতদের চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, খোকনের চিকিৎসার জন্য একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে, এবং চিকিৎসা দলটির নেতৃত্বে রাশিয়ায় পাঠানো হবে। প্রাথমিকভাবে খোকনকে মস্কোর হাসপাতালটিতে মূল্যায়ন করা হবে এবং থ্রি-ডি অ্যানিমেশনের মাধ্যমে তার মুখের পুনর্গঠন করার জন্য একটি মডেল তৈরি করা হবে। মডেলের ওপর ভিত্তি করে মূল সার্জারি শুরু হবে মার্চ মাসের ২০ তারিখের আশপাশে।
উল্লেখ্য, খোকন চন্দ্র বর্মণ গত ৫ আগস্ট গুলিবিদ্ধ হন। ওই দিন রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানার সামনে পুলিশের গুলিতে তার মুখের একটি বড় অংশ হারিয়ে যায়। তার ওপরের ঠোঁট, মাড়ি, নাক ও তালু এখন আর বিদ্যমান নেই।
উল্লেখ্য, জুলাই আন্দোলনে আহত ১৪ হাজারেরও বেশি ছাত্র-জনতাকে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া, বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা থাইল্যান্ড, চীন, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্র, সিঙ্গাপুর থেকে এসে হাজারের অধিক আহত ব্যক্তিকে চিকিৎসা দিয়েছেন এবং প্রয়োজন হলে সার্জারি করেছেন।
প্ল্যাটফর্ম/এমইউএএস